নারায়ণগঞ্জের ১২০ স্কুলে মা ও বাবার কাছে চিঠি লেখা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় মা ও বাবার কাছে সন্তানের চিঠি লেখা প্রতিযোগিতা এবং শিক্ষকদের আন্তঃক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, মা ও বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। আর বাবা মায়ের কাছে চিঠি লিখে পুরস্কার পেয়ে পুরস্কার গ্রহণের সময় প্রত্যেক সন্তান তার মা ও বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলেছে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তাঁদের বাবা-মায়ের কাছে চিঠি লিখে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।

১৪ অক্টোবর সোমবার সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার মিলনায়তনে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে অনুষ্ঠানটি সার্থক হয়েছিল, যখন উপস্থিত ৩০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পুরস্কারপ্রাপ্ত ১০০ জন শিক্ষার্থী শপথ নিয়েছিল যে, ‘আমরা কখনো আমাদের মা-বাবাকে কষ্ট দিবনা এবং মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখবো না। ‘সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে বড় উপহার হচ্ছে মা-বাবা’। তাই মা-বাবা বেঁচে থাকতে তাঁদের প্রতি এরূপ আচরণ করতে হবে, যাতে তাঁদের মৃত্যুর পর তাদের সাথে কোন প্রকার দুর্ব্যবহারের জন্য অনুশোচনা করতে না হয়।

অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা কমিউনিটিং পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল।

প্রধান অতিথি নাহিদা বারিক তার বক্তব্যে বলেন, আমরা সব সময় আমাদের সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম, দ্বিতীয় করার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠি। প্রকৃতপক্ষে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার। সন্তানকে জড়িয়ে ধরে তাঁর খোঁজ খবর নিতে হবে এবং তার অনুভূতি বুঝতে হবে। তাহলে মা-বাবা ও সন্তানের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠবে। আমাদের সন্তানরা থাকবে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত।

এসময় ইউএনও নাহিদা বারিক উপস্থিত শিক্ষকদের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কাউটিং চালু করার পরামর্শ দেয়া হয়। স্কাউটের বাচ্চারা অন্যান্য বাচ্চাদের থেকে আলাদা হয়। তাঁদের মধ্যে দায়িত্ববোধ বেশি থাকে এবং তারা সমাজের বিভিন্ন অপরাধ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সন্তানদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধূলার সাথে জড়িত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা জানানোর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ করা হয় এবং চাহিদার যথাসাধ্য যোগান দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।

এদিকে শিক্ষক অজিত কুমার দাস ও শুভাশিষ দাস, তাঁদের বাবা বেঁচে নেই। তাঁরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়েছেন এবং অডিটরিয়মে উপস্থিত সকলকে অশ্রুসিক্ত করেছেন। এভাবে আবেগ আল্পুত অশ্রুসিক্ত পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ১২০টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩য় হতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী নিজ নিজ স্কুলে বাবা ও মায়ের কাছে চিঠি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। বাবা ও মায়ের কাছে চিঠি প্রতিযোগিতায় ৩৬ জন শিক্ষার্থী পুরস্কার পেয়েছে। আর শিক্ষকদের আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১৫০জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেছে।