আড়াইহাজারে ইয়াবাসহ স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহীনকে (৩৮)ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৫ মার্চ বুধবার দুপুরে উপজেলার ছোট ফাউসা গ্রামে অভিযান তাকে ৭২ পিছ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত শাহীন ওই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে এবং ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবকদলের ২৮ নং কার্যকরী সদস্য ও ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর ভাগনি জামাই রবিনের আশ্রয়ে থেকে শাহীন মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড করে আসছিল। ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টিয়ে বিএনপি সেজে মানুষের উপর অত্যাচার শুরু করে। গত ১৫ দিন আগে ওরশের নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা সৃস্টি হয়। পরে প্রশাসন ওরশ বন্ধ করে দেয়। তার অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিস্ট হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিএনপির নাম ব্যবহার করে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি ও চাঁদাবাজি করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ৭২ পিছ ইয়াবাসহ তাকে আটক করে। তার নামে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নিকট ৮টি অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। বিএনপির নেতাদের ছবি দিয়ে এলাকাতে পোস্টারিং করেছে মাদক বিক্রিতা শাহিন।

আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ জানান, শাহীন বিএনপির কেউ না। সে বিএনপির সাজার চেষ্টা করছে।

আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আটকের পর তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়েরের করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়পার্টির সহ-সভাপতি মাকসুদ গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি মাকসুদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

৫ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে বন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক মামলা রয়েছে।

বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির নেতা মাকসুদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় ফতুল্লা থানায় করা একটি হত্যা চেষ্টার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা রয়েছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) আসিফ ইমাম স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলার যেকোনো একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জে বিদেশি অস্ত্রসহ যুবক গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিদেশি অস্ত্রসহ মেহেদী হাসান (২০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১। ৪ মার্চ মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের পানির কল এলাকার এসিআই গেইটের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মেহেদী হাসান সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকার মো. রহিম মিয়ার ছেলে। তার কাছ থেকে একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় র‍্যাব-১১ এর পরিদর্শক সুজিৎ বিশ্বাস বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

৫ মার্চ বুধবার দুপুরে র‌্যাব -১১ এর স্কোয়াড্রন লীডার কোম্পানী কমান্ডার মো. ইশতিয়াক হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, গত ৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টার দিকে র‌্যাব-১১ এর পুলিশ পরিদর্শক সুজিত বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি টহল দল সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন পানিরকল এসিআই গেইটের সামনে অস্থায়ী চেকপোষ্ট স্থাপন করেন। এ সময় রাত ৮ টার দিকে সন্দহভাজন এক যুবককে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃতকে তল্লাশী করে খালি ম্যাগাজিনযুক্ত ১টি বিদেশি রিভলবার উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মেহেদী হাসান অবৈধ ভাবে বিদেশি রিভলবারটি সংগ্রহ ও অসৎ উদ্দেশ্যে বহন করার কথা তাদের জানিয়েছে। এছাড়া তার কাছে রিভলবার রাখার কোন বৈধ কাগজপত্র নাই। পরে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এ ঘটনায় আটককৃত ওই যুবকের বিরুদ্ধে র‌্যাব-১১ এর পুলিশ পরিদর্শক সুজিৎ বিশ্বাস বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন।

সাবেক মন্ত্রী গাজী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার স্ত্রী হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৫ মার্চ বুধবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ২৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ৬টি ব্যাংক হিসাবে ২৫৭ কোটি ৭৫ লাখ ৪৮৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ ছাড়াও, তার নামে ৪৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে তার গ্রহণযোগ্য আয় ৪২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে, হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি ৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ৫টি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজীকে গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একটি আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে রূপগঞ্জ থানায় করা স্কুলছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রূপগঞ্জে প্রকাশ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে মারধর, ভিডিও ভাইরাল

সান নারায়ণগঞ্জ

রূপগঞ্জের পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়কে সিএনজি চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও চালকদের মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সিএনজি চালকরা। এ সময় তারা ভুলতা-কুড়িল বিশ্বরোড সড়কে চলাচলরত বেশ কয়েকটি বিআরটিসি ডাবল-ডেকার বাস আটকে দিয়ে যাত্রী নামিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে দুই পুলিশ সদস্যকে মারধর করে বিক্ষুব্ধ সিএনজি চালকরা।

বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্বরোড সড়কের কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে পড়লে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি ওঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বিক্ষুব্ধ সিএনজি চালকরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে বিআরটিসি বাস কর্তৃপক্ষের লোকজন তাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিআরটিসি-সমর্থিত রাকিব ও জিহাদের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী বেশ কয়েকজন সিএনজি চালককে মারধর করে এবং সিএনজি ভাঙচুর চালায়। বিষয়টি বিআরটিসি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বুধবার সকাল থেকে আবারও চাঁদার দাবিতে সিএনজি চালকদের ওপর হামলা চালায় রাকিব-জিহাদ বাহিনী। তারা ৩-৪ জন সিএনজি চালককে মারধর করে ও সিএনজি ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদে দুপুর ১টার দিকে সিএনজি চালকরা একত্রিত হয়ে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাশে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সড়কে চলাচলরত বেশ কয়েকটি বিআরটিসি বাস আটকে দিয়ে যাত্রী নামিয়ে দেয় এবং অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ও বিআরটিসির বাস চালু করার চেষ্টা চালালে বিক্ষুব্ধ সিএনজি চালকরা এসআই সায়েম ও কনস্টেবল বাচ্চুকে মারধর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের দুই পুলিশ সদস্য (এসআই সায়েম ও কনস্টেবল বাচ্চু) আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা করা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকাবাসীর স্বার্থে এ সড়কে নিরাপদ গণপরিবহন চালুর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন মামলায় ৭ আসামি গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে হতাহতের মামলা, মাদক, চুরিসহ বিভিন্ন মামলা ও আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। ৫ মার্চ বুধবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুইজন রিমাণ্ড ফেরতসহ ৯ জন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে ১ জনের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) ছিল, বৈষম্য বিরোধী মামলায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্যান্য মামলায় আরও ৪ জনকে আটক করা হয়।

সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বারী স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

২১শে ফেব্রুয়ারী বনাম ৮ই ফাল্গুন: সংস্কারমূলক একটি প্রস্তাবনা

প্রতি বৎসরের ন্যায় এবারও ঘটা করে পার হয়ে গেল ২০২৫ সনের ২১শে ফেব্রুয়ারী, যা বাঙ্গালী জাতির টানিং পয়েন্টের একটি মাইলফলক। ১৯৫৩ নং সন থেকেই দলমত ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে বির্তকহীন ভাবে দিনটি মাতৃভাষা দিবস হিসাবে প্রতিবৎসর যথাযথ মর্যাদার সাথে পালিত হয় যার কলেবরও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে শহীদ মিনার নির্মানে পাকিস্তান সরকার বাধা দিয়েছিল, ভেঙ্গে ফেলেছিল নির্মানাধীন মিনার, সেই মিনারই এখন নির্মিত হয়েছে জেলা, মহানগর, শহর, বন্দর ও গ্রামে-গঞ্জে। কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার সহযোগীতা না পেলেও নিজেদের অর্থায়নেই কোমলমতি ছাত্র/ছাত্রীরা নিজ দ্বায়িত্বে কায়িক পরিশ্রমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিত্তি স্থাপনের সূচনা করে ছিল শহীদ মিনারের। ১৯৫৩ ইং সাল থেকে বাঙ্গালী জাতি শ্রদ্ধার সাথে প্রতি বৎসর পালন করা দিবস উৎযাপন এখন শুরু হয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতির শহীদ বেদীতে পুষ্প প্রদানের মাধ্যমে। প্রভাত ফেরীতে ছাত্র/ছাত্রীদের পাশাপাশি শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল স্তরের সকল পেশার মানুষের অংশগ্রহন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ অবদানের জন্য “একুশে পদক” প্রবর্তন হয়েছে; যদিও পদক প্রদানে অগ্রাধিকার পাচ্ছে রাজনৈতিক বিবেচনা, অবদানের ভিত্তিতে নহে। বাংলা একাডেমীর উদ্দেগ্যে পুরো ফেব্রুয়ারী মাস জুড়েই পালিত হয়ে আসছে অমর একুশে বই মেলা, যার উদ্বোধন পরম্পরা ভাবে করে আসছেন সরকার প্রধান। বই মেলা উপলক্ষে লেখক পাঠকদের মিলন মেলায় পরিনত হয় বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গন সহ সরোওয়াদী উদ্দ্যান। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ব বিদ্যালয় পর্যন্ত আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি ম্যাগাজিন/সরনীকা প্রকাশ প্রভৃতি ব্যাপক ভাবে পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারীকে ঘিরে সর্বত্র।

“একুশ মানে মাথা নত না করা” শ্লোকটিকে জাতি প্রতিপদ্য হিসাবে গ্রহন করেছে। তদুপরি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা “আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলতে পারি?” গানটি দেশে বিদেশে বাঙ্গালী মাত্রই প্রানে স্পন্দন জোগায়। কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে একটি জাতি লালিত পালিত হয় যা সমৃদ্ধশালী হয় এর চর্চার মাধ্যমে। যুদ্ধ বা আন্দোলন-সংগ্রাম বা অভ্যুথান বা বিপ্লবের মাধ্যমে কোন এক বা একাধিক ভূ-খন্ড নিয়ে একটি রাষ্ট্রের জন্ম বা নাম পরিবর্তন এবং পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতা লাভ করতে পারে, কিন্তু শত বৎসর বা যুগ যুগান্তর চর্চার পর প্রতিষ্ঠিত হয় একটি জাতির কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। ধর্মের প্রবক্তা আছে, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা হয় এবং যে কোন প্রতিষ্ঠানের উদ্দোক্তাকেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে স্বীকৃত দেয়া হয়। কিন্তু কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উৎপত্তি হয় কোন জনগোষ্ঠির অভ্যাসগত অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে যার কোন প্রতিষ্ঠাতা বা উদ্দ্যোক্তা বা ভূ-খন্ড ভিত্তিক সীমারেখা থাকে না। ইতিহাসবিদদের মতে বঙ্গোপসাগরে গজে উঠা একটি দ্বীপ থেকে বাংলাদেশের সৃষ্টি। এ দেশ বহুবার বিভিন্ন পন্থায় ভিনদেশীদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। পাল রাজ থেকে পলাশী এবং বৃটিশ রাজ থেকে বঙ্গভবন ১৯৭১ইং সাল পর্যন্ত ভিন ভাষা-ভাষী ভিন-দেশীরা এ ভূখন্ডকে শুধু শাসন শোষন করে নাই, বরং তাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি দিয়ে বাঙ্গালীদের ভিনদেশীদের রঙ্গে রঞ্জিত করার চেষ্টা করেছে; যদিও কোথাও কোথাও আংশিক সফল হয়েছে; যেমন কোলকাতারা উচ্চ বর্ণের বাবুরা ইংরেজী সংস্কৃতিকে অনুশীলন অনুকরন করলেও জাতি হিসাবে বাঙ্গালীর অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ভিনদেশী শাসকদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে বাঙ্গালীদের ভিতরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে বটে, কিন্তু বাঙ্গালীরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তাদের নিজ সংস্কৃতি থেকে সরে আসে নাই। তার অন্যতম প্রমান বাঙ্গালীর ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে জীবন উৎসর্গ করেছে। ভিন্নদেশী শাসকরা তাদের ভাষা ইংরেজী, ফার্সী, উর্দুকে বিভিন্ন পন্থায় রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছিল; ৭৮ বৎসর পূর্বে বৃটিশ অখন্ড ভারত থেকে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু উচ্চ আদালত, উচ্চ শিক্ষা প্রভৃতি সবকিছুতেই ইংরেজী ভাষাকে সর্বোকৃষ্ট অগ্রাধিকার দিয়ে এখন শক্ত ভাবে ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পাকিস্তান সরকারের পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর (যাদের নাম সরকারী ভাবে পাওয়া যায়) জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু দেশী/বিদেশী লেখদের মতে শহীদের সংখ্যা আরো বেশী। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এর কোন পরিসংক্ষন নাই। শহীদের সংখ্যা সহ অন্য যে কোন বিষয়েই বির্তক বা আলোচনা থাকুক না কেন ঘটনাটি ঘটে ছিল বাংলা দিন পঞ্জিকা মতে “৮ই ফাল্গুন”; অথচ প্রতিষ্ঠা পেল ইংরেজী দিন পঞ্জী মোতাবেক “২১ শে ফেব্রুয়ারী” যা পশ্চিমাদের সংস্কৃতি ও ব্যবহার্য দিন পঞ্জি বটে। প্রশ্ন হলো বাঙ্গালীরা জীবন দিলো বাংলার জন্য অথচ গুরুত্ব পেলো ইংরেজী ক্যালেন্ডারে যা মূলত বাঙ্গালীর আদি সংস্কৃতির ধারাক নহে, বরং ভিন দেশীয় সংস্কৃতি যা অনুপ্রবেশ করেছে দখল দারিত্বের মাধ্যমে; যার ইতিহাস অনেক নির্মম ও ছলনা মূলক।

