শামীম ওসমানের অস্ত্র নিয়ে রাজীবের বক্তব্য, রিয়াদের কঠোর জবাব

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

৯০ দশকের সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান বলেছিলেন, ‘ওই সময় পুুলিশ ফোর্সের কাছে যত অস্ত্র ছিল, তারচেয়ে বেশি অস্ত্র ছিল আমার কাছে। এখন আমার গাড়িতে অস্ত্র আছে কিনা আমি জানি না।’ মুলত বর্তমান অহিংসু রাজনীতি ও ৯০ দশকের রাজনীতির পার্থক্য বুঝাতে গিয়েই শামীম ওসমান এমন মন্তব্য করেছিলেন। সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার ফেসবুকে শামীম ওসমানকে ধন্যবাদ দিয়ে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এরপর দিন ৪ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ তার ফেসবুকে মাসুকুল ইসলাম রাজীবের ওই বক্তব্যের কঠোর ভাষায় জবাব দেন।

মাসুকুল ইসলাম রাজীবকে উদ্দেশ্য করে হাবিবুর রহমান রিয়াদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সাবেক সন্ত্রাসী ছাত্রদল নেতা রাজিব সাহেবকে বলব:-১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যার পরে মাদক, অস্ত্র, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলার ত্রাস তৈরি করেছিল বিএনপি। ১৯৯১ সাল থেকে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের কেউ বাসা থেকে বের হতে পারতো না, এলাকায় আসতে পারতো না বিএনপির সন্ত্রাসীদের কারনে। নারায়ণগঞ্জে অস্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছিল বিএনপি।’

রিয়াদ আরও লিখেন, ‘জননেতা একেএম শামীম ওসমান সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীদের নিয়ে এসব সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করেছেন। তখন সাধারণ মানুষ শ্লোগান দিতো বিএনপির ৫ এমপির দুলাভাই শামীম ভাই, শামীম ভাই। বিএনপির সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় ২০০১ সালে বিএনপির মদদে চাষাড়া আওয়ামীলীগ অফিসে আরডিএক্স গ্রেনেড হামলা, ২০০৪ সালে আওয়ামীলীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলাই প্রমাণ করে বিএনপি কত বড় সন্ত্রাসী দল। এতে প্রাণ দিয়েছে অনেক মানুষ।’

‘বিএনপির স্বররাষ্ট্র মন্ত্রী বাবর ও তারেক রহমান ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও গ্রেনেড হামলা মামলার মুল আসামী।’ মন্তব্য করেন রিয়াদ।

রিয়াদ আরও লিখেছেন, রাজিব হচ্ছেন ওই দলের নেতা তার ইতিহাস সবাই জানে। ২০০১-০৫ সাল তোলারাম কলেজে করছিল মাদক, ধর্ষণ, ছাত্রছাত্রীদের নির্যাতন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীদের আড্ডাখানা এসব অপকর্মের মূল হোতা ছিলেন রাজিব। বছর খানেক আগে ডিবির হাতে মাদক নিয়ে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটেন। এখন তিনি খুব সুশীল কথা বলেন ব্যাপারটা হাস্যকর। রাজিব সাহেবদের অপকর্মের ফাইল খুললে হয়তো শহরে আর থাকা হবে না। আপনাদের অপকর্ম কলেজের শিক্ষার্থীরা ভুলেনি। তাই আউট।’

ছাত্রলীগের এই নেতা লিখেছেন, ‘শামীম ওসমান এমপি মহোদয় বুঝিয়েছেন সেইসব সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে একটি শান্তিময় নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলেছি। আর সাবেক সন্ত্রাসী ছাত্রদল নেতা তার ভুল ব্যাখ্যায় মেতে উঠেছেন। তাদের দলের এটাই মুল শিক্ষা সেটা হল মিথ্যাচার।’

অন্যদিকে আগের দিন ৩ মার্চ মঙ্গলবার শামীম ওসমানের অন্ত্র নিয়ে বক্তব্যের জেরে সেই সময়কার পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব। মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৯০ দশকের রাজনীতি তুলে ধরেছেন।

তিনি লিখেছেন, গত কয়েকদিন ধরেই মাননীয় এক সংসদ সদস্যের অস্ত্র নিয়ে একটি বক্তব্য বেশ আলোচিত সমালোচিত হচ্ছে। উনি বলেছিলেন উনার কাছে যতোগুলো অস্ত্র ছিল পুলিশের কাছেও ছিলনা। তারপর উনি সেগুলো ২০০১ সালের পরে সংশোধন করে বলেছেন ৯১ সালে সে সময়ের পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন। আজ এক সংবাদমাধ্যমে দেখলাম উনি অস্ত্র ভান্ডার বলতে বিশাল কর্মী বাহিনীকে বুঝিয়েছেন তাহলে ঐ সময়ে কি জমা দিয়েছিলেন অস্ত্র না কর্মীবাহিনী?

রাজীব আরও লিখেন, আসলে সত্য অনেক সময় নিজের অজান্তেই বের হয়ে যায়। কারন সত্য যতই নির্মম হউক না কেন সেটা সবসময়ই সুন্দর। আমার মতে উনি ঐ অনুষ্ঠানে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং ২০০১ সাল উল্লেখ করেছেন পুরোটাই সত্যি। কারন ২০০১ সালের পর অস্ত্রের রাজনীতি করার আর সুযোগ ছিলনা। এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই যে একসময় নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশেই অস্ত্রের রাজনীতির রেওয়াজ ছিল।

সেই সময়কার রাজনীতি তুলে ধরে রাজীব লিখেন, আমি নিজে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম ১৯৯৯ সালে। তখন মিনিমাম ৩০/৪০ জন অস্ত্রধারী আমাকে ঘিরে গুলি করেছিল। ৯১, ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আতংকের নগরী ছিল নারায়ণগঞ্জ। এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে দেশনেত্রীর ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে দলমত নির্বিশেষে অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধের জন্য উনি ছিলেন কঠোর এবং বদ্ধপরিকর। পরবর্তীতে পুরোপুরি নির্মুল করেছিলেন যার ধারাবাহিকতা আজো অনেকাংশে বিদ্যমান।

‘মানুষ এবং তার মানুষিকতা পরিবর্তনশীল। ৯৬ থেকে ২০০১ এই সাংসদের শাসনামলের সাথে যদি ২০০৮ থেকে অদ্যবধি শাসনামলের বা বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের প্রতি আচরনের তুলনা করা হয় (পুলিশ ব্যতিত) তাহলে আমার দৃষ্টিতে সেটা আকাশ পাতালের মত পার্থক্য মনে হবে।’

‘২০০৮ এর পর আজ অবধি উনার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আচরণ ছিল সৌহার্দ্যপূর্ন হয়তো আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা বিশ্বাস বেড়ে যাওয়ার কারনে। তাই সত্য স্বীকার করা এবং বলার সাহস সব রাজনীতিবিদের মাঝে তৈরী হউক এটাই প্রত্যাশা। সবশেষে সত্য স্বীকার করা আর এখন আল্লাহর উপর অনেক আস্থা রাখেন এই কথা বলার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

অন্যদিকে গত ১ মার্চ রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে জেলা পুলিশের আয়োজনে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২০’ এর আলোচনা সভায় শামীম ওসমান ৯০’দশকের সহিংস রাজনীতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘২০০১ সালের আগে নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ফোর্সের কাছে যত অস্ত্র ছিল তার চেয়ে বেশি অস্ত্র একা আমার নিজের কাছেই ছিল। আজকে আমার গাড়িতে অস্ত্র আছে কি না তা আমি নিজেও জানি না।’

অতীত সহিংস রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে দাবি করে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক দর্শন আগে ছিল একরকম। নিজের জন্য করতাম। জিন্দাবাদ শুনতে ভালো লাগতো। ২০০১ সালের পরে আমার এই চিন্তা পরিবর্তন হয়েছে।’

