জেলা যুবদলের কমিটি বাতিল দাবি, নতুবা হতে পারে খুনখারাপি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটি বাতিলের ওঠেছে জোরালোভাবে। কমিটি গঠনের পূর্ব থেকেই কমিটি গঠন নিয়ে গত ২৪ মে মহানগরীতে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের দুই গ্রুপের মাঝে কয়েক দফা মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিলো। সেই রেশ কাটেনি জেলা যুবদলের কমিটি গঠনের পরেও। জেলা যুবদলের কমিটি গঠনের পর যুবদলের মাঝে বিশৃঙ্খলা আরো তীব্র হয়েছে। তিনজনের কমিটি যেনো তিন টুকরো হয়ে পড়েছে। জেলা যুবদলের দুই গ্রুপের মারামারি সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা বিরোধের নেপক্ষে মুল কারিগড়ের ভুমিকায় আছেন নজরুল ইসলাম আজাদ, মাহামুদুর রহমান সুমন ও মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়া।

৯ অক্টোবর আবারো যুবদলের দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার গাড়ি ভাংচুর করার ঘটনাকে ইস্যূ করে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেককে মারধর করেছে সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির অনুগামী নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটি বাতিল দাবি করেছেন রাজপথের তৃণমুল নেতাকর্মীরা। নতুবা যুবদলের কমিটির নেতৃত্বে থাকা নেতাদের বিরোধের জের ধরে নিজেদের মধ্যেই খুনখারাপির মত ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন তৃণমুল নেতাকর্মীরা।

জানাগেছে, গত ২৯ আগস্ট সাদেকুর রহমান সাদেককে আহ্বায়ক, মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব ও খাইরুল ইসলাম সজীবকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। কমিটি ঘোষণার তিন সদস্য একসাথে হয়ে কোনো কর্মসূচি পালন করেননি। তাদের নানা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে নানা ধরণের খবর বেরিয়েছে। চরম এক বিশৃঙ্খল সংগঠনে পরিনত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ‍যুবদল।

নেতাকর্মীরা জানান, সাদেকুর রহমান সাদেক কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ অনুগামী, মশিউর রহমান রনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়ার অনুগামী এবং খাইরুল ইসলাম সজীব বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানের পুত্র। মুলত রনি চেয়েছিলেন দিপু ভুঁইয়ার কর্মী আমিনুল ইসলাম প্রিন্সকে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব করে নিজে আহ্বায়ক হতে। কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি। সাদেক ও সজীব চেয়েছিলেন তাদের দুজনের নেতৃত্বেই জেলা যুবদলের কমিটি। যে কারনে তিনজনের মাঝেই কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যার ফলে কমিটি গঠনের পর থেকে জেলা যুবদলের মাঝে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।

তবে কমিটি গঠনের পূর্ব থেকেই কমিটি গঠন নিয়ে আজাদ ও সুমন অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিলো। গত ২৪ মে মহানগরীতে এক পদযাত্রা কর্মসূচি আজাদ ও সুমনের ব্যানারের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে তাদের অনুগামীদের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন সুমন ও দিপু ভুইয়ার অনুগামী রনিও লাঞ্ছিত হোন এবং আজাদ অনুগামী রফিকুল ইসলাম রফিককে রাস্তায় ফেলে বেদম পিটুনি দেয়া হয়। রনি অনুগামী বেশকজনও রক্তাক্ত জখম হোন।

এদিকে কমিটি গঠনের পর জেলা যুবদলের নেতাকর্মীদের মাঝে নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে উস্কানী ও উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিলো। সেই সের ধরেই গত ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সহ একদফা দাবি আদায় ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে নজরুল ইসলাম আজাদ ও মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী যুবদলের নেতাকর্মীদের মাঝে মারামারির ঘ্টনা ঘটে।

সেদিন সমাবেশ চলাকালীন সময়ে রাস্তার অদূরে রাখা মাহমুদুর রহমান সুমনের গাড়ি ভাংচুর চালায় আজাদ অনুগামী নেতাকর্মীরা। মুলত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটায়। এর পেছনে আজাদের নির্দেশ থাকতে পারে বলেও অনেকের ধারণা। কারন এই ঘটনার রেস ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বিএনপির ৪৮জন নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। যে কারনে ওই গাড়ি ভাংচুর করার ঘটনা আরো বেশি রহস্যভূত হয়েছে। কারন এই ঘটনা সরকারকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার।

এখানে উল্লেখ্যযে, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনের আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে একটি বেসরকারি টিভিতে টকশোতে যান সুমন। ওই টকশোতে এমপি বাবু জানান, সুমনের বিরুদ্ধে একটি মাত্র মামলা হয়। সুমনের বিরুদ্ধে মামলাটি হওয়ার কারনে এমপি বাবুকে ফোন করেছিলেন সুমন। নেতাকর্মীদের দাবি- বাবুর সঙ্গে সুমনের আতাতের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। যে কারনে ওইদিন আজাদ অনুগামীরা সুমনকে আওয়ামীলীগের দালাল আখ্যায়িত করে তার গাড়ি ভাংচুর চালায়।