১৭৫৭ সাল থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত প্রায় একশ বছর মুসলমানরা সম্পূর্ণভাবে ইংরেজ বশ্যতা স্বীকর করেনি। অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা পরোক্ষভাবে বশ্যতা স্বীকার করেন এই যুক্তিতে যে মোগল সম্রাজ্যের পরিবর্তন এবং বৃটিশদের আগমন তাদের জন্য কোন ক্ষতির কারন হবে। ইংরেজরা অনেক ধাপে ধাপে অনেক সুকৌশলে অখন্ড ভারত দখলে নেয়। তাদের কৌশল ছিল Slow Poison এর মত; তাদের প্রথম ধাপ ছিল সওদাগরী, দ্বিতীয়ত: মিশনারী, তৃতীয়ত: রণতরী, চতুর্থত: ষড়যন্ত্র ছিল বৃটিশ শাসন স্থাপনে কূটনৈতিক বৃদ্ধিমত্তা।

মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষায় পরিনত করার আন্দোলন বিরন ঘটনা। মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনেক দেশেই আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয় নাই। কারন মাতৃভাষার প্রয়োগ ও মর্যাদা রক্ষা একটি মৌলিক ও জন্মগত অধিকার। পাকিস্তান সরকার বাঙ্গালীদের সে অধিকার ক্ষুন্ন করেছে বিধায় ১৯৭১ ইং সনে এ দেশে থেকে তারা বিতারিত হয়। মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য আসাম রাজ্যে অনুরুপ একটি আন্দোলন হয়ে ছিল। ১০ অক্টোবর, ১৯৬০ আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চলিহা আসামীয়কে (আসামের আদিবাসীদের ভাষা) সরকারী ভাষা করার জন্য প্রস্তাব দেয়ার প্রতিবাদে শিলচর রেলষ্টেশনে সত্যাগ্রহীদের উপর আসামী প্যারামিলিটারী বাহিনী সাত

মিলিট ১৭ রাউন্ড গুলি ছোড়ে তাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়, তার মধ্যে কমলা ভট্টাচার্য নামে দশম শ্রেনীর এক ছাত্রী ছিল। অন্তে বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষাকে সহযোগী সরকারী ভাষা হিসাবে স্বীকৃত প্রদান করা হয়। গুলিবর্ষনের এলাকাভূক্ত রেলষ্টেশনকে জনগণ “ভাষাসৈনিক শিলচর রেলষ্টেশন” নাম করন করেছেন যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে।

আমি ইংরেজী ভাষা শিক্ষা বা এই ভাষায় পারদর্শী হওয়ার বিপক্ষে নহে, বরং পক্ষ পাতি; এজন্য যে, ইংরেজী ভাষা আর্ন্তজাতিক বাজার দখল করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দখলদার ইংরেজদের সংস্কৃতি আমি নিজের মধ্যে ধারন করার বিরোধী, যেমন বাংলা দিনপঞ্জি ৮ই ফাল্গুনের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ২১শে ফেব্রুয়ারী। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ২১শে ফেব্রুয়ারী উৎযাপিত হউক কিন্তু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৮ইং ফাল্গুনকে ভাষা শহীদ দিবস হিসাবে সম্মানিত করে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় মাতৃভাষা দিবস উৎযাপন করলে বাঙ্গালী মাত্রই প্রতিটি মানুষ আত্মতৃপ্তি লাভ করবে। আমি মনে করি বাঙ্গালীয়ত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একুশে বই মেলার নাম “ফাল্গুনী বই মেলা” নামে নামকরন করাই যুক্তি সংগত। এছাড়াও বিশেষ ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে অবদানের জন্য একুশে পদক এর পরিবর্তে “ফাল্গুনী পদক” নাম করন করা হউক। ভাষা আন্দোলনে শহীদদের সঠিক সংখ্যা নিরুপনের জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করার জন্য আমি জোর দাবী জানাচ্ছি। আমার প্রস্তাবাটি কতৃপক্ষের বিবেচনায় আসলে বাঙ্গালী কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে মূল্যায়ন করা হবে।