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরের পরিস্থিতি তুলে ধরে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেছিলেন, ‘সে সময় সদর থানার ওসি ছিল মঞ্জুর কাদের। তার ওপর একটি বাড়ি থেকে এসে হামলা চালানো হলো। ওই বাড়ি থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা এসে ওর উপর হামলা করলো। তখন চাষাড়ার সকল হকারকে আমরা পলিটিক্যাল মটিভেশন করেছিলাম। এর জন্য হকারদের প্রতি আলাদা একটা টান আছে। তারা লাঠি নিয়ে পাহারা দিত। যে মুহূর্তে পুলিশের উপর অ্যাটাক হয়েছিলো এই টোটাল হকাররা লাঠি নিয়ে তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলেছিল। এ কারণেই ওরা কিন্তু নারায়ণগঞ্জে কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে নাই।’

আদালতের কাঠগড়ায় সোনারগাঁও বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সোনারগাঁও থানা পুলিশের দায়েরকৃত নাশকতার মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সোনারগাঁও বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী।

৪ মার্চ বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালতে হাজিরা দেন বিভিন্ন পর্যায়ের এসব নেতাকর্মীরা।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম জানান, সোনারগাঁও থানার একটি নাশকতার মামলায় সোনারগাঁ বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।

আসামিরা হলো- সোনারগাঁও বিএনপি নেতা কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হক, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, জেলা যুবদলের সহ-সম্পাদক সেলিম হোসেন দিপু, সোনারগাঁও ছাত্রদল নেতা রুবেল হোসাইন, ইকবাল প্রধান, মোজাম্মেল হক, কাজী হিমেল, ফরহাদ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আবদুল আলীম, শাহাজুদ্দিন, বাশার, হিমেল, সাইদুর, ইউনুস, খোরশেদ ও বিল্লাল হোসেন প্রমূখ।

দলিল তল্লাশিকারক কল্যাণ সমিতির ১৬ সদস্যের পদত্যাগ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে দলিল তল্লাশিকারক কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান মিল্টন ও সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে কমিটির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সহ ১৬ সদস্য পদত্যাগ করছেন।

৪মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছে এ পদত্যাগপত্র জমা দেন তারা।

পদত্যাগ করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি সফর আলী ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রুহুল আমিন শাকিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী সবুজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তারেকুল ইসলাম ভূঁইয়া সুমন, দপ্তর সম্পাদক নাহিদ হাসান খান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দিপু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রহিম উল্লাহ, কার্যকরী সদস্য তপু ভূঁইয়া, মেহেদী ভূঁইয়া, রাজ মৃধা ও নুরে আলম কমল।

পদত্যাগ পত্রে পদত্যাগকারীরা উল্লেখ করেন, বর্তমান কার্যকরী সদস্যদের অব মূল্যায়ন। সাধারণ সদস্যদের মতামত বিরোধী কার্যকলাপ। আয় ব্যয়ের হিসাব সংক্রান্ত জটিলতা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের ব্যক্তিগত সেচ্ছাচারিতায় সমিতি পরিচালনা করছে। যা আমাদের সম্মানহানীকর। যেহেতু আমরা জবাবদিহিতা স্বচ্ছতায় সাধারণ সদস্যদের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই আমরা সেচ্ছায় বর্তমান কার্যকরি পরিষদের পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম।

টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবরে সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের শ্রদ্ধা নিবেদন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের করব জিয়ারত ও পুস্পস্তবক অর্পণ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ। এ সময় উপজেলা আওয়ামীলীগ ও জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরামের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

৪মার্চ বুধবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের নেতৃত্বে সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে শতাধিক গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর আগে বুধবার সকালে উপজেলার মেঘনা শিল্পনগরী এলাকা থেকে সোনারগাঁও উপজেলা জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরামের নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে গাড়ির বহরটি টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়।

করব জিয়ারতের সময় উপস্থিত ছিলেন-নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটি সদস্য ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু, সোনারগাঁও জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরামের সদস্য সচিব ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ আব্দুর রউফ, সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ, কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান সহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।

