‘ফখরুল সাহেবরা লন্ডনের নির্দেশে মরণ খেলায় নেমেছেন’: শামীম ওসমান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনাই আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন জানিয়ে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের টার্গেট সরকার ফেলে দেওয়া নয়, তাদের টার্গেট শেখ হাসিনাকে ফেলে দেওয়া। ওরা শ্লোগান দেয় বাংলার মাটিতে, ৭৫এর হাতিয়ার গর্জে উঠে আরেক বার। কারণ শেখ হাসিনা এদেশের আগামী প্রজন্মের সম্পদ, আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত। তাই ফখরুল সাহেবরা লন্ডনের নির্দেশে মরণ খেলায় নেমেছেন। আপনারা খেলবেন আমাদের সাথে। কবে খেলবেন বলেন, আমরাও খেলতে চাই।

শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জের ২নং রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে একজন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা খেলবেন ধ্বংসের পক্ষে, আমরা খেলবো ধ্বংসের বিপক্ষে। আপনারা খেলবেন সাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে, আমরা খেলবো অসাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে।

স্বাধীনতা বিরাধী, জঙ্গীবাদ ও দেশ ধ্বংসের প্রতিবাদে আয়োজিত ‘জেগেছে নারায়ণগঞ্জ, জাগবে বাংলাদেশ’ শিরোনামে আয়োজিত ঐ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন শীল। এর আগে দুপুর ২টা থেকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে যোগ দেন। প্রায় দেড় লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগমে পুরো জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

সমাবেশে শামীম ওসমান বিএনপি-জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, লন্ডন থেকে নির্দেশ আসছে আর সেই নির্দেশে আপনারা বাংলাদেশে বসে লাফাচ্ছেন। লাফানোর আগে চিন্তা করেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়েছেন। লন্ডন থেকে যিনি হুকুম দিচ্ছেন ছেলে হয়ে তো আসলেন না বাংলাদেশে। বুকে কলজে নাই নাকি সাহস নাই। আপনি লন্ডনে আরামে থাকেন নিজের ছেলের বউ তো বড় নামকরা ডাক্তার। শাশুড়ি তো মায়ের মতই। তিনিও তো আসতে পারতেন, আসলেন না। তাদের একজন মেয়েও আছে। দাদীকে দেখতে তো একবারও আসলেন না। যারা তার কথায় নাচছেন তারা কি ভেবেছেন যারা মায়ের জন্য আসে না আপনি বিপদে পড়লে সে কি আপনার জন্য আসবে? শামীম ওসমান বলেন, আমাদের রাজনীতি করার কথা ছিল না বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে।

 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আর ১৫ বছর পেলে বাংলাদেশ জাপানের মত উন্নত দেশ থাকতো। আপনারা আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ করেন এটা বলব না। আমি বলব শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের স্বপ্ন না। শেখ হাসিনা আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। গত ১৬ আগস্ট জাতির জনকের কন্যা বলেছেন চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আরেকটি পঁচাত্তরের একুশে আগস্টের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হচ্ছে। জাতির পিতার কন্যাকে বলতে চাই হতে পারেন আপনি নীলকন্ঠী। চেষ্টা করেছি আপনার মত হওয়ার। খোকন সাহাকে নাকি ন্যাংটো করে ঘোরাবে। বলেন, তার আগে চিন্তা করবেন। রাজনীতিতে এই ভাষা চলে না। আপনারা ভাবছেন আপনারা এ ভাষায় কথা বললে আমরা আপনাদের আঘাত করব। আমরা তা করব না। আমাদের ভুল থাকলে ভুল ধরিয়ে দেন। আপনারা তা করছেন না।

শামীম ওসমান এসময় রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান দেশে আসলেন। ২২টি সংগঠন গেল, গিয়ে বলল র‌্যাব এটা করেছে সেনাবাহিনী এটা করেছে। এটা কেন বলতে ভুলে গেলেন আমাদের দেশে ১৫ লক্ষ রোহিঙ্গা এসে বসে আছে। এ পুলিশ রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। এই র‌্যাবের ভূমিকা আপনারা অস্বীকার করতে চান? রোহিঙ্গা ইস্যুতো সবচেয়ে বড় বিষয়। বার্মায় গিয়ে কেন বলেন না রোহিঙ্গা ফেরত নাও নয়ত স্যাংশন দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি জানি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। প্রথমে রোহিঙ্গা সমস্যা এলো। তারপর এলো কোভিড। অনেক আতেল সুশীলরা বলেছিলেন টিকা পাবেনা, ১০ লাখ মানুষ মরবে। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাই টিকা পেয়েছে। সাউথইস্ট এশিয়ার মধ্যে প্রথম ও সারা বিশ্বে পঞ্চম হলেন শেখ হাসিনা। এরপর হলো বন্যা। মানুষের কষ্ট হচ্ছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। যেখানে যুক্তরাজ্যের জিডিপি ৩০০ বছরের ইতিহাসে কমে গেছে, সেখানে আমরা আল্লাহর রহমতে এখনও ভালো আছি।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি মামুন মাহমুদকে ঢাকায় কস্তুরি হোটেলের সামনে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। স্থানীয় জনতা তাকে পাকড়াও করে পুলিশে দিয়েছেন। সেই ছেলেটা একজন পেইড কিলার। সে বলেছে আমার এলাকারই একজন এক্স এমপির ছেলে তাকে টাকা দিয়েছিল। ধরা পড়ে গেছে নয়ত এটা নিয়ে আবারও ত্বকী হত্যার মত নাটক সাজাবে। ইতোমধ্যে টিভিতে প্রতিবেদনে অনেক কিছু প্রকাশিত হয়েছে। অনেক কিছুই বের হয়ে এসেছে।

শামীম ওসমান আরো বলেন, যারা অশুভ খেলা খেলার চেষ্টা করছেন। নারায়ণগঞ্জের মাটি আওয়ামী লীগের ঘাটি শেখা হাসিনার ঘাটি ছিল এবং থাকবে। আওয়ামী লীগে সব ভাল মানুষ না খারাপ লোকও আছে। কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদের বুজুর্গ ইমামকে আওয়ামী লীগের পদবী ব্যবহার করে কটূক্তি করেছে। আমাকে ইমামরা প্রশ্ন করেছেন কেন। আমি আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি ক্ষমা করে দিবেন। অনেকেই ক্ষমা চাইতে শেখেনি।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল প্রমুখ।

সূত্র: ইত্তেফাক