মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ে আওয়ামীলীগ নেতা মান্নানকে অবরুদ্ধ!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি পদের নির্বাচন নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডাসহ চরম হট্রগোলের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন সভাপতি প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা এমএ মান্নান। তবে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বার বার স্কুলের সভাপতি হওয়ার পরিকল্পনা করায় বিক্ষুব্ধ জনতা ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ মান্নানের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

এছাড়া স্কুলের শিক্ষার মান নষ্ট করাসহ নানা অভিযোগ থাকায় মান্নানের পরিবর্তে অন্য একজনকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নেয় এলাকাবাসী। আর মান্নান স্কুলে প্রবেশ করার পর এলাকার যুব সমাজ তাকে গালমন্দ করা সহ বার বার আক্রমনের জন্য তেড়ে যান। পরে মান্নানকে স্কুলের ভিতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ৬জন প্রার্থীর মধ্যে পরিকল্পনা করে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ মান্নান দুইজন প্রার্থীকে বসিয়ে দিয়ে ৪জনকে সিলিকেশনে নির্বাচিত করা হয়। তার কারণ মান্নান পূনরায় সভাপতি হওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা করা হয়।

এর আগে মান্নান বলেছিলেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের কেউ সভাপতি হতে চাইলে মান্নান সভাপতি হবে না। এতে করে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য কাজি আবুল কাশেম সভাপতি হওয়ার জন্য স্কুলে প্রস্তাব দেয়া হয়। রোববার আবুল কাশেমকে সভাপতি করার ঘোষনা করার কথা ছিল। কিন্তু এমএ মান্নান স্কুলে এসে সভাপতির প্রার্থীতা ঘোষণা দেন। এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং মান্নানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য কাজি আবুল কাশেমের লোকজন সহ এলাকাবাসী। একপর্যায়ে মান্নানের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরে মান্নানকে গালমন্দ করা সহ স্কুল হতে বের হওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু মান্নান স্কুল হতে বের না হয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের রুমে অবস্থান করেন। এসময় এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সংবাদ পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

সভাপতি প্রার্থী এমএ মান্নান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী রোববার সভাপতি পদে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও একটি গ্রুপ প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন ছাড়াই সভাপতি হওয়ার জন্য বিশৃখলা সৃষ্টি করেছে। একের অধিক প্রার্থী থাকলে নির্বাচন হবে এটাই নিয়ম। আমিও সভাপতি প্রার্থী। কিন্তু নিয়মকে তোয়াক্কা না করে নির্বাচনের দিন স্কুলে বিশৃখলা সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে কারা বিশৃংখলা সৃষ্টি করেছে নাম প্রকাশ করেন নাই তিনি।

অপর সভাপতি প্রার্থী কাজী আবুল কাশেম বলেন, আমি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের একজন সদস্য। সেই সুবাধে এলাকাবাসীর দাবির পেক্ষিতে স্কুলের শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষে সভাপতি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এরআগে এমএ মান্নান আমাকে বলেছিল আপনি সভাপতি হতে চাইলে আমি সভাপতি প্রার্থী হবো না। রোববার সভাপতি হিসাবে আমার নাম ঘোষণা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকালে মান্নান তার লোকজন নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে সভাপতি প্রার্থীতার ঘোষণা দেয়। এতে করে এলাকাবাসী মান্নানের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং স্কুলে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সভাপতির নাম ঘোষণা না দিয়ে আগামী মঙ্গলবার সভাপতি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম বলেন, স্কুলের সভাপতি হিসাবে দুই প্রার্থী স্কুলে হাজির হন এবং নির্বাচনে প্রস্তুতিও নেয়া হয়। নির্বাচনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে সদর উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার এইছ এমএ মালেক সাহেবও স্কুলে উপস্থিত ছিলেন। এলাকার বেশির ভাগ লোক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য কাজী আবুল কাশেমকে সভাপতি করার জন্য একমত পোষন করেন। কিন্তু সভাপতি প্রার্থী হিসাবে এমএ মান্নান সাহেব নাম ঘোষণা দেয়ার পর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনাস্থলের পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। আগামী মঙ্গলবার সভাপতি পদে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তার পরও সোমবার আবারো বসে আলোচনা করা হবে।