রিয়াদ চৌধুরী গ্রেপ্তার: নেতাকর্মীরা বলছেন ‌‌’গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার!’

ডেস্ক রিপোর্ট

‌‌’রিয়াদ চৌধুরী বহিষ্কার ও বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার’ এমন শিরোনামে গত দুদিন যাবত একটি সংবাদ ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে শীর্ষ খবরে পরিনত হয়েছে। তা হচ্ছে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর বহিষ্কার এবং পালাতে গিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার! বিষয়টি পরিকল্পিত গভীর ষড়যন্ত্র বলে আক্ষায়িত করেছেন ফতুল্লা বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। একটি বিষয় লক্ষ্য করলে একটি প্রশ্ন আসে? বহিষ্কার এর সাথে পালানোর কি সম্পর্ক? বহিস্কৃত হলে পালাতে হবে কেন?

আসলে পরিকল্পনাকারী খুব বুদ্ধিমত্মা ও চতুরতার সাথে ঘটনাটি সাজিয়েছে। বর্তমান সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পরে বিষয়টি মানুষের ভিতর বেশ অনেকগুলো ঘটনার কারনে মাইন্ডসেট-আপ হয়ে আছে।

রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ঠান্ডা এবং শাসনালী সংক্রান্ত অসুস্থতার কারনে দীর্ঘদিন ভারতে চিকিৎসা নিয়ে আসছেন। বর্তমানে ভারতে ভিসা জটিলতার কারণে একমাস পূর্বেই তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা থাইল্যান্ড যাওয়ার জন্য ভিসা করেন এবং এক সপ্তাহ আগে টিকেটের বুকিং দেন। যেহেতু পরিকল্পনাকারী মহল আগে থেকে রিয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ দিয়ে আসছিল। আর কথিত এক অডিও রেকর্ডকে পুঁজি করে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের মিশন বাস্তবায়নেও সফল হয়ে যায়।

সূত্রমতে, ৫-ই আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই ফতুল্লার এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে নির্যাতিত বিএনপির নেতা-কর্মীরা কম বেশি আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করতে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন। পরবর্তীতে বিএনপির হাইকমান্ডের কঠোর বার্তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্ত এবং সচেতন ভূমিকা পালন করে আসছেন।

আর যে অডিও ক্লীপকে ঘিরে যে লংকা কান্ড ঘটেছে এ বিষয়ে ভিকটিম নিজেই বলেছেন, এটা তাদের পারিবারিক বিষয়। ভিকটিম আজাদ ডাইং এর মালিক রিয়াদ চৌধুরীর সম্পর্কে খালু হন। আর অডিও রকর্ডের কোথাও চাঁদা দাবির কথা উল্লেখ করা হয়নি। আজাদের সাথে রিয়াদ চৌধুরীর পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। একটা সময় আজাদ ডাইংয়ের মালিক সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে রিয়াদ চৌধুরীর সাথে শত্রুতা পোষন করে আসছিল। তারই ফলশ্রুতিতে ৫-ই আগস্টের পরে রিয়াদের এই উত্তেজিত কথোপকথন।

বিশেষ করে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে দীর্ঘ একশত বছর বা তারো বেশি সময়ের রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ব্যতিত কোনো লিডারশীপ ফতুল্লায় গড়ে উঠতে পারেনি। ওসমান পরিবার ও তাদের দোসররা বিশেষ একটি মহল ফতুল্লায় ভালো জনপ্রিয় প্রতিবাদী নেতৃত্ব গড়ে উঠুক তা কখনো চায়নি এবং তৈরি হতে দেয়নি। ৯০ এর দশকের পর থেকে ফতুল্লায় যে কয়েকজন জনপ্রিয় বিএনপির নেতা তৈরী হয়েছিল তাদের মধ্যে অনেকে নিষ্ক্রিয় কেউ বা পরিকল্পনাকারীদের অনুসারী। ৫ই আগস্টের আগে এবং পরে একমাত্র রিয়াদ মো. চৌধুরী ফতুল্লায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ধরে রেখেছেন এবং ফতুল্লায় বিএনপির রাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরী করেছিলেন।

ফতুল্লাকে বিএনপির নেতৃত্বশূণ্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেই রিয়াদ চৌধুরীর মত জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে এতটা ষড়যন্ত্র। মূলত রিয়াদ চৌধুরীর মত সাহসী নেতৃত্ব ফতুল্লায় টিকে থাকুক পরিকল্পনাকারী দুষ্কৃতকারী মহল এটা চায়নি।

সেই পরিকল্পনা মোতাবেকই ষড়যন্ত্রকারীরা বেছে নিয়েছে রিয়াদ চৌধুরীর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাওয়ার দিনকে। যেমন যাওয়ার দুইদিন আগে অডিও ফাঁস তারপর থানা বিএনপির একজন নেতাকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে অনলাইনে বিভিন্ন অভিযোগ এনে বিএনপির হাই কমান্ডকে বহিষ্কারের জন্য উদ্ভুদ্ধ করা, পরিশেষে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করার ব্যবস্থা করা। আর এসব কিভাবে করা যায় তা অনেকেই বুঝতে পারেন।

রিয়াদ চৌধুরীর অনুসারীরা বলছেন, বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বহিষ্কারের সাথে পালনের কোনো সম্পর্ক নেই। রিয়াদ চৌধুরী পালাবে কেন? তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে কোনো মামলা ছিলনা, আর এই মাপের জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতারা চাঁদাবাজী হুমকি-ধমকি দেয়ার কারনে মামলা হবে, এই ভয়ে পালায় এমনটা কখনো ঘটেছে বলে মনে হয় না। সবই পরিকল্পনাকারী দুষ্কৃতকারীদের গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন অনেকে। তাই রিয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে কুলুপ এটে দিয়ে দলের হাই কমান্ড পূণরায় স্বপদে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে দলের জন্য কাজ করার সুযোগ দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা ফতুল্লাবাসীর ও বিএনপির নেতাকর্মীদের।

অন্যথায়, রিয়াদ চৌধুরীর মত এমন ত্যাগী নেতাকে মাইনাস করার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের হীনস্বার্থ হাছিলের মাধ্যমে ফতুল্লার মাটিতে বিএনপির অস্তিত্ব নসাৎ না করা পর্যন্ত শান্ত থাকবে না বলেও আশংকা করছেন দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা।