আইভীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন সেলিম ওসমান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের এমপি সেলিম ওসমান তার নির্বাচনী এলাকার ২০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার ঘোষণা দিয়েছেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলার এই সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিজের অর্থায়নে অসহায় ব্যক্তিদের সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির এই এমপি। এমন বিষয়টি তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষন আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, স্কুল কলেজের ছেলেমেয়ের নিয়ে আমার নির্বাচনী এলাকায় গত ১৫ দিন ধরে সত্যিকারের অসহায় মানুষের খোঁজ নিয়েছি। আমার এলাকায় ২০ হাজার মানুষ যারা ছোটখাট চাকুরী করতেন, করোনার এই সময়ে তারা খারাপ অবস্থায় পড়েছে। নাসিকের কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তাদের মাঝে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, আমার অঞ্চলের ২০ হাজার মানুষের প্রত্যেকের জন্য আমরা ২০ কেজি চাল যার আনুমানিক মূল্য ৯০০ টাকা হিসেব করে পৌঁছে দিব। সর্বমোট আমি ২ কোটি ২৮ লাখ টাকার একটি ফান্ড আমি সংগ্রহ করেছি দেয়ার জন্য। ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে একটি প্লান করে সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। অন্যদের সাথেও কথা হয়েছে। মেয়রের সাথে আলাপ করে আমি এটি করতে সাহস পেয়েছি। তিনি আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন আপনিই করেন, পরবর্তীতে কিছু করতে হলে আমি করবো।

সেলিম ওসমান বলেন, আমার পাশ^বর্তী এমপি শামীম ওসমানের কাছেও অনুরোধ রাখবো একই প্লান করে ত্রাণ বিতরণ করতে। আমার ত্রাণ বিতরণের অর্থ তোলার ব্যাপারে একটি জয়েন্ট একাউন্ট খুলবো। একটি অফিস আইটি খোলা থাকবে। এই মুহুর্ত্বে কোন রাজনীতি নয়, আমরা সবাই এক। অসহায় ব্যক্তিদের সহযোগিতার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবানা জানান সেলিম ওসমান।

২১ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে করোনা মোকাবেলা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এমপি সেলিম ওসমান এই ঘোষণা দেন।

সেলিম ওসমান বলেন, ২০ হাজার মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি প্লান তৈরি করেছি। ত্রাণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর কিংবা চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পৌঁছাবেনা, তবে ২২জন জনপ্রতিনিধি তারা তথ্যটি জানতে পারবেন। তারা ত্রাণ নেয়ার ব্যক্তিদের খুঁজে দেবেন। গার্মেন্টের শ্রমিকদের জন্য যেভাবে আমরা সারাদেশেই একাউন্ট করে ফেলেছি। তেমনি আমি যে ত্রাণ দিতে যাচ্ছি তাদের প্রত্যেকের একটি বিকাশ একাউন্ট থাকতে হবে এবং ভোটার আইডি কার্ড থাকতে হবে। বিকাশ একাউন্ট খুলতে কোন টাকা লাগেনা, শুধু আইডি কার্ড লাগে। তারা নারায়ণগঞ্জের ভোটার না হলেও চলবে, তবে তাদের আইডি কার্ড থাকতে হবে। রোজার মাসের জন্য ৬০০ ছেলেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা সম্মানি ভাতা দিয়ে কর্মজীবী করে তুলবো। তারা করোনা আক্রান্ত রোগী, দাফন কাফনে সহযোগিতা, পুলিশকে সহযোগিতা, ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করবে। ত্রাণ বিতরণে যাতে কোন ধরণের স্বজনপ্রীতি না হয়। এই দুঃসময়ে অযথা বাড়িতে খাবার মজুদ না করার আহবান জানান সেলিম ওসমান। তিনি বলেন, আমি এর আগেও ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি কাউন্সিলরদের মাধ্যমে চাল বিতরণ করেছি।

নারায়ণঞ্জকে সবসময়ই কেন জানি অবহেলিত এমন মন্তব্য করে সেলিম ওসমান বলেন, ৩০০ শয্যা হাসপাতালকে ৫০০ শয্যা হাসপাতালে তৈরি করার জন্য ১০০ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছিল। কিন্তু সেটি আর এগোয়নি, না হলে এখন করোনার এই দুঃসময়ে অনেক উপকার হতো। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জে করোনা পরীক্ষার একটি ল্যাবও নেই। তবে ৩০০ শয্যাকে করোনা হাসপাতাল ডিক্লারেশন করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সেলিম ওসমান বলেন, করোনার চিকিৎসা দেয়া ডাক্তারদের থাকার জায়গা ও খাওয়া জায়গা, চলাচলের জন্য ঢাকায় যাওয়া, নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় নেয়ার জন্য গাড়ি প্রদান করার জন্য আমার প্যাকেজে অর্থ বরাদ্দ রেখেছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে দায়িত্ব দিয়ে দেয়া হয়েছে। এখানে ২০ লাখ টাকা আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেয়া হবে।