নারায়ণগঞ্জে ১২’শ আইনজীবীর কল্যাণে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে

সান নারায়ণগঞ্জ টুযেন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে বর্তমানে প্রায় ১২’শ আইনজীবী রয়েছেন। হাজারের অধিক এই আইনজীবীদের কল্যাণে তাদের স্বপ্ন চলছে বাস্তবায়নের পথে। বিরাট এক কাজ হাতে নিয়েছেন আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া। অনেক শঙ্কা নানা আলোচনা গুঞ্জন পক্ষে বিপক্ষে নানা মতামত ষড়যন্ত্র বাধা পেরিয়ে এখন সফলতার পথে তরুণ এই দুই আইনজীবী নেতা। আইনজীবীদের কল্যাণে স্বপ্ন দেখেন এবং তা বাস্তবায়নে অটুট থাকেন সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি এটাই প্রমান করছেন। এখন শেষের পালা। বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাস্তবায়নের পথে দুই আইনজীবী নেতা। তবে সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে গত বছরে নির্বাচিত বিএনপির ১১ আইনজীবীর সহযোগীতাও কম নয়। পুরো পরিষদই ১২’শ আইনজীবীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করেছিলেন।

জানাগেছে, গত বছর নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবন ভেঙ্গে সেখানে নতুন ভবন তৈরি করার পরিকল্পনা হাতে নেয় হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও মুহাম্মদ মোহসীন মিয়ার গত বছরের পরিষদ। এর আগের বছর স্থানীয় এমপি একেএম সেলিম ওসমান এক অনুষ্ঠানে এসে আইনজীবীদের জন্য ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের কথা জানান আইন মন্ত্রীকে। ওই সময় একটি উন্নয়ন বিষয়ক আহ্বায়ক কমিটিও গঠন করা হয়।

পরবর্তীতে এমপি সেলিম ওসমান আইনজীবী সমিতির ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ্যের ৩ কোটি টাকা অনুদান ঘোষণা করেন। এর আগে আইনজীবীদের সভায় সিদ্ধান্ত হয় পুুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে সেখানে নতুন ৮তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরি করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি বিশদ পরিকল্পনাও আইনজীবীদের দেখান হাসান ফেরদৌস জুয়েল। আইনজীবীরা সেই বিলটি পাশ করেন। এর আগেই হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া স্থানীয় প্রশাসনিক সকল দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের অনুমতি গ্রহণের কাজগুলো সম্পন্ন করেন।

ওই পুুরাতন ভবন ভাঙ্গা ও নতুন ভবন তৈরি নিয়ে অনেক সিনিয়র আইনজীবীরা দ্বিমত পোষন করেছিলেন। অনেকেই সরাসরি বাধাও প্রদান করেছিলেন। ইজিএমে সরাসরি সমিতির পুরাতন ভবন ভেঙ্গে সেখানে নতুন ডিজিটাল ভবন যাতে না হয় সেজন্য নানা কৌশলি বক্তব্য দিয়ে আইনজীবীদের মাঝে বিভ্রান্ত ছড়ান। তবে সকলেই নতুন ভবন তৈরির পক্ষে মতামত দেন।

