সেলিম সরকারের অব্যাহতি প্রত্যাহার করলো সোনারগাঁ বিএনপি: ঝুঁলে আছে জেলা বিএনপির ঘোষণা

সান নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী সেলিম সরকারের অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি। তবে অব্যাহতি প্রত্যাহারপত্রে স্ব পদে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি বহালের ঘোষণা করলেও একইভাবে জেলা বিএনপি থেকে অব্যাহতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসেনি এখনো।

৭ ডিসেম্বর রবিবার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হাজী সেলিম সরকারকে অব্যাহতি প্রত্যাহার করে স্বপদে বহালের ঘোষণা দেন।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর সাদিপুর ইউনিয়নে নিজে লিজ নেয়া রেলওয়ের জমি নিয়ে মারামারির ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী সেলিম সরকার।

ওই সময় এক সংক্রান্ত একটি ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশিত হয় এবং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বিএনপি নেতা সেলিম সরকারকে প্রকাশ্যে হাতাহাতি মারামারি করতে দেখা গেছে ওই ভিডিও চিত্রে। তবে শেষতক দুই পক্ষের হামলায় সেলিম সরকার নিজেও আহত হয়েছেন। তারও হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল।

এ ঘটনা নিয়ে আতিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে সেলিম সরকারের শাস্তির দাবি করেন এবং উপজেলা বিএনপির কাছে অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম সরকারকে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর সেলিম সরকারকে অব্যাহতির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উপজেলা বিএনপি জানায় যে, গত ২২ আগস্ট সেলিম সরকারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে ২৫ আগস্ট দলীয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমানিত হওয়ার কারনে সেলিম সরকারকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

তবে ওই ঘটনার বিষয়ে বিএনপি নেতা সেলিম ওসমারও সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানিয়েছেন, ওই জমিটি তিনি রেলওয়ে থেকে লিজ নিয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু জোরপূর্বক আতিকুর রহমান গং তার কাছ থেকে জমিটি দখলে নেয়। বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে একাধিকবার জেল খেটেছেন সেলিম সরকার। ৫ আগস্টের পূর্বেও তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জেলে ছিলেন। জামিনে বের হয়েই তিনি ওই জমি দখলের বিষয়ে সমালোচনায় পড়ে যান।

ওই সময় একই অভিযোগে ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন সেলিম সরকারকে বিএনপির সকল পদ থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন।

তবে বিএনপির সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী যেখানে জেলার সর্বোচ্চ কমিটি জেলা বিএনপি অব্যাহতি দেয় সেখানে উপজেলা বিএনপি বহাল করার এখতিয়ার রাখেনা। সুতরাং জেলা বিএনপি তাকে সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ায় জেলা বিএনপি অব্যাহতি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাকে স্বপদে বহালের সাংগঠনিক নিয়মে বৈধতা নাই।