চাঁদাবাজ আমাদের দলের কেউ হলেও রেহাই নাই: গিয়াস

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, “চাঁদাবাজমুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই। চাঁদাবাজ সে যেই দলেরই হোক, এমনকি যদি আমাদের দলেরও কেউ হয়, তারও কোনো রেহাই নেই।”

১৫ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় থানা বিএনপি আয়োজিত সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “চাঁদাবাজদের বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জায়গা দেওয়া যাবে না। যারা চাঁদা নেয়, তারা মানুষের সন্তান নয়, তারা অমানুষ। তারা পশুর চেয়েও খারাপ, কুকুরের চেয়েও খারাপ। এই কুকুরদের কীভাবে তাড়াতে হয় তা আপনারা জানেন—লাঠি হাতে তাড়াতে হবে, প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে।”

গিয়াসউদ্দিন প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বলেন, “চোখ-কান খোলা রেখে ‘জুলাইয়ের চেতনা’কে ধারণ করে যেকোনো মূল্যে চাঁদাবাজ নির্মূল করতে হবে। আপনারা তাদের গ্রেপ্তার করবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “১৬ বছর ধরে বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তারা কেউ সফল হয়নি। আজও ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু বিএনপি আছে, থাকবে। কারণ বিএনপি বেঁচে আছে তারেক রহমানের মতো অবিসংবাদিত নেতার নেতৃত্বে। শুধু তার কারণেই বিএনপিকে কেউ ভাঙতে পারেনি।”

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম.এ. হলিম জুয়েল, সহ-সভাপতি এস.এম. আসলাম, ডি.এইচ. বাবুল, সেলিম মাহমুদ, জি.এম. সাদরিল, অ্যাডভোকেট মাসুদুজ্জামান মন্টু, দপ্তর সম্পাদক ডা. মাসুদ করিম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাজী বিল্লাল হোসেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সিকদার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনিস সিকদার, কৃষকদল নেতা নাছির প্রধান, যুবদল নেতা মাহবুব হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন রনি প্রমুখ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

সান নারায়ণগঞ্জ

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি, ষড়যন্ত্রমুলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল।

১৫ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে মহানগরীর মিশনপাড়া থেকে মিছিলটি বের হয়ে চাষাড়া গোলচত্বর হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপরে মিশনপড়ায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

সমাবেশে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন রানার সভাপতিত্বে সামাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা বিভাগীয় সম্পাদক ফয়সাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিুনর রহমানসহ অন্যান্যরা।

বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবির বিএনপিকে টার্গেট করে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটাচ্ছে। তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের নামে অশ্লালীন স্নোগান দিয়ে প্রমান করেছে দেশে অস্থিতিশীল করার জন্যই সুপরিকল্পিত ভাবে মাঠে নেমেছে। দেশে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন হোক তারা তা চায়না।

সোনারগাঁয়ে ডাকাত দলের কাছে জিম্মি বারদী ইউনিয়নবাসী!

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে বারদী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের সীমানায় আড়াইহাজার উপজেলা। সীমানাবর্তী এলাকা হওয়ার সুবাধে এখানে রয়েছে ডাকাত দলের অবাধ বিচরণ। হাবু ডাকাত একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও তার ডাকাতি থেমে থাকেনি। হাবু ডাকাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আছে ডাকাত নুরা পাগলা, ফালাইন্না, ইয়ানুস সহ আরও বেশকজন ডাকাত দলের সদস্য ও সর্দার। দেশের সরকারের পটপরিবর্তনকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের বিএনপিতে প্রবেশ ঘটিয়ে মেতে ওঠেছে চাঁদাবাজিতে। বিএনপি সাজার চেষ্টা করছে ডাকাত দলের সদস্যরা। নতুন আঙ্গিকে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে করছে মাদক ব্যবসা।

নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে রাখা কুখ্যাত হাবু ডাকাত, নূরা পাগলা, ইয়ানুসদের বিরুদ্ধে অবশেষে মুখ খুলেছে সাধারণ মানুষ। ১৫ জুলাই মঙ্গলবার স্থানীয় শান্তিরবাজার চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা। সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এ প্রতিবাদ সভায় এলাকার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বক্তারা জানান, কুখ্যাত হাবু ডাকাত, নুর মোহাম্মদ ওরফে নূরা পাগলা ডাকাত, শফিকুল পাগলা ডাকাত, ফালাইন্না, শাওন, মামুন, ইউনুস, ফারুক, আশিক দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আতংকের নামে পরিনত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই নানা হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। এজন্য কেউ এতদিন সাহস করেনি কিছু বলার।

বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগরের সভাপতিত্বে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সেলিম হোসেন দিপুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন-আব্দুল করিম মেম্বার, হক সাব, মোহাম্মদ আবু, রফিকুল ইসলাম, আলী হোসেন, পনির মুন্সি কাশেম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, “আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ডাকাত হাবুর হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে এক হয়ে দাঁড়াতে হবে।” বক্তারা প্রশাসনের কাছে হাবুকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানান।

জানা গেছে, বিএনপির কিছু তথাকথিত নেতা এই ডাকাতদের শেল্টার দিচ্ছে। তাদের এই কাজের প্রতিবাদ জানান তারা। শফিকুল নামের এক ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের দাবি বাকি যে সকল ডাকাত সদস্য আছে সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এই ডাকাত দলের প্রতিটি সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতি মামলা, হত্যা মামলা রয়েছে। একাধিক ডাকাতের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে।

বারদী ইউনিয়নে চাঁদাবাজি ডাকাতি ছিনতাই প্রতিরোধে ব্যবসায়ীদের সভা

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে রাখা কুখ্যাত হাবু ডাকাত, নূরা পাগলা, ইয়ানুসদের বিরুদ্ধে অবশেষে মুখ খুলেছে সাধারণ মানুষ। ১৫ জুলাই মঙ্গলবার স্থানীয় শান্তিরবাজার চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা। সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এ প্রতিবাদ সভায় এলাকার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বক্তারা জানান, কুখ্যাত হাবু ডাকাত, নুর মোহাম্মদ ওরফে নূরা পাগলা ডাকাত, শফিকুল পাগলা ডাকাত, ফালাইন্না, শাওন, মামুন, ইউনুস, ফারুক, আশিক দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আতংকের নামে পরিনত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই নানা হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। এজন্য কেউ এতদিন সাহস করেনি কিছু বলার।

বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগরের সভাপতিত্বে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সেলিম হোসেন দিপুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন-আব্দুল করিম মেম্বার, হক সাব, মোহাম্মদ আবু, রফিকুল ইসলাম, আলী হোসেন, পনির মুন্সি কাশেম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, “আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ডাকাত হাবুর হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে এক হয়ে দাঁড়াতে হবে।” বক্তারা প্রশাসনের কাছে হাবুকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানান।

জানা গেছে, বিএনপির কিছু তথাকথিত নেতা এই ডাকাতদের শেল্টার দিচ্ছে। তাদের এই কাজের প্রতিবাদ জানান তারা। শফিকুল নামের এক ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের দাবি বাকি যে সকল ডাকাত সদস্য আছে সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এই ডাকাত দলের প্রতিটি সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতি মামলা, হত্যা মামলা রয়েছে। একাধিক ডাকাতের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে।

ফতুল্লায় নানা অপকর্মে বেপরোয়া পুলিশ সোর্স রাব্বি

ডেস্ক রিপোর্ট

ফতুল্লা মডেল থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের চিহ্নিত সোর্স হিসেবে এলাকায় পরিচিত রাব্বি ওরফে ফর্মা রাব্বি। বর্তমানে সে নিজেকে যৌথ বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে ফতুল্লাসহ আশে পাশের এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের পরিচয়ে জুয়ার বোর্ড, ব্লাকমেইলিং, পতিতা ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে বেড়ালেও রহস্যজনক কারনে নীরব আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সোর্স কুটুম আলী রাব্বির অব্যাহত বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও সচেতন মহল মনে করে।

