বন্দরে লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবের প্রস্তুতিসভায় উত্তেজনা, পরে মারামারি

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজিত প্রস্তুতিসভায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

ওই সময় আওয়ামীলীগ নেতা শিখন সরকার শিপনের ছোট ভাই বাবুল সরকারকে মারধর করা হয়। ১৯ মার্চ বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ও কার্যালয় প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, আগামী ৪ ও ৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে হিন্দু ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক প্রস্তুতিসভার আয়োজন করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

সভার একপর্যায়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ স্ট্রাস্টের ট্রাস্টি বিএনপি নেতা জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য শিপন সরকার শিখনকে ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সভায় উপস্থিত অন্যান্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে দফায় দফায় তারা হাতাহাতিতে লিপ্ত হন।

জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি বলেন, জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। তারা দুই পক্ষের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা উভয়পক্ষ এতে একমত।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষ সব সময় শান্তিতে বিশ্বাসী এবং সনাতন ধর্মের সব গোষ্ঠীকে নিয়েই সনাতনী সম্প্রদায়।

লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা বলেন, ‘লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপনের জন্য আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। বিগত দিনগুলোতে আমরা এই কমিটির মাধ্যমে লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন করে আসছি।

এর মধ্যে আরেকটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করে আজকে এই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। এগুলো হিন্দু সম্প্রদায়ের ভালো লক্ষণ নয়। এগুলো যেমন হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতি হবে, তেমনি দেশের সুনামও ক্ষুণ্ন হবে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘সম্মেলনকক্ষে আমাদের সামনে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাইরে হয়তো কিছু একটা হতে পারে। যা আমার জানা নেই।’

রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুজন চিকিৎসা নেন।

১৮ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত স্থানীয় যুবদলের দু’টি পক্ষের নেতা-কর্মীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরাও অংশ নেন বলে জানা যায়।

নিহত যুবক মো. হাসিব (২৮) চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত আনোয়ার হোসেন মোল্লার ছেলে। নিহত হাসিব এক সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালালেও বর্তমানে বেকার ছিলেন।

গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলেন- রাসেল (৩০) ও বশর (৩২)। তারা দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতের বড়ভাই যুবদল কর্মী মো. বাবু বলেন, সংঘর্ষ চলাকালীন বুধবার রাত দুইটার দিকে হাসিব গুলিবিদ্ধ হন। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত তিনটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তারাবির নামাজের পর রবিন নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন চনপাড়া সাংগঠনিক ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির দেওয়ানের অনুসারী লোকজন। তাকে স্থানীয় যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিনকে ছাড়িয়ে নিতে আসেন ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি গোলাম রাব্বানী। এ নিয়ে উভয়পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তা দফায় দফায় সংঘর্ষে রূপ নেয়।

স্থানীয় অন্তত দু’জন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারাবির নামাজ শেষে হাতাহাতির ঘটনার পর দিকে উভয়পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, শাবল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।

এ বিষয়ে যুবদল নেতা মনির হোসেন বলেন, “চনপাড়াকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা আমাদের রয়েছে। গতরাতে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে লোকজন যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে আমাদের উপর হামলা করেন আমাদের দলেরই রাব্বানী, করিম ও তাদের অনুসারীরা। আমরা নিজেরা বাঁচার জন্য কেবল তাদের প্রতিরোধ করেছি। কিন্তু আমরা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করিনি।”

তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ নিয়ে তাদের উপরে হামলা করেছেন বলেও দাবি করেন যুবদলের এই নেতা। তবে, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন মনির। নিহত হাসিবকে নিজের কর্মী দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে আব্দুল করিম ও মো. রাব্বানীর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে তারা এলাকায় নেই। তাদের মুঠোফোনের নম্বরেও কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ একজন মারা গেছেন। বুধবার সকালে র‌্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে চনপাড়ায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

সোনারগাঁয়ে সাংবাদিকদের সম্মানে জামায়েত ইসলামীর ইফতার মাহফিল

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সাংবাদিকদের সম্মানে বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর উদ্যোগে ১৭ মার্চ সোমবার আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক জয়নাল আবেদিন এর সঞ্চালনায় ও সোনারগাঁ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মোঃ শাহজালালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রিন্সিপাল মাওলানা ডক্টর মোঃ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া।