অবশেষে বন্দর ইউনিয়নবাসীর জয়: চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ফিরে পেলেন এহসান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

অবশেষে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহমেদ। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। সাময়িক সেই বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে বন্দরের লোকজন দাবি করেছেন বন্দর ইউনিয়নবাসীর জয় হয়েছে। কারন টানা দুইবার এহসান উদ্দীনকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছিলেন বন্দরবাসী।

২ মার্চ গত সোমবার বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পাশাপাশি সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেছেন।

স্থানীয় সরকার সচিব, রেজিস্টার জেনারেল, অতিরিক্ত সচিব, ডেপুটি রেজিস্টার, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) ও বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জন্ম নিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৩৩লাখ ৭২হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

এই বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ গত ১ মার্চ রবিবার হাইকোর্টে একটি রিট করেন।
এ ব্যাপারে এহসান উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করলে বরখাস্তের আদেশ আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আমি বরখাস্তকৃত সচিব মোহাম্মদ ইউসুফের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। মামলাটি পিবিআই এর তদন্তে আছে। এ বিষয়ে দুদকও তদন্ত করছে। অন্যায়ের সাথে আমি কোন অপোষ করবো না।

জনপ্রিয় এই চেয়ারম্যান বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি বিক্রি করে চাইলে টাকা ফেরত দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা যায়; কিন্তু আমি তা কোনভাবেই করবোনা। তা যদি করি, তাহলে প্রকৃত অপরাধী, দুর্নীতিবাজ, প্রতারক, বিশ্বাসঘাতক সচিব পার পেয়ে যাবে। আমার কাছে এ ঘটনায় বরখাস্ত ইউপি সচিবের সম্পৃক্ততার অনেক প্রমাণ রয়েছে।

তিনি দাবি করেন, ঘটনা প্রকাশের পর তৎকালীন উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) একটি তদন্ত কমিটি করেন এবং ইউপি সচিব ইউসুফকে সম্পূর্ণ অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেন। সেই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক জেলা প্রশাসক ইউসুফকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বরখাস্ত করেন। সেই তদন্তে আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায় এড়াতে পারিনা বলেও প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে বরখাস্তের পর বন্দর ইউনিয়নবাসীকে উদ্দেশ্য করে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহমেদ তার ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস পোস্ট করার পর তা রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায়। যেখানে হাজার হাজার মানুষ তার পক্ষে সমর্থন যোগান। সেই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। এহসান উদ্দীন একজন সুনামধণ্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। টানা দুইবার তিনি নির্বাচন করে এখানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন।

চেয়ারম্যান তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘বন্দর ইউনিয়নবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। হাজারো প্রমাণ হাতে থাকার পরও আজ সত্য প্রতিষ্ঠায় মনে হয় ব্যর্থ হয়ে গেলাম।’

‘আমি হাল ছেড়ে দেয়ার মতো মানুষ না। আমি অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করার মানুষ না। আমি দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করার মতো মানুষ না। আমি মিথ্যা কথা বলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মানুষ না। আমি কারও হক নষ্ট করে অর্থ উপার্জন করার মতো মানুষ না। আমি জীবনে কাউকে এক টাকা ঠকিয়েছি এমন কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারবেন না ইনশাআল্লাহ।’

‘আস্থা আর বিশ্বাস ছাড়া পৃথিবীতে কোনো প্রতিষ্ঠানই চলতে পারে না। পিতার ওপর পুত্রের আর পুত্রের ওপর পিতার এবং স্বামীর ওপর স্ত্রী আর স্ত্রীর ওপর তার স্বামীর যদি আস্থা-বিশ্বাস না থাকতে তাহলে পৃথিবীতে থেকে সংসার নামক শব্দটি এতদিনে মুছে যেত।’

‘একজন কাজের ছেলের হাতে আমার বাচ্চাকে রেখে যাওয়ার পর সে যদি আমার সেই বাচ্চাকে গলা টিপে হত্যা করে তার দায় আমি বাবা নিতে পারিনা।’