২১ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ৬ই মার্চ, ২০২৫ইং

লেখক: তৈমূর আলম খন্দকার
জীবন সদস্য, বাংলা একাডেমী, সাবেক সিনেটর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

মহানগর বিএনপির কমিটি হলে ভাগ্য খুলতে পারে পুরোনো ত্যাগীদের

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন অচিরেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। তবে সেটা না হলে এই কমিটিই হতে পারে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সে যাই হোক নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে ফিরতে চায় পূরোনো রাজপথের নেতাকর্মীরা, যারা ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে নিজেদের অবস্থান জানানি দিয়েছিলেন। সেইসব নেতাকর্মীরা পিছিয়ে পড়লেও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। স্থানীয়রা বেশি সম্ভাবনা দেখছেন যে কোনো সময় মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি হতে পারে। আর নতুন কমিটি হলেই জায়গা মিলতে পারে পুরোনো দিনের রাজপথের নেতাকর্মীদের পদ পদবী। এসব নেতাকর্মীদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুই তিন ডজন করে মামলা হয়েছে বিগত শেখ হাসিনার সরকার আমলে।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এবং এর আগে ১/১১ এর সময় যেসব বিএনপির নেতাকর্মীরা ২০১৮ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর রাজপথ আন্দোলনে কাপিয়েছেন সেইসব নেতাকর্মীদের ভাগ্য খুলতে পারে মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে। সব চেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রদূত মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও নাসিকের একাধিকবারের সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। অনেকে ধারণা করছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি তাকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। বিএনপির জাতীয় বর্ধিত সভায় একজন ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী হিসেবে ডাক পেয়েছেন খোরশেদ। তারপর থেকে নতুন করে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে খোরশেদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

এক সময় বন্দর থানা উপজেলা বিএনপির রাজনীতির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক ছিলেন হাজী নুরউদ্দীন আহমেদ। তিনি মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আসলেও রাজনীতিতে বেশ কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছেন। নতুন কমিটি হলে তারও ভাগ্য খুলতে পারে। প্রবীণ বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন কালু, হাসান আহমেদের মত নেতারা রাজপথ কাপিয়েছেন ২০১৮ সাল পর্যন্ত পুরোদমে। অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্তও তিনি রাজপথে ছিলেন। গোলাম মোস্তফা সাগর কেন্দ্রীয় যুবদলের রাজনীতিতে সরব থাকলেও বর্তমানে আলোচনায় আছেন মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়ে। রাজপথে তেমন একটা না থাকলেও বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা সাবেক ছাত্রদল নেতা কাজী ইফতেখার খায়ের রোমেল ও কামরুল হাসান রোমেনের সম্ভাবনা মহানগর বিএনপির কমিটিতে পদ পাওয়ার বিষয়টি।

২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপির রাজপথের সকল আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভুমিকা রেখেছেন মহানগর বিএনপি নেতা নুরুল হক চৌধুরী দিপু ও আক্তার হোসেন খোকন শাহ। দিপু চৌধুরী বিলুপ্ত নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং আক্তার হোসেন খোকন শাহ মহানগর যুবদলের শীর্ষ পদে থাকাসহ নগর বিএনপির কমিটির দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি হলে এবার ত্যাগের মুল্যায়ন পেতে পারেন এই দুই নেতাও। ২০২২ সাল পর্যন্ত রাজপথে তারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন সবার আগে সামনে থেকে।

বন্দরে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রগামী ছিলেন বিএনপি নেতা নূর মোহাম্মদ পনেছ, সেলিম মিয়া, যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম মনু, শহিদুল ইসলাম রিপনের মত ত্যাগী নেতারা। কিন্তু মহানগর বিএনপির কমিটিতে যথাযোগ্য মুল্যায়ন পাননি তারা। মহানগর যুবদলের ব্যানারে ২০০৯ সাল থেকে রাজপথে ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রামে ভুমিকা রেখেছেন যুবদল নেতা রানা মুজিব, সরকার মুজিব, রাসেল আহমেদ মনির, আল আমিন খান, মাহাবুব হাসান জুলহাস, আমির হোসেন, আলী নওশাদ তুষার, আহাম্মদ আলীর মত বহু ত্যাগী নেতারা। কিন্তু দলীয় গ্রুপিংয়ের কারনে দলে তাদের মূল্যায়ণ ঘটেনি। বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন, এসএম আসলাম, জয়নাল আবেদীনের মত রাজপথের ত্যাগী নেতাদেরও ঠাঁই মিলেনি দলের যোগ্য পদে।