সোনারগাঁ উপজেলা মডেল মসজিদের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী সহ-সেক্রেটারি মোঃ আবু সাইদ মুন্না, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সোনারগাঁ উপজেলা উত্তর এর আমির মোঃ ইসহাক মিয়া, সেক্রেটারি ইব্রাহীম, সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণের আমির মাহবুবুর রহমান, সেক্রেটারি আসাদুল ইসলাম মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও দেশ টিভির সিনিয়র সাব এডিটর মোঃ রুহুল আমীন।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক পনির ভূঁইয়া, হুমায়ুন কবির, মিজানুর রহমান, ফজলে রাব্বী সোহেল, মাজহারুল ইসলাম রতন, আনোয়ার হোসেন আনার প্রমূখ।

তার আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াত করেন সাংবাদিক সাখাওয়াত। পরে মনোমুগ্ধকর কয়েকটি ইসলামি সংঙ্গীত পরিবেশন করেন বিকশিত সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের শিল্পী মাহমুদুল হাসান।

অনুষ্ঠানে সোনারগাঁয়ে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা ড. মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, সঠিক সংবাদ প্রকাশ করায় সোনারগাঁয়ে যে সকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও রাজনৈতিক মামলা হয়েছে এমন সাংবাদিকদের মামলার দায়িত্বভার আজ থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গ্রহণ করল। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে ও সঠিক সংবাদ প্রকাশে কখনো আপোষ করবে না এটা আমরা বিশ্বাস করি। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন ও আয়না। এদের থেমে গেলে চলবে না। সোনারগাঁয়ে এখন কারা কারা চাঁদাবাজী, দখলবাজী, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ভূমিদস্যুতা ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম পরিচালনা করছে তাদের মুখোশ উম্মোচন করতে হবে। সত্য প্রকাশে কারো সাথে আপোষ করা যাবে না।

নগরীর মাসদাইরে হামলা চালিয়ে ৪ মাদক ব্যবসায়ী ছিনতাই, আহত ৩, মাদক উদ্ধার

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মাদক বিরোধী অভিযানে হামলা চালিয়ে আটককৃত ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের সহকর্মীরা। এই হামলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তিন সিপাহী আহত হয়েছেন। এ খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিজিবি ও পুলিশ নিয়ে ফের অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য সহ দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার মাসদাইর এলাকায় রুকিয়া স্কুলের বিপরীত গলিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আহতরা হলেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাহী মো. রেজাউল করিম, অজয় কুমার রায় ও মো, আকাশ আহমেদ রাব্বী।

জেলা প্রশাসক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম সদর উপজেলার মাসদাইর এলাকায় রুকিয়া স্কুলের বিপরীত গলিতে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। এ সময় দেশীয় অস্ত্রধারী ৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। তবে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপরে হামলা করে আটককৃতদের ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগিরা।

এ খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাববর হোসেনের নেতৃত্বে বিজিবি ও জেলা পুলিশের সহায়তায় পুনরায় অভিযান চালানো হয়। এতে ২০ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ১৭০ গ্রাম ইয়াবা (১৭০০ পিস), ৫ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল ফেনসিডিল, ৪ গ্রাম হেরোইনসহ চাপাতি, ছুরি, সুইস গিয়ার চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে এই অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. বাহাউদ্দিন বলেন, আজ দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারি পরিচালক মো. রিফাত হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৪ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। আটকৃতদের দেখানো তথ্যমতে আরও মাদক উদ্ধার করতে গেলে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে ১২-১৫ জনের একটি টিম আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে ও পাথর নিক্ষেপ করে। হামলার এক পর্যায়ে তারা আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই হামলায় আমাদের তিনজন সিপাহী আহত হয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে জানালে তারা তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়ে পুনরায় অভিযান চালায়। সেই অভিযানে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য সহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ছিনিয়ে নেওয়া মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট বা পূর্বের কোন মামলা রয়েছে কিনা তা যাচাই বাছাই করে বলা সম্ভব হবে। তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোনাববর হোসেন বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করে। সে বিষয়ে তারা বিস্তারিত বলতে পারবে। পরে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার খবর পেয়ে বিজিবি ও পুলিশ নিয়ে আমি ফের অভিযান পরিচালনা করে েএসব অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছি। তবে কোন আসামিকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় মামলা করার নিদেশনা দেওয়া হয়েছে।অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জেলা পুলিশ ও মাদকের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মামলা করবে।

সোনারগাঁয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত ৩, নগদ অর্থ লুট

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে জামপুর ইউনিয়নের বুরুমদী এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় শিহাব সহ ৩জন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। একইসঙ্গে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মুল্যবান মােবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ১৭ মার্চ সোমবার সন্ধার পর ধন্দীবাজার ব্রীজের উপরে এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয় ভুক্তভোগী শিহাব জানান, সোমবার সন্ধার পর আমি এবং আমার বন্ধু দিপু বাড়িতে ফেরার পথে ধন্দীবাজার ব্রীজে উপর পৌছালে পরিকল্পিতভাবে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সেলিমের নেতৃত্বে আসিফ, সৌরভ, ইমরান, রায়হান, মাহিম সহ আরো ১০ থেকে ১২ জন আমাদেরকে পথরোধ করে অর্তকিতভাবে লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাদের উপরে হামলা করে ও মারধর করে। এ সময় শিহাবের সাথে থাকা ২ লাখ টাকা ও একটি একটি সিক্সটিন প্রো মেক্স আইফোন, যার মুল্য ২ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। দিপুর এর কাছে থাকা ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও বন্ধু ইমরান এর কাছ থেকে একটি ফোন যার মুল্য ১৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

পরে আমাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় পরে আমাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। এবং তারা বিভিন্ন ভাবে মেরে ফেলার হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। তারা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকে।

তিনি আরো বলেন, আমরা প্রশাসনের নিকট হস্তক্ষেপ কামনা করি অভিযুক্তদের আইনের আওতায় কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

এ বিষয়ে শিহাব বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা প্রধান আতাউল্লাহসহ ৬জন গ্রেপ্তার, ১০ দিনের রিমাণ্ড

সান নারায়ণগঞ্জ

মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এর মধ্যে আতাউল্লাহসহ ৬জনকে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকালে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে তাদের ১০ দিনের রিমাণ্ডে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

বিচারক তাদের ৬ জনের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান। তিনি বলেন, ‘তাদেরকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তোলা হয়। এর মধ্যে ছয় জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে পাঁচ দিন করে দুই মামলায় মোট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।’

এর আগে ১৬ মার্চ মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার নতুন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসা প্রধানসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএইচএম সাজ্জাদ হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্বার জুনুনী (৪৮), মোস্তাক আহাম্মদ (৬৬), সলিমুল্লাহ (২৭), ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার চর আলগী এলাকার আতিকুল ইসলামের ছেলে মনিরুজ্জামান (২৪), আসমত উল্লাহ (৪০) ও মো. হাসান (৪৩), সলিমুল্লাহর স্ত্রী আসমাউল হোসনা (২৩) ও আরাকান রাজ্যের ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর, শাহিনা আক্তার (২২) ও ১৭ বছর বয়সী কিশোরী। তাদের মধ্যে মনিরুজ্জামান সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমি পল্লী এলাকায় ভাড়া থাকতেন। আর সলিমুল্লাহ, শাহিনা ও ১৭ বছর বয়সী কিশোরী কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকতেন।

তাদের মধ্যে আতাউল্লাহ আবু আম্বার জুনুনী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির প্রধান বলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। আতাউল্লাহ আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে খুনের নির্দেশদাতা ছিলেন বলে আদালতের জবানবন্দিতে জানিয়েছেন এই হত্যা মামলায় গ্রেফতার চার আসামি। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানে ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা (স্কোয়াড্রন লিডার) রিজওয়ান রুশদী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ।

আদালত পুলিশ জানায়, আরসা প্রধানসহ ছয় জনকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অপরাধে দুটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে হাজির করা হয়। বাকি তিন নারী সদস্য ও এক শিশুকে একই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আড়াইহাজারে আওয়ামীলীগ কর্মীকে ফুলের মালা দিয়ে বিএনপিতে বরণ!