‘৩৩ লাখ টাকা আমার পারিবারিক ঐতিহ্য আর সম্মানের প্রেক্ষাপটে খুবই সামান্য, আমার কথা না হয় বাদই দিলাম।’
‘বাবার কাছ থেকে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সামান্য জমি বিক্রি করে দিলেই ব্যবস্থা হয়ে যেত। এতে করে প্রকৃত অপরাধী, দুর্নীতিবাজ, প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতক সচিব পার পেয়ে যেত।’

‘পিবিআই এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে এই বিষয়ে ওপর তদন্ত চলছে। আমি আমার ইউনিয়নবাসীকে অল্প কিছুদিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

‘আমি প্রার্থনা করছি যাতে আল্লাহ সুবহানাআল্লাহ আমাকে সব ধরণের অন্যায়, দুর্নীতি, বিশ্বাসঘাতকতা আর প্রতারণার বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন।

এদিকে চেয়ারম্যান এহসান উদ্দীন আহমেদকে বরখাস্ত করার দুদিনের মাথায় নারায়ণগঞ্জের একটি মিডিয়াতে এহসান উদ্দীন আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অবান্তর অভিযোগ তুলেন সাবেক ওই সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। তবে ইউসুফের নানা অভিযোগ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেন বন্দর ইউনিয়নবাসী। নারায়ণগঞ্জের একটি জনপ্রিয় অনলাইনে মোহাম্মদ ইউসুফের সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশিত হলে সেখানে বন্দর ইউনিয়নের লোকজন নানা প্রশ্ন তুলেন। মোহাম্মদ ইউসুফের অভিযোগগুলোতে সরাসরি বন্দর ইউনিয়নবাসী মিথ্যা বানোয়াট দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে নিজেকে বাঁচাতেই মোহাম্মদ ইউসুফ মিয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা বানোয়াট অভিযোগ তুলছেন বলেও দাবি করছেন।

সেখানে ইউসুফ দাবি করেছেন- চেয়ারম্যান এহসান পরিষদের সচিব ইউসুফকে পৃষ্ঠপোষকতা করেননি। ঠিকমত পরিচালিত করেনি। এ বিষয়ে ইউনিয়নবাসীর প্রশ্ন চেয়ারম্যান তাকে পৃষ্টপোষকতা কেন করবে? সরকার তাকে নিয়োগ দিয়েছে, বেতন দিয়েছে কি চেয়ারম্যানের পৃষ্টপোষকতা নেওয়ার জন্য?

চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন কিনা এমন বিষয়ে ইউসুফ দাবি করেছেন তিনি একজন মেম্বারের কাছে চেয়ারম্যানের নামে নালিশ দিয়েছেন এবং হেলেনা নামের একজন চৌকিদারের কাছেও নালিশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন ওঠেছে চেয়ারম্যানের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কি তাহলে চৌকিদার?

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমানের টাকাও নাকি চেয়ারম্যান খেয়ে ফেলেছেন এমন দাবি করেছেন ইউসুফ। এ বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কিভাবে জানতে পারলো তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে।

মোহাম্মদ ইউসুফের দাবি- চেয়ারম্যানের দায়েরকৃত মামলায় পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে এবং চেয়ারম্যান এহসানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ইউসুফের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলেও তিনি দাবি করেন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠেছে এখনও আদালতে ওই প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়নি। পরবর্তী ধার্য্য তারিখে প্রতিবেদন উত্থাপন করা হবে। তাহলে ইউসুফ জানলেন কিভাবে তার বিরুদ্ধেই প্রতিবেদন দাখিল করেছে পিবিআই?

