বিএনপির গঠনতন্ত্রকে তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলী!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের বিএনপির শীর্ষ নেতারাই দলটির গঠনতন্ত্র মানছেন না। যেখানে অমান্য হচ্ছে গঠনতন্ত্র। সেখানে থাকছে না দলটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াও। অথচ তারাই গণতন্ত্রের মুক্তির শ্লোগানে বাতাস ভারি করছেন। বিএনপির গত সম্মেলনে দলটির সংবিধানে পরিবর্তন এনে ‘এক নেতার এক পদ’ বাস্তবায়নে আনা হয়। যেখানে কোন নেতা দুটি পদে তখনি থাকতে পারবেন যদি সেটা দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চান। নতুবা কারোই দুটি কিংবা তার বেশি পদে বহাল থাকার সুযোগ নেই।

কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও এই নীতিকে সম্মান করে একটি করে পদে রেখে বাকি পদগুলো থেকে সরে দাড়ান। কিন্তু পরবর্তীতে এই শ্লোগানটিই মাটিচাপা পড়ে যায়। তেমনি দশা নারায়ণগঞ্জেও। এখনকার নেতারা রীতিমত সুপারম্যান খেতাপ পেয়েছেন। একেকজনের দুই তিনটা কিংবা চারটি পদের সমারোহ রয়েছে নারায়ণগঞ্জে। কিন্তু কেউই পদ ছাড়তে চান না। গাছের আগা গোড়া দুটাই তাদের দখলে রাখার মত অবস্থা। জেলা পর্যায়ের শীর্ষ পদে থেকেও থানা কিংবা উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ পদেও রয়েছেন তারা। অর্থাৎ দলটির গঠনতন্ত্রে এক নেতার এক পদ কিন্তু নারায়ণগঞ্জে রয়েছে একেকজন নেতার বহু পদ! বিএনপিকে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একাধিক পদে বহাল রয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির যিনি একই সঙ্গে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদেও রয়েছেন। এর আগে ২০০৯ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। তার কয়েকদিনের মাথায় রূপগঞ্জের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার পর থেকে রূপগঞ্জে আর কোন কমিটি নেই। ফলে তিনিই জেলা বিএনপির সভাপতি এবং তিনিই উপজেলা বিএনপিরও সভাপতি। রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনও দীর্ঘদিন যাবত এই দায়িত্ব পালন করছেন। তাকেই করা হয়েছে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। একই সঙ্গে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব পদেও রয়েছেন। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় যেখানে সফর আলী ভূ্ইঁয়াকে আহ্বায়ক এবং মামুন মাহামুদকে সদস্য সচিব করা হয়। পরবর্তীতে সফর আলীর নিষ্ক্রিয়তায় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আলী হোসেন প্রধান যিনি কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। ফলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি এখন অভিভাবকহীন। আবার অধ্যাপক মামুন মাহামুদ জেলা বিএনপির সেক্রেটারি এবং একই সঙ্গে তিনিও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব! সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি ও পারভেজ আহমেদও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি খন্দকার আবু জাফর একই সঙ্গে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদেও বহাল রয়েছেন। তিনিও দুটি পদে বহাল রয়েছেন। সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মান্নানও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন। আবার কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য পদেও রয়েছেন।

ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস রয়েঝেন একই সঙ্গে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির পদেও। নিজ দলের কর্মকান্ডের চেয়ে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যার নিয়মিত কর্মকান্ড পালন দেখা যায়। কিন্তু তাকেই দলটি বেশি যোগ্য মনে করছে। যেখানে তিনিও দুটি শীর্ষ পদে রয়েছেন। ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা রয়েছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও রয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদেও রয়েছেন।