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার আওয়ামী পন্থী লোকদের দলে বেড়াতে শুরু করেছেন বিএনপির একাংশ। ১৮ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে আড়াইহাজার বাজারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহামুদুর রহমান সুমন পন্থীদের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে।

জানাযায়, উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের মারুয়ারী গ্রামের রহমত আলীর ছেলে শাহ আলম হোসেন (রউফ) নামে আওয়ামী লীগের এক সক্রিয় কর্মীকে উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও মাহমুদুর রহমান সুমনপন্থী নেতাকর্মীরা রউফকে ফুলের মালা দিয়ে তাদের দলে যোগদান করিয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, রউফ আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড থেকে বিএনপির কিছু কর্মীদের নিয়ে তৎকালীন সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুকে প্রধান অতিথি করে ঢাকঢোল পিটিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগের যোগদানের পরপর তিনি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন।রউফ একজন সুযোগসন্ধানী লোক যে দল ক্ষমতায় আসে সে দলে যোগ দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেন।

এ ব্যাপারে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ জানান, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের কোন নেতাকর্মীকে বিএনপিতে পূর্ণবাসন করা যাবে না। যারা আওয়ামী পন্থীদের পূর্ণবাসন করবে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করার নির্দেশনা রয়েছে। যারাই আওয়ামী পন্থীদের পূর্ণবাসন করবে তারা দলের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ও.পি.এ এর উদ্যোগে সিদ্ধিরগঞ্জে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

পবিত্র রমজান মাস হলো দান-খয়রাত ও মানবিকতার প্রতীক। এ মাসে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা থেকেই অর্গানাইজেশন অফ পিস অ্যাসোসিয়েটরস (ও.পি.এ) উদ্যোগ নিয়েছে ইফতার বিতরণের।

১৮ মার্চ সোমবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পুল ও চিটাগাংরোডসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়।

ও.পি.এ দীর্ঘদিন ধরে সমাজের অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইফতার বিতরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা রমজানের পবিত্রতা ও সৌন্দর্যকে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে।

সংগঠনের সদস্যরা জানান, প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যেই তারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইফতার বিতরণে অংশ নেন। পথচারী, রিকশাচালক, শ্রমিক ও নিম্নআয়ের মানুষদের হাতে ইফতার পৌঁছে দেওয়ার সময় তাদের চোখেমুখে ছিল আনন্দের ঝলক। অনেকে ইফতার পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সংগঠনের এ মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক হাসান আহমেদ প্রান্ত বলেন, আমরা চাই, কেউ যেন অভুক্ত না থাকে। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই।

স্থানীয় বাসিন্দারাও ওলামায়ে কেরাম ও.পি.এ-এর উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এ ধরনের মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। পবিত্র রমজানের এই কল্যাণময় সময়ে ও.পি.এ-এর এমন উদ্যোগ সমাজের জন্য এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

অধরা সিদ্ধিরগঞ্জের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সোহাগ!

সান নারায়ণগঞ্জ

ঘটনার ১০দিন পেরিয়ে গেলেও প্রকাশ্যে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সোহাগকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ কিংবা যৌথ বাহিনী। নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জে ঝুঁট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুইগ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে একটি পক্ষের হয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শণ করে গুলিবর্ষণ করতে দেখা যায় সোহাগকে।

ঘটনার পর স্থানীয়রা জানান অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সোহাগ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরের ফুফাতো ভাই। তবে তিনি ঘটনার দুদিন পর সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেছেন সোহাগ তার ভাই নন এবং তার পক্ষের কিংবা ছাত্রদলের কোনো কর্মীও নন। অস্ত্রধারী সোহাগ তৃতীয় কোনো পক্ষের হতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।

ঘটনা সুত্রে জানাগেছে, গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অন্তত ৮জন আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকটি ফাঁকা গুলি করা হয় ও তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়। আদমজী ইপিজেডের পুরাতন থানার সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইপিজেডের ইউনিভার্সেল নামের একটি পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর ও রুহুল আমিন নামের এক বিএনপি নেতার সহযোগীদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এর জেরে রুহুল আমিনের সহযোগীরা ইপিজেডের ভেতরে ছাত্রদল নেতা রাকিবুর রহমানের সহযোগীদের মারধর ও ধারালো অস্ত্র গিয়ে কুপিয়ে আহত করে। ওই ঘটনার জেরে ওইদিন বিকেলে আদমজী ইপিজেডের পুরাতন থানার সামনে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।