এহসান উদ্দীন আহমেদের পিতা রাজাকার ছিলেন এমন তথ্যের বিষয়ে ফেসবুকে মন্তব্য ওঠেছে এটা মোহাম্মদ ইউসুফের নিছক বানোয়াট তথ্য। যার কোন ভিত্তি নেই।

সাবেক সচিব দাবি করেছেন তাকে গোপন ভিডিও ধারণ করা হতো। স্থানীয়দের প্রশ্ন সে দূর্নীতি না করলে তাকে গোপন ভিডিও ধারণ করার কারন কি? আর সে সৎ হলে ভিডিও ধারণ করলে সমস্যা কি ছিল?

সাবেক সচিব দাবি করেছেন- তিনি নিবন্ধন ফি ও ট্রেড লাইসেন্স ফি এর টাকা সরাসরি চেয়ারম্যানের হাতে দিতেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন সরকারি টাকা চেয়ারম্যানের কাছে কেন দেয়া হবে? ইউনিয়ন পরিষদের কি নিজস্ব একাউন্ট নাই? সরকার নিয়োগ দিছে কেন? এই অর্থ তো সরকারি ব্যাংক হিসাবে জমা রাখবেন সচিব। আর পরিষদের দাপ্তরিক কাজ ও হিসাবপত্র কে রাখবে?

রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কেন সাসপেন্ড হয়েছিলেন এই সচিব সেটাও জানতে চেয়েছে বন্দরের লোকজন।

বন্দরে র‌্যাবের অভিযানে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলায় র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব-১১) অভিযান চালিয়ে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ১৪৩ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার ও কভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়। ৩ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ৩মার্চ মঙ্গলবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর এলাকায় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত র‌্যাব-১১ এর চেকপোস্টে পণ্য বোঝাইকৃত কুমিল্লা হতে ঢাকাগামী একটি হলুদ রংয়ের সন্দিগ্ধ কাভার্ড ভ্যানে তল্লাশী করে ১৪৩ বোতল ফেন্সিডিল ও মাদক বিক্রির নগদ ২ হাজার ৮’শ ১৫ টাকা উদ্ধার সহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলোঃ মোঃ ইকবাল হোসেন ও মোঃ মোবারক আলী ওরফে রকি। তল্লাশীকালে মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত কাভার্ড ভ্যানটিও জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা চট্টগ্রাম হতে কাভার্ড ভ্যানে পণ্য বোঝাই করে ঢাকা যাচ্ছিল। তারা কাভার্ড ভ্যানের ভিতরে পণ্য পরিবহনের আড়ালে অভিনব কৌশলে চালকের পিছনের সীটের নিচে ১টি ট্রাভেল ব্যাগের ভিতর লুকিয়ে ফেন্সিডিল নিয়ে এসে ঢাকা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করার জন্য আসছিল।

র‌্যাব আরও জানায়, আসামী মোঃ ইকবাল হোসেনের বাড়ী ফেনী জেলার দাগন ভূইয়া থানাধীন সুজাতপুর এলাকায় এবং মোঃ মোবারক আলীর বাড়ী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন দামপাড়া এলাকায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় অভিনব পন্থায় নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছিল।

র‌্যাব জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে সীমান্ত এলাকা দিয়ে অভিনব কায়দায় নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল বাংলাদেশে প্রবেশ করায় এবং কাভার্ড ভ্যানে বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের আড়ালে বিশেষ কৌশলে নিয়ে এসে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছে।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট, অভিযুক্তের মোবাইল ফেরত আবেদন খারিজ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ফেসবুক আইডিতে বঙ্গবন্ধু ও প্রধ্রানমন্ত্রীর আপত্তিকর ছবি আপলোড করার অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তারকৃত আসামি গালিব হাসনাতের জব্দকৃত মোবাইল ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন আসামির আইনজীবী। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।

৩ মার্চ মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মোহসীনের আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জব্দকৃত মোবাইল ফেরত চেয়ে আবেদন করলে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া বিরোধীতা করে বলেন, জব্দকৃত মোবাইল আলামত হিসেবে রক্ষিত আছে। সেই মোবাইল যদি ফেরত দেয়া হয় তাহলে আলামত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আদালত বাদী পক্ষের আইনজীবীর কথা বিবেচনা করে আসামি পক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া বলেন, আসামি পক্ষ জব্দকৃত মোবাইল ফেরত চেয়ে আবেদন করলে আমরা এর বিরোধীতা করে আদালতে যুক্তিযুক্ত কারন তুলে ধরলে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেন।