এদিকে আলোচনা হচ্ছে মহানগর বিএনপির কমিটির বিলুপ্ত করে নতুন করে গঠন করতে পারে কেন্দ্রীয় বিএনপি। যদি তাই হয় তবে সেই নতুন কমিটিতে ঠাই পেতে পারে রাজপথে ত্যাগী পুরোনো নেতাকর্মীরা। যারা দলে গ্রুপিং ও বলয়ভিত্তিক রাজনীতির কারনে পিছিয়ে পড়েছেন দলের পদ পদবীর দিক দিয়ে। দলের কঠিন সময়েও এসব নেতাকর্মীরা রাজপথে নিজ নিজ বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন এবং আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও চান- যারা ২০০৯ সাল থেকে দলের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেইসব নেতাকর্মীদের দিয়েই সাজানো হোক নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি।

গ্রেপ্তার ভয়ে কর্মহীন: অভাবের তাড়নায় রূপগঞ্জে আ’লীগ কর্মীর আত্মহত্যা

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার গ্রেপ্তার ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো কর্মহীন আওয়ামীলীগ কর্মী সাইফুল ইসলাম অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবার জানিয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গত ৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার ভয়ে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন সাইফুল ইসলাম। সেখানেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

৩ মার্চ সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগবের বাজার এলাকায় আত্মহত্যা করেন সাইফুল ইসলাম (৩২)। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলার মুশুরী এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি বাগবের বাজার এলাকার শ্বশুড় বাড়িতে থাকতেন।

নিহতের স্ত্রী আকলিমা বেগম গণমাধ্যমকে জানান, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম আওয়ামীলীগ কর্মী হওয়ার কারনে পুলিশি গ্রেপ্তারের ভয় পেতো। প্রতিপক্ষ দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে অটো চালক সাইফুল গত ৫ আগষ্টের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে আত্মগোপনে যান এবং হয়ে পড়ে কর্মহীন। এরই মাঝে অভাব দেখা দিলে সংসারের হাল ধরেন স্ত্রী আকলিমা। সড়কে দিনমজুরের কাজ করতেন স্ত্রী। একদিকে পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে পলাতক থাকা অন্যদিকে দুই সন্তান আর স্ত্রীর ভরনপোষণ দিতে হিমসিমসহ নানা কষ্ট নিয়ে সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সাইফুল ইসলাম।

এদিকে রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অফিসার ইনচার্জ) লিয়াকত আলী স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, বাগবের এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে মর্মে সংবাদ পেলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আড়াইহাজারে তুচ্ছ ঘটনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দুপ্তারা ইউনিয়নের বান্টি এলাকায় বৈঠকের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মহিলাসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ১ মার্চ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায়।

এ ব্যাপারে উভয় পক্ষ থানায় পাল্টিা পাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আহতদের অনেকে আড়াইহাজার উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। বাকী কয়েকজনকে অবস্থা গুরুতর বিধায় ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

জানা গেছে, এলাকার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে দলিল লেখক ওবায়দুল এবং জমির আলীর পুত্র সোহাগ গংদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

এ ব্যাপারে ২৮ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বিকেলে স্থানীয়ভাবে বান্টি মসজিদ সংলগ্নে বৈঠক বসলে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয়। এর রেশ ধরে পরদিন শনিবার সকালে একই এলাকার হিন্দু বসবাসকারী এলাকার আখড়ার নিকট সোহাগ এবং ওবায়দুল হক পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে উভয় পক্ষের নারীসহ প্রায় ১৫ জন গুরুতর আহত হন।

আহতরা হলেন-শামীম (৩০), মোক্তার (৩৫), মাশকুর (৪৫), শিমু (২৮), রনি (৩৪), রাজা (৩৭), ওবায়দুল (৫০), সিরাজুল (৫৬), রবিউল (৩২), রাইয়ান (২৫), মোহসিন (২৯), আরিফুল ইসলাম (২০), ইমন (১৮), সিয়াম (১৭), ইকবাল হাসান (২৬)। এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