ছাত্রদলের সাবেক নেতা রাকিবুর রহমান সাগর প্রথম আলোসহ সাংবাদিকদের স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেছিলেন, ব্যবসা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে বিকেলে আওয়ামীলীগ নেতা মতিউর রহমানের অনুসারী রুহুল, সাজ্জাদ, পাকনা বাবুর নেতৃত্বে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। তাঁদের পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাঁদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের লোকজনের ওপর কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।

সাখাওয়াত ও টিপুর সঙ্গে ওসমানদের সখ্যতা, নিয়েছিল ২ কোটি: মুকুল

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির মুলধারার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। একই সঙ্গে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঙ্গে ওসমানদের সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

১৫ মার্চ শনিবার বন্দর উপজেলা ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি ও মহানগরীর ২৬নং ও ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন আতাউর রহমান মুকুল।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর কারাবন্দী কর্মীদের সংবর্ধনা, ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুকুল বলেন, আমি সবসময় দলকে ধরে রাখতে চেষ্টা করেছি। দলের জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেই কাজটা আমি করেছি। যখন থেকে দল ক্ষমতাচ্যুত হই তখন থেকেই দলের হাল ধরে রেখেছি। আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু আমি দলকে ছেড়ে যাইনি। দলের প্রতিটি কার্যক্রমে আমি অংশগ্রহণ করেছি।

তিনি দাবি করেন, ৫ আগষ্ট দেশ নতুন করে স্বাধীন হওয়ার পরদিনই আমি শান্তি মিছিল করেছি, বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেছি। তারেক জিয়ার কথা কেউ রাখেনি। তিনি বলেছেন, দেশকে শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। আমি সেই ভাবে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।

সাখাওয়াত ও টিপুর কঠোর সমালোচনা করে মুকুল আরও বলেন, মহানগরের যে কমিটি দেয়া হয়েছে সেটা হলো সেলিম ওসমানের কমিটি। সেটা কিভাবে? সাখাওয়াতের স্ত্রী ছিলো সেলিম ওসমানের পিএস। তার কথাই সেলিম ওসমান শুনতো। সেলিম ওসমান দুই কোটি টাকা দিয়েছিলো সাখাওয়াতকে নির্বাচন করার জন্য। ওসমান পরিবারের কার সখ্যতা সেটা যাচাই-বাছাই করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ রইলো। যদি আমার দ্বারা বিএনপির তিল পরিমান ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে চিরজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে দিন, আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বলতে হবে কেনো আমাকে বহিষ্কার করা হলো। কি অন্যায় করেছি? কি ক্ষতি করেছি? সেটা বিএনপিকে বলতে হবে। যারা কোন আন্দোলন সংগ্রাম না ঘরে বসেছিলো তারা নাকি এমপি নির্বাচন করবে! যারা লুটপাট করে তাদের কোন জায়গা আমার কাছে নেই। আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করি। দেশনেত্রীর সুস্থ্যতা কামনায় ও তারেক রহমান খুব দ্রুত যেন দেশে এসে নেতৃত্ব দিতে পারেন সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেছেন, ৫ আগষ্ট আমরা ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে পতন করতে পেরেছি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ ছিলো, এই ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পতন হোক এবং সেটা হয়েছে। আমাদের উপর অনেক জুলুম অত্যাচার করেছে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার, যার চিহ্ন আমার শরীরে রয়েছে। আমরা লোভের বশিভূত হয়ে দল করিনা, দল করি শহীদ জিয়ার আদর্শের উপর ভিত্তি করে। তার আদর্শ ছিলো বলেই আজও মানুষ ধানের শীষে ভোট দেয়। আগামীতেও নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে বলে আমি আশাবাদী।

বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহিদুল ইসলাম রিপন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, ফখরুল ইসলাম মজনু, ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল আহমেদ বাবুল, সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আহমেদ টিটু, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর বুলবুল, ২৭নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম।

বক্তব্যের পুর্বে কারানির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মাননা প্রদান করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপি নেতা মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, শহীদ মেম্বার, আবুল কাশেম, এনায়েতুল্লাহ, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর আহমেদ, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সর্বশেষ সংবাদ