চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা: রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার ৭, প্রতারিত ৬০জন ভিকটিম উদ্ধার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর কদমতলী থেকে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-১১ এর একটি টিম ৬০ জন প্রতারণার শিকার ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধায় র‌্যাব-১১ এর কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিএমপি ঢাকার কদমতলী থানাধীন ধনিয়া এলাকায় ইভারওয়ে সিকিউরিটি প্রাইভেট লিঃ নামের একটি অফিস কক্ষে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অনলাইনে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রদানের নামে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৭ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আসামী মোঃ মোসলেম উদ্দিন ওরফে রানা (৩০), মোঃ ইসমাইল (৩১), মোঃ জালাল উদ্দিন (৫০), মোঃ শরিফ হোসেন (২০), শবনম আক্তার (৩২), সুমাইয়া আক্তার রিভা (১৮) ও বিথী আক্তার (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃতদের নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার ১টি, মোবাইল ১টি, অফিসের সীল ৫টি, চাকুরীর আবেদনপত্র ২০টি, বিপুল পরিমাণ ভূয়া চাকুরীর বিজ্ঞাপন, ভূক্তভোগীদের নিকট হতে অর্থ আদায়ের রশিদ, চাকুরী প্রার্থীদের নিবন্ধন ফরম ও নগদ অর্থ প্রভৃতি জব্দ করা হয়। এ সময় চাকুরী প্রত্যাশী ৬০ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কোম্পানীর নামে পত্রিকা, লিফলেট ও অনলাইনে লোভনীয় বেতনে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তাছাড়া চাকুরীর আবেদন ফরম, প্রশিক্ষণ ও ভালো পদে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রচুর নগদ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- এই প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোসলেম উদ্দিন ওরফে রানা। সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Muslim Uddin Rana নামে ফেসবুক আইডি খুলে E.S.L. security service limited, online job bd I International Job search consultancy নামে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে বেকার যুবক যুবতীদের আকৃষ্ট করে। এই প্রতারক চক্র উক্ত কোম্পানীতে বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের জন্য ফেসবুক, অনলাইন ও লিফলেটের মাধ্যমে ভূয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রত্যেক চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আবেদন ফি বাবদ ৫’শ টাকা ও প্রশিক্ষণ বাবদ ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিতো।

কোম্পানীর অফিস এক্সিকিউটিভ অফিসার, কাষ্টমার সাপ্লাই অফিসার, কাষ্টমার রিলেশন অফিসার, মার্কেটিং ম্যানেজার, টেলি মাকেটিং অফিসার, রিক্রুটিং অফিসার প্রভৃতি পদে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের প্রলুব্ধ করতো। চাকুরী পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে ভয়-ভীতি, হুমকি এমনকি মারধরও করত।

জিজ্ঞাসাবাদে আরোও জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ইভারওয়ে সিকিউরিটি প্রাইভেট লিঃ নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছে।

বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ কর্তৃৃক অনুসন্ধান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিকেলে একটি বিশেষ আভিযানিক দল কর্তৃক ডিএমপি ঢাকার কদমতলী থানাধীন ধনিয়া এলাকায় ইভারওয়ে সিকিউরিটি
প্রাইভেট লিঃ এর অফিস কক্ষে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ৭ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।