সান নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের পূর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৈমূর আলম খন্দকার উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা আছে, সেই কৃতজ্ঞতা বলে শেষ করা যাবে না। আপনারা টিভিতে দেখেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন বন্ধি ছিলেন তখন দলের মহাসচিব সহ কেন্দ্রীয় নেতারা দেখতে গিয়েছিলেন, ওই সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ”আমার তৈমূর কই? সেতো আমার উপদেষ্টা, তোমরা তাকে বহিষ্কার করলে কেন? তার কি দলের প্রতি কোনো অবদান নাই?” এইযে দেশনেত্রী বেগম খালেদা আমাকে মনে রাখছেন, এটা আমার শরীরের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে দিলেও এই ঋণ শোধ হবে না।
এখানে উল্লেখ্যযে, ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারনে তৈমূর আলম খন্দকার ও তার নির্বাচনের প্রধান এজেন্ট তৎকালীন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে বহিষ্কার করে দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। গত সপ্তাহে এটিএম কামালকে দলে নিয়েছে বিএনপি। ওই সময় তৈমূর আলম খন্দকার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। বহিষ্কারের পরেও দীর্ঘ প্রায় ২ বছর বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা রাখেন তিনি এবং বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবিতে দরখাস্তও দেন তৈমূর। সেই সঙ্গে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করলেও সেখানে সাক্ষাত দেননি।
পরবর্তীতে অনেকটা জেদ করে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তৃণমুল বিএনপিতে যোগদান করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তৈমূর আলমের জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও ভোটের মাত্র ৭ ঘন্টা আগে তাকে কেন্দ্রীয় বিএনপি বসিয়ে দিয়েছিলো। ১/১১ এর সময় তারেক রহমানের পক্ষে কেউ যখন আইনি লড়াই চালাতে এগিয়ে আসননি, তখন তৈমূর আলম খন্দকার নিজের ওকালতনামা দিয়ে তারেক রহমানের পক্ষে শুনানি করেন। সেই ঘ্টনায় তৈমূর আলমকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। দীর্ঘ ২৬ মাস কারাভোগ করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার।
এদিকে দোয়া মাহফিলে তৈমূর আলম আরও বলেন, আপনারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করবেন, দেশের জন্য জাতির জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ থাকা প্রয়োজন। দেশকে রক্ষা করার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হায়াত আল্লাহ যেনো বৃদ্ধি করে দেন। মানুষ দোয়া করলে আল্লাহ অবশ্যই শুনেন। সকলের কাছে একটাই প্রার্থনা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেনো সুস্থ হয়ে ওঠেন, লন্ডন গেলেও যেনো সুস্থ্য হয়ে ফিরে আসেন, না গেলেও যেনো সুস্থ্য হয়ে ওঠেন সেই দোয়া করবেন।
এর আগে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করে বলেছেন, আজকের এই দোয়ার আয়োজন বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে পালন করছিনা, আমি মনে করি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের ক্রান্তিলগ্নে একজন অভিভাবক চলে যাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ্য না হলে। তিনি সুস্থ হলে দেশের এবং বিএনপির অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, নতুবা জটিলতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। কারন জটিলতার কোনো অভাব নাই। দেশের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে জটিলতা, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জটিলতা এবং প্রতিদিন পত্রিকা দেখলে বুঝা যায় দেশটা কতটা অস্থিরতায় আছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। মোনাজাত শেষে উপস্থিত সকলের মাঝে রান্না করা খিচুরি বিতরণ করা হয়।
৫ ডিসেম্বর শুক্রবার বাদ জুমা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী খন্দকার বাড়িতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী, আলেম ওলামায় কেরাম ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন তৈমূর আলম খন্দকার।
তারাব পৌর ওলামা দলের সভাপতি কামাল খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের সাবেক সহ-সভাপতি মহসিন ভুঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক আলাল খন্দকার, সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম, রূপগঞ্জ থানা কৃষকদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল আবেদীন, উপজেলা শ্রমিক দল নেতা বুলু ভুঁইয়া প্রমুখ। পরে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া শেষে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।


