ইকবাল পারভেজ নয় ‘আমার নেতা এমপি বাবু’: হেলো সরকার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

এবার ভোল পাল্টালেন মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের জন্য ইকবাল পারভেজের পক্ষে কাজ করেছিলেন হলো সরকার। ওই সময় স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে নানা ধরনের বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি। তবে এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি নজরুল ইসলাম বাবুকেই তার নেতা হিসেবে দাবি করেছেন হেলো সরকার।

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজালাল মিয়া।

১৩ মার্চ বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও নির্বাচনের রিটার্র্নিং অফিসার সেলিম রেজার হাতে প্রত্যাহার পত্র জমা দেন শাহজালাল মিয়া। এ সময় নৌকার প্রার্থী মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুন্দর আলী ও জেলা আওয়ামী আইনজীবী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ভূঁইয়া সহ স্থানীয় শীর্ষ আওয়ামীলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজালাল মিয়ার মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনার নেতা এখন কে তখন তিনি বলেন, আড়াইহাজারে আমার নেতা নজরুল ইসলাম বাবু। আর আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের তিনটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৩১ মাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের মনোনয়ন বাছাইয়ে বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ৬ জন প্রার্থী আপিল বোর্ডের কাছে আপিল করলে ৪ জনের মনোনয়ন ফিরে পেলেও দুইজনের মনোনয়ন আপিল বোর্ড বাতিল করেছেন। গত ৬ মার্চ বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাখিলকৃত ৩৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন নির্বাচনের রির্টার্নিং অফিসার সেলিম রেজা ও মোহাম্মদ আতাউর রহমান।

যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে এনপিপি এর প্রার্থী এস আলমের মনোনয়ন পত্র যথাযথভাবে হয়নি বলে বাতিল করা হয়। সোনারগাঁয়ে চেয়ারম্যান পদে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী রহমত উল্লাহর মনোনয়ন পত্রে রিটার্ন, ট্যাক্স, জমার রশিদ, হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

আড়াইহাজারে চেয়ারম্যান পদে আজাদ খান সোহাগের মনোনয়ন পতে স্থায়ী ঠিকানা ও টিন নম্বরে গড়মিল থাকায় বাতিল করা হয়। এছাড়াও গোলাম মোহাম্মদের ছবি সত্যায়িত ছিল না এবং ৫ জন ভোটারের যাছাইয়ে সঠিক না পাওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। একইভাবে আবুল হাসেমের ক্ষেত্রেও ৫ জনের ভোটারের যাচাইয়ে সঠিক না পাওয়া তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

তবে রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজারে সকল ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবে আড়াইহাজারে নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঝর্না রহমানের নাম এসএসসি সনদপত্রে ও ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সঙ্গে মিল না থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। অন্যদিকে সোনারগাঁয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনির হোসেন জামিনদার হিসেবে ঋণখেলাপী থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। দাখিলকৃত মনোনয়ন পত্র সঠিক না থাকায় শাহজালাল মিয়ার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। ২’শ ৫০ সমর্থনের তথ্য যথাযোগ্য না হওয়ায় শেখ ফরিদের মনোনয়ন বাতিল করা হয় এবং ঋণখেলাপী থাকায় নেকবর হোসেন নাহিদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

তবে বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে আপিল করেছিলেন সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজালাল মিয়া, মনির হোসেন, নেকবর হোসেন নাহিদ, রূপগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী এস আলম, আড়াইহাজার উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী আজাদ খান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঝর্ণা রহমান। এদের মধ্যে আপিল বোর্ড আজাদ খান ও নেকবর হোসেন নাহিদের মনোনয়ন বাতিল করে বাকিদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থীর মধ্যে তিন জনের মনোনয়ন বাতিল করেছেন আড়াইহাজারের রিটার্নিং অফিসার ও নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা। ৬ বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে একক প্রার্থী হিসেবে নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঝর্না রহমানের প্রার্থীতাও বাতিল করেছিল রিটানির্ং অফিসার।

এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজালাল মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন মোল্লার প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয় চেয়ারম্যান প্রার্থী আজাদ খান সোহাগ, গোলাম মোহাম্মদ ও আবুল হাসেমের মনোনয়ন পত্র। ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রফিকুল ইসলামের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।