অন্যদিকে জানাগেছে, এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালত আসামির ১ দিনের মঞ্জুর করেন।

গালিব হাসনাত বন্দরের হাজী সিরাজউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিনের ছেলে।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার ঘটনায় কদম রসুল পৌর যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন বাদী হয়ে তথ্য প্রযুক্তি আইনে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে বিকেলে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গালিব হাসনাত গত ২৮ জানুয়ারি তার গালিব হাসনাত (বেয়াদব) নামক ফেসবুক আইডি থেকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর অপত্তিকর ছবি আপলোড করে ভাইরাল করে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর সম্মানহানী করে।

এ ঘটনায় ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে উল্লেখিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা স্কুল ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে বন্দর থানায় আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময়

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম। এর আগে তিনি সকলের সঙ্গে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ৩ মার্চ মঙ্গলবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সোহেল রানা, ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি, মুক্তিযোদ্ধা বাতেন মোল্লা, মফিজুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম, সকল ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সহ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সমিতির সভাপতি সোনিয়া আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান প্রমূখ।

সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি মতবিনিময় সভায় বলেন, সকল মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুকে বুকে ধারণ করে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। আমরা অতীতের ন্যায় বর্তমানেও দেশের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে দ্বিধাবোধ করবোনা। আজ যে সম্মান ইউএনও আমাদেরকে দিয়েছেন, তা আমরা মনে রাখবো। যেকোনো ভালো ও জনকল্যাণ কাজে আমরা সকল মুক্তিযোদ্ধারা তার পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।

নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি বাংলাদেশের সন্তান, যারা যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করলো তাদের সম্মান করবো না তা কি করে সম্ভব। আমি চাই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে পুরো সোনারগাঁবাসীর পাশে থেকে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে। সেক্ষেত্রে আমি সকলের সহযোগিতা চাই।

সোনারগাঁও প্রেস ইউনিটির কমিটি: সভাপতি ফরিদ, সেক্রেটারি ফারুক

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের সাংবাদিকদের সংগঠন সোনারগাঁও প্রেস ইউনিটির কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে ফরিদ হোসেনকে সভাপতি ও ফারুক হোসেনকে সেক্রেটারি নির্বাচিত করা হয়। সংগঠনটির সকল সদস্য কণ্ঠভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি নির্বাচিত হয়।

৩ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ঈশাখাঁ মোবাইল মার্কেটের ৩য় তলায় প্রেস ইউনিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সভায় সকল সদস্যের সিদ্ধান্তক্রমে বিগত কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়। পরে সদস্যদের কন্ঠভোটের মাধ্যমে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম’ এর প্রকাশক ও দৈনিক বর্তমান পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি ফরিদ হোসেনকে সভাপতি এবং দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকা ও বাংলাদেশ টুডে এর সোনারগাঁ প্রতিনিধি ফারুক হোসেন সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন- ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, চ্যানেল আই টিভির স্টাফ রিপোর্টার আক্তার হাবিব, চারদিক সাময়িকীর সম্পাদক ও দেশ রূপান্তর পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি রবিউল হুসাইন।

কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে দ্যা নিউজ টুডে এর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দৈনিক ইনকিলাব এর সাব-এডিটর মোঃ রহুল আমিন, কোষাধ্যক্ষ শিক্ষার কন্ঠস্বর পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলোচিত কন্ঠ পত্রিকার সাব-এডিটর রেজাউর করিম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নব অভিযান পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার পরিমল বিশ্বাস, কার্যকরী সদস্য মোকাররম হোসেন মোল্লা মামুন, মাজহারুল ইসলাম রোকন, জয়নাল আবেদীন ও খন্দকার মাজেদুল ইসলাম সম্রাট।

শামীম ওসমানের অস্ত্র নিয়ে বক্তব্য: রাজীবের দেখা সেই সময়ের রাজনীতি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমানের অস্ত্র বিষয়ক বক্তব্য নিয়ে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে জেলার মিডিয়া জুড়ে। তবে শামীম ওসমান তার বক্তব্যের একদিন পর সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। মুলত শামীম ওসমান ৯০দশকে অস্ত্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে ছিলেন, ‘ওই সময় পুলিশের কাছে যত অস্ত্র ছিল, তারচেয়ে বেশি আমার কাছেই ছিল। আজকে আমার গাড়িতে অস্ত্র (লাইসেন্সকৃত) আছে কিনা আমি জানিনা।’

শামীম ওসমানের এমন বক্তব্যের জেরে সেই সময়কার পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব।

মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৯০ দশকের রাজনীতি তুলে ধরেছেন।

তিনি লিখেছেন, গত কয়েকদিন ধরেই মাননীয় এক সংসদ সদস্যের অস্ত্র নিয়ে একটি বক্তব্য বেশ আলোচিত সমালোচিত হচ্ছে। উনি বলেছিলেন উনার কাছে যতোগুলো অস্ত্র ছিল পুলিশের কাছেও ছিলনা। তারপর উনি সেগুলো ২০০১ সালের পরে সংশোধন করে বলেছেন ৯১ সালে সে সময়ের পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন। আজ এক সংবাদমাধ্যমে দেখলাম উনি অস্ত্র ভান্ডার বলতে বিশাল কর্মী বাহিনীকে বুঝিয়েছেন তাহলে ঐ সময়ে কি জমা দিয়েছিলেন অস্ত্র না কর্মীবাহিনী?

রাজীব আরও লিখেন, আসলে সত্য অনেক সময় নিজের অজান্তেই বের হয়ে যায়। কারন সত্য যতই নির্মম হউক না কেন সেটা সবসময়ই সুন্দর। আমার মতে উনি ঐ অনুষ্ঠানে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং ২০০১ সাল উল্লেখ করেছেন পুরোটাই সত্যি। কারন ২০০১ সালের পর অস্ত্রের রাজনীতি করার আর সুযোগ ছিলনা। এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই যে একসময় নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশেই অস্ত্রের রাজনীতির রেওয়াজ ছিল।

সেই সময়কার রাজনীতি তুলে ধরে রাজীব লিখেন, আমি নিজে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম ১৯৯৯ সালে। তখন মিনিমাম ৩০/৪০ জন অস্ত্রধারী আমাকে ঘিরে গুলি করেছিল। ৯১, ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আতংকের নগরী ছিল নারায়ণগঞ্জ। এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে দেশনেত্রীর ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে দলমত নির্বিশেষে অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধের জন্য উনি ছিলেন কঠোর এবং বদ্ধপরিকর। পরবর্তীতে পুরোপুরি নির্মুল করেছিলেন যার ধারাবাহিকতা আজো অনেকাংশে বিদ্যমান।

‘মানুষ এবং তার মানুষিকতা পরিবর্তনশীল। ৯৬ থেকে ২০০১ এই সাংসদের শাসনামলের সাথে যদি ২০০৮ থেকে অদ্যবধি শাসনামলের বা বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের প্রতি আচরনের তুলনা করা হয় (পুলিশ ব্যতিত) তাহলে আমার দৃষ্টিতে সেটা আকাশ পাতালের মত পার্থক্য মনে হবে।’

‘২০০৮ এর পর আজ অবধি উনার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আচরণ ছিল সৌহার্দ্যপূর্ন হয়তো আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা বিশ্বাস বেড়ে যাওয়ার কারনে। তাই সত্য স্বীকার করা এবং বলার সাহস সব রাজনীতিবিদের মাঝে তৈরী হউক এটাই প্রত্যাশা। সবশেষে সত্য স্বীকার করা আর এখন আল্লাহর উপর অনেক আস্থা রাখেন এই কথা বলার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

সর্বশেষ সংবাদ