এদিকে, পুলিশ সোর্স রাব্বির অপকর্মের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিস্তারিত তুলে ধরাসহ এবং জরুরী ভিত্তিতে রাব্বির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের ফাজিঁলপুর এলাকায় সোর্স রাব্বি ওরফে কুটুম আলী রাব্বির বসবাস। এলাকায় চিহ্নিত চোর এবং পুলিশ সোর্স হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত। কয়েক বছর পূর্বে ফতুল্লা পুলিশের সাথে সখ্যতার মাধ্যমে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করা শুরু তার। এরপর থেকেই এলাকার বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও ওয়ারেন্টভূক্ত লোকজনদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পরে এই রাব্বি। এমনকি, সোর্স রাব্বি কয়েকজন উঠতি বয়সের ছিচকে চোরদের নিয়ে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই শুরু করেও এলাকার স্থানীয় মুরুব্বিগণ অভিযোগ করেন। কিছুদিন পূর্বে ফতুল্লার ঢালীপাড়া এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে গণধোলাইয়ের শিকার হয় সোর্স রাব্বিসহ তার সহযোগীরা।

পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন এস আই আতিকের সোর্স হিসেবে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারে করাতে সক্ষম হয়। এরপর থেকে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের মাঝে ভীতি সঞ্চার ঘটে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা নেওয়া শুরু করে রাব্বি। বিষয়টি জেলা গোয়েন্দা পুলিশে অবগত হলে সোর্স রাব্বিকে শাসিয়ে দেয়া হয় এবং ডিবি অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, কয়েকজন পতিতাদের নিয়ে প্রভাবশালী লোকজনদের টার্গেট করা হয় এবং টার্গেট মোতাবেক খদ্দেরদের সাথে খারাপ মেয়েদের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারন করার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে সোর্স রাব্বির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি, ফতুল্লার রুসেন হাউজিং এলাকার স্বপ্না নামের এক পতিতাকে দিয়ে স্থানীয় এক বাড়ীওয়ালাকে সোর্স রাব্বি ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। বর্তমানে যৌথ বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে ফতুল্লাসহ আশে পাশের এলাকায় বিভিন্ন এলাকায় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে সোর্স রাব্বি এমনই অভিযোগ করে আসছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অধিকাংশ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ীতে সোর্স রাব্বিকে দেখা যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন ভয়তে কিছু বলতেও পারছেও না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। বর্তমানে সোর্স রাব্বির ভয়তে সর্বদাই সাধারন মানুষ আতংকের মধ্যে দিনানিপাত করছে। এঅবস্থায় পুলিশ সোর্স কুটুম আলী রাব্বির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

শেখ হাসিনা গণহত্যার নজির স্থাপন করেছে, সেই দায়ে তার ফাঁসি হবে: মামুন মাহামুদ

ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, “শেখ হাসিনা আর কোনদিন বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না। আওয়ামী লীগ আর কখনও বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।”

১৩ জুলাই রবিবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে নতুন সদস্য সংগ্রহ, নবায়ন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “দেড় থেকে দুই হাজার মানুষকে হত্যা করে শেখ হাসিনা যে গণহত্যার নজির স্থাপন করেছেন, সেই দায়ে তার ফাঁসি হবে, তার মন্ত্রী ও এমপিদের ফাঁসি হবে। আওয়ামী লীগ আর কখনো বাংলার মাটিতে রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না।”

গত বছরের জুলাই গণআন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মামুন মাহমুদ বলেন, “এই এলাকায়ও অনেকগুলো লাশ এসেছে। আমরা সেই শহীদদের ভুলতে পারি না। তাই নতুন করে আর উত্তেজনা ছড়াবেন না, এতে কোনো লাভ নেই।”

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিএনপি এখনও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেনি। কোনো আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা হত্যাকাণ্ড ঘটলে তার দায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে, বিএনপিকে নয়।”

সামাজিক কার্যক্রমের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় না থেকেও মানুষের পাশে থেকেছে। আমরা ইফতার সামগ্রী, ঈদ সামগ্রী, শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। গত ১৫ বছর ধরে আমাদের নেতাকর্মীরা দমন-পীড়নের শিকার হলেও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা হারায়নি। দেশের অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে এমন মনোভাব নেই।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল মিয়া।

উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রাকিবুর রহমান সাগর, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকন, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান মৃধা, যুবদল নেতা জুয়েল রানা, মনির হোসেন, মাজারুল ইসলাম মালি, শাহ আলম, জসিম উদ্দিন, নয়ন, মোক্তার ও সুমন।

সিদ্ধিরগঞ্জকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত ঘোষণা করলাম: গিয়াস

ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, “আজ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত ঘোষণা করলাম। এখন থেকে কেউ চাঁদাবাজি করতে পারবে না, কাউকে চাঁদা দেওয়া যাবে না।”

১৪ সোমবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় ও সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি আয়োজিত সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজবিরোধী প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমার এলাকায় কেউ চাঁদা দাবি করলে তার হাত-পা ভেঙে দেবেন। ব্যবসায়ীদের বলছি, কাউকে চাঁদা দেবেন না। যদি কেউ দাবি করে, শক্ত হাতে প্রতিরোধ করুন—আর না পারলে আমাকে জানান, আমরা ব্যবস্থা নেবো।”

সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নুর হোসেনের পরিবারকে ইঙ্গিত করে গিয়াসউদ্দিন বলেন, “নুর হোসেন জেলে বসেও ফোনে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। তার পরিবার এ এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক, জুয়া, নগ্ন নৃত্য ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। এখনো তার ভাই-ভাতিজারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”

তিনি বলেন, “নুর হোসেনের ভাই ও ভাতিজা নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকায় লুটপাট চালিয়েছে, মানুষের জায়গা দখল করেছে, চাঁদাবাজি করেছে—সবই জনগণের জানা।”

শামীম ওসমানের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জে একজন গডফাদার ছিলেন শামীম ওসমান। তার পোষা সন্ত্রাসী ছিল এই নুর হোসেন। তার আমলে নগ্ন নৃত্য, জুয়া, মাদক দিয়ে স্বর্গরাজ্য গড়ে উঠেছিল। যারা তখন নামাজ-রোজা করত, তারাও ভাগ-বাটোয়ারার জন্য সেই অপরাধে জড়িত ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “আজ তারা পলাতক। কোথায় আছেন, তাও আমরা জানি। ঢাকা ও আশেপাশে থেকে তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে, চাঁদাবাজি করছে। অথচ দোষারোপ করা হচ্ছে বিএনপিকে।”

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. এ. হলিম জুয়েল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি এস. এম. আসলাম, রওশন আলী, সেলিম মাহমুদ, নেতা জি. এম. সাদরিল, অ্যাডভোকেট মাসুদুজ্জামান মন্টু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ডা. মাসুদ করিম, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাঈনুল হোসেন রতন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, মহানগর যুবদলের সদস্য শহীদুল ইসলাম, যুবদল নেতা মাহবুব হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এ. কে. হিরা, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন রনি।

নারায়ণগঞ্জে দেশের প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন

ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ

জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে দেশের প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ স্থাপন করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলায়। রাজধানী লাগোয়া এই জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অন্তত ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কয়েকশ’ ছাত্র-জনতা।

১৪ জুলাই সোমবার বিকেলে নগরীর হাজীগঞ্জ এলাকায় রেলওয়ের জমিতে স্থাপিত এ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টা।

কয়েকটি জেলায় জুলাই-স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এটি প্রথম উদ্বোধন করা হয়েছে বলে উপদেষ্টারা জানান। ধাতব এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও স্থাপনে কাজ করেছে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

নারায়ণগঞ্জে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বক্তব্য রাখেন। আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

এ অনুষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদ ও হতাহত পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ছেলের হত্যার বিচার দাবি করেন জালকুড়ি এলাকায় শহীদ দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ আদিলের মা আয়েশা আক্তার। তিনি শহীদদের কবরগুলো সংরক্ষণেরও দাবি জানান।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জুলাইযোদ্ধারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন চলাকালীন একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ‘জুলাই আন্দোলনের ঐক্য’ ধরে রাখার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, “আমরা বৈষম্যহীন, শোষনহীন নতুন একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকবে, শাসক এসে অপশাসকে পরিণত হবে না। আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে পারলে অবশ্যই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।”

জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করে এ উপদেষ্টা বলেন, জুলাই মাস আসলে গত বছরের জুলাইয়ের কথা মনে পড়ে। এই জুলাই মাসে সূচিত আন্দোলনে গত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশে যে স্বৈরতন্ত্র, যে ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ ৩৬ দিনে না, খেয়াল করে দেখবেন মাত্র ১৫ দিনে ফ্যাসিস্ট শাসককে উৎখাত করেছে, বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।”

জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা কর্মসূচি নিয়েছেন বলেও জানান এ উপদেষ্টা।

পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “নারায়ণগঞ্জ জেলাতে ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন। উদ্দেশ্যবিহীনভাবে লড়াই করে তারা প্রাণ দেননি। একটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই ৫৬ জন মানুষ শহীদ হয়েছেন। আমরা, আপনারা একসাথে মিলে এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটা সুন্দর, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়বো।”

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাদুঘরে’ রূপান্তরের কথা জানিয়ে আদিলুর রহমান খান বলেন, “গণভবনকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে। আমরা আশা করবো, ৫ আগস্টে উদ্বোধন করার। ওইটা হচ্ছে স্বৈরাচারের ঠিকানা। আমরা ওই ঠিকানাকে সংরক্ষণ করে দেখাতে চাই, এখানে ফ্যাসিবাদ কীভাবে মানুষকে অত্যাচার করতো। কীভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশের মানুষ এসে দেখবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী, মুজিববাদী শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছিল। যে সংগ্রামে বহু মানুষ গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হন। অনেক আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছিল। সেই লম্বা সময়ের একটা পর্যায়ে নতুন ছাত্ররা বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং সারাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে।”

এই সরকারের আমলেই জুলাই আন্দোলনে গণহত্যার বিচার হবে: আসিফ নজরুল

ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই আন্দোলনে গণহত্যার বিচার পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলেছে। সেখানে কোনো গাফিলতি থাকবে না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সরকারের শাসনামলেই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।

শহীদ পরিবারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের মনে সব সময় একটা আর্তি থাকে, একটা ক্রন্দন থাকে—এত বড় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হলো, এমনভাবে আমাদের লোকদেরকে হত্যা করা হলো, আমাদের ভাইদের চোখ কেড়ে নেওয়া হলো, অঙ্গহানি করা হলো…জঘন্য, বীভৎস, নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার কোথায়?” আমি আপনাদেরকে দৃঢ় কণ্ঠে জানাতে চাই, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবেই।

১৪ জুলাই সোমবার বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ এলাকায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই মাস আসলে আমাদের গত বছরের জুলাইয়ের কথা মনে পড়ে। জুলাই মাসের সূচিত আন্দোলনে গত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশে যে স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ ৩৬ দিনে নয়, বড়জোর ১৫ দিনে এই শাসনব্যবস্থাকে উৎখাত করেছে, বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।

আইজিপি ছাড়াও বিভিন্ন যে অপরাধ আদালতে বা ক্রিমিনাল কোর্টে রয়েছে, সেখানে বিভিন্ন মামলা করা হয়েছে। আমি এখানে (নারায়ণগঞ্জে) মামলাগুলোর খোঁজ নিয়েছি। আমাকে এসপি সাহেব বলেছেন, অনেকগুলো মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। ওনাদের আমি অনুরোধ করেছি যে, আপনারা চেষ্টা করেন ৫ আগস্টের আগে মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়ার জন্য। উনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন, অনেকগুলো মামলার চার্জশিট দিতে পারবেন। চার্জশিট দেওয়ার পর বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিচারকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজন হলে আমরা দ্রুত বিচার আইনে এ সমস্ত অপরাধের বিচার করব।

তিনি বলেন, আমাদের আত্মত্যাগ, আমাদের বেদনা, আমাদের ক্ষোভ, আমাদের সাহস সবকিছুর মধ্য দিয়ে আমরা একটা পরিবারে পরিণত হয়েছিলাম। এই ফ্যাসিবাদীদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ একটা পরিবারে পরিণত হয়েছিল। আমরা বৈষম্যহীন, শোষণহীন নতুন একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকবে, যেখানে কোনো শাসক এসে অপশাসকে পরিণত হবে না, যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকবে।

সাম্প্রতিক বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে নানান আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘন ও বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটছে। ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটছে। চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। জুলাইয়ের সময় আপনারা যে ঐক্যবদ্ধভাবে মহাপরাক্রমশালী ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন, অবশ্যই আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করতে পারবেন। আমাদের সরকারের দায়িত্ব থাকবে, পাশাপাশি আপনারা স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। প্রশাসন আপনাদের সহযোগিতা করবে।

এদিন আরও বক্তব্য দেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণভবনকে একটা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাদুঘর গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে। ৫ আগস্টের আগেই এটার উদ্বোধন করা হবে। এটা স্বৈরাচারের ঠিকানা। আমরা এই ঠিকানাকে সংরক্ষণ করতে চাই, দেখাতে চাই—এখানে ফ্যাসিবাদ কীভাবে মানুষকে অত্যাচার করত।

তিনি বলেন, আমরা উদ্যোগ নিয়েছি শহীদদের সমস্ত কবরগুলো সংরক্ষণ করার জন্য। আমরা কাজগুলো শেষ করতে চাই। তবে সংগ্রামের ধারা শেষ করতে পারব না, এটা আপনাদের কাছে দিয়ে যাব। আপনারা অগ্নিযুগের সন্তান, আগুন হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। আপনারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বাংলাদেশে যেন কখনো কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি চোখ রাঙাতে না পারে। ফ্যাসিবাদ না আসতে পারে। আসার চেষ্টাও করা হলে সেটাকে দমন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের সংগ্রাম চলেছিল। এই সংগ্রামে বহু মানুষ গুম হয়ে যায়। বিচারবহির্ভূত নির্যাতন এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। অনেক আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছিল। এই সংগ্রামের এক পর্যায়ে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, ছাত্ররা বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং অগ্নিকন্যারাও নেমে এসেছিলেন রাজপথে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী, ছাত্র-জনতা দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে, বৈষম্যমুক্ত করেছে। তাদের ত্যাগের মাধ্যমে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত দেশ পেয়েছি। এই জুলাইকে স্মরণ করে আজ আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। জুলাইকে আমাদের সবসময় স্মরণ করতে হবে। এই নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন। বুলেটের সামনে সেদিন তারা বুক পেতে দিয়েছিল। আর এই ৫৬ শহীদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সন্তান ছিল ২১ জন। তাদের স্মরণে এবং তাদের পরিবার যে এত বড় আত্মত্যাগ করেছে, তা স্মরণে আজ নারায়ণগঞ্জে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদরা এক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে জীবন দিয়েছিল। আর ওই উদ্দেশ্য হলো বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তাদের শ্রদ্ধা করার একটি উপায় হচ্ছে দোষীদের বিচার কাজ নিশ্চিত করা। আর যেন বাংলাদেশের সরকার, বাংলাদেশের কোনো বাহিনী নিজ দেশের মানুষের ওপর গুলি চালাতে না পারে। আমরা এই বিচার প্রক্রিয়া সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা শুধু নিহত করার বিচারই নয়, মানুষকে অন্ধ করার, পঙ্গু করার বিচারও করব। মোটকথা, যারা যৌক্তিক আন্দোলনে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে, সে বিচার আমরা সম্পন্ন করব।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল দেশকে বৈষম্যমুক্ত করা। আর এটি করার একমাত্র উপায় হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। শুধু একটি উপায়েই দেশকে গণতন্ত্রমুক্ত করা যাবে না। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। এর আগেও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করতে হয়েছিল। জুলাইতে যদি ছাত্র-জনতা বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে না দিত, নির্ভীক না হতো, তাহলে ৫ই আগস্ট ঘটতো না। আর আমরাও এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদদের পরিবার, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ জেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।

মান্নানের নির্দেশে জামপুর ইউনিয়নে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল

সান নারায়ণগঞ্জ

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপ রেখার ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রচারপত্র বিলি অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নির্দেশে এই কর্মসূচি পালন করেছেন নেতাকর্মীরা।

১২ জুলাই শনিবার বিকেলে জামপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নেতাকর্মীদের এ ঢল নামে। নেতাকর্মীরা তালতলা বাজার থেকে শুরু করে বস্তল এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে তারেক রহমানের ৩১ দফার প্রচারপত্র বিলি করেন।

সোনারগাঁ উপজেলা জাসাসের উদ্যোগে প্রচারপত্র বিলি অনুষ্ঠানে সোনারগাঁ উপজেলা জাসাসের সভাপতি মো. আমির হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ সোহাগ, সিনিয়র সহ সভাপতি পনির হোসেন মিন্টু, সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, সোলাইমান মিয়া, শাহিন মিয়া, বাচ্চু মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান কামু, সালাউদ্দিন মিয়া, হাফিজুল ইসলামসহ সোনারগাঁ উপজেলার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।

সর্বশেষ সংবাদ