পরবর্তীতে আবারো শঙ্কা ও নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয় সেলিম ওসমান তার ঘোষিত টাকা পরিশোধ করবেন কিনা। জাতীয় নির্বাচনের আগে চলে নানা শঙ্কামুলক আলোচনা। সেলিম ওসমান এমপি না হতে পারলে টাকা দিবেন কিনা তা নিয়েও আইনজীবীদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু সেই সব শঙ্কা আলোচনা পিছনে ফেলে এখন নারায়ণগঞ্জের সকল আইনজীবীরাই বলছেন ভবন হয়ে যাবে। কারন ইতিমধ্যে সেলিম ওসমান তার ঘোষিত ৩ কোটি টাকার মধ্যে দেড় কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন। যেসব সিনিয়র আইনজীবীরা শঙ্কা দেখেছিলেন জুয়েল মোহসীন এমপি সেলিম ওসমানের কাছ থেকে টাকা আনতে পারবেন কিনা এবং তারা পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন তৈরি করতে পারবেন কিনা এখন সেই সিনিয়র আইনজীবীরাও বলছেন আসলেই জুয়েল মোহসীন বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজটি সফলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন সিনিয়র আইনজীবীদেরও বাহবাহ পেতে শুরু করেছেন দুই আইনজীবী নেতা। সেলিম ওসমানের দেড় কোটি টাকা পরিশোধের পর সকল আইনজীবীদের মধ্য থেকে নানা গুঞ্জন আলোচনা প্রচার অপপ্রচার শঙ্কা কেটে গেছে। এখণ কাজ শুরু হয়ে গেছে ১২’শ আইনজীবীর স্বপ্নের ডিজিটাল বার ভবনের কাজ।

অনেক আইনজীবীরা জুয়েল ও মোহসীন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, ভাল কাজে আলোচনা সমালোচনা থাকবে। কেউ কেউ পরামর্শের অজুহাতে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করবেন। এটাই স্বাভাবিক। যেমন আইনজীবীদের কল্যাণকর বেনাভোলেন্ড ফান্ড তৈরির সময় জুয়েলকে চরমভাবে বাধাগ্রস্থ করা হয়েছিল। কিন্তু যখন সকল বাধা পেরিয়ে ফান্ডটি তৈরি করা হলো এবং নিয়ম মাফিক বাস্তবায়ন হচ্ছে তখন সকল আইনজীবীদের কাছে হাসান ফেরদৌস জুয়েল প্রসংশার পাচ্ছেন। তবে সকল আইনজীবীই চায় আইনজীবীদের উন্নয়ন। কাজ শুরুর আগে নানা গুঞ্জন শঙ্কা তৈরি হবে এটাই স্বাভাবিক।

আইনজীবীরা আরও বলছেন, হাসান ফেরদৌস জুয়েল প্রতিটি কাজ চ্যালেঞ্জ নিয়েই বাস্তবায়ন করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি যতগুলো কাজ হাতে নিয়েছেন সবগুলো কাজেই বাধা সৃষ্টি হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের পর সকলের প্রসংশা পেয়েছেন। যারা বাধাগ্রস্থ করেছেন তারাও প্রসংশা করেন হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সৃষ্টিশীলতা ও নতুন নতুন উন্নয়নমুলক কাজের উদ্ভাবনী দেখে। আইনজীবী সমিতিতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেন হাসান ফেরদৌস জুয়েল। বারকে ওয়াইফাই জোন করেন তিনি। আইনজীবীদের ডাইরেক্টরী তৈরি করেন। সকল আইনজীবীদের ছবি নিয়ে তৈরি করা হয়। সমিতির ওয়েবসাইটটি তিনি করেন যেখানে সকল আইনজীবীদের তথ্য দেয়া রয়েছে। একজন বিচারপ্রার্থী যে কোন সময় তার আইনজীবীকে সহজে তথ্য কেন্দ্র থেকে খুজে পান।

এদিকে ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার মঙ্গলবার থেকে বার ভবন তৈরিতে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে হয়েছে। তবে কয়েক মাস আগেই সমিতির পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এদিন পুরাতন ভবনের জমির স্থলে থাকা একটি বৈদ্যুতিক ট্রেন্সফরামার ও তিনটি বৈদ্যুতিক খুটি তুলে ফেলা হয়েছে। ভবনের জন্য পাইলিং করার যাবতীয় কাজ এখন শুরুর পথে। গত ২৪ জানুয়ারি হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও মুহাম্মদ মোহসীন মিয়ার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ প্যানেল থেকে সমিতির নির্বাচনে ১৬ জন প্রার্থী জয়ী হন এবং বিএনপি প্যানেল থেকে শুধুমাত্র একজন কার্যকরী সদস্য পদে জয়ী হন।