‘অভ্যাসগতভাবে জাকির ধর্ষক’, ১৩ বছরের কিশোরীও ছাড় পায়নি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নরসিংদী জেলার আলোচিত গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)। ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত ৯টায় নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন সাহেপ্রতাপ মোড় ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১১ এর অপারেশন অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী।

তিনি জানান, র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত ৯টায় নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন সাহেপ্রতাপ মোড়স্থ ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে নরসিংদী জেলার শিবপুর মডেল থানার বহুল আলোচিত, চাঞ্চল্যকর অপহরণ ও গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি মোঃ জাকির হোসেন(৩৭)কে গ্রেপ্তার করা হয়। জাকির হোসেন নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার জয়মঙ্গল এলাকার সিরাজ উদ্দীন ওরফে সেরু ওরফে সিরাজ মিয়ার ছেলে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে গত ২ আগস্ট নরসিংদী জেলার শিবপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী-২০০৩) ধারা ৭/৯(৩)/৩০ মোতাবেক একটি মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব আরও জানায়, ভিকটিম ১৩ বছরের একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকা। ভিকটিম তার পরিবারের সাথে নরসিংদী জেলার শিবপুর থানাধীন বিরাজনগর এলাকায় বসবাস করে আসছে। ভিকটিমের বাবা একজন অটো রিক্সাচালক। ঘটনার দিন গত ২৫ জুলাই রাতে ১১টার দিকে সময় ভিকটিম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ঘর থেকে বাহির হলে ঐ সময় পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থাকা আসামি মোঃ জাকির হোসেন, হযরত আলী, মোঃ কাজল মিয়া, মোঃ সেলিম মিয়া ও মোঃ মনির হোসেন মিলে ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে তাকে জোরপূর্বক সিএনজি যোগে শিবপুর থানার জয়মঙ্গল গ্রামে ৩নং আসামি কাজল মিয়ার নির্জন বাড়ীতে নিয়ে যায়।

সেখানে নিয়ে জাকির, হযরত, কাজল, সেলিম ও মনির মিলে ভিক্টিমকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর আসামিরা এ ব্যাপারে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভিক্টিমকে হুমকি দিয়ে বিবস্ত্র, রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় গ্রেপ্তারকৃত ১নং আসামি মোঃ জাকির হোসেনের বাড়ীতে নিয়ে বাড়ীর রান্না ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে আসামিরা পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের মা-বাবা ও চাচা অভিযুক্ত জাকির হোসেনের বাড়ীর রান্নার ঘর থেকে বিবস্ত্র, রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে। লোকলজ্জার ভয়ে এবং মেয়ের ভবিষ্যতে বিবাহের কথা চিন্তা করে ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি গোপন রাখে।

কিন্তু পরবর্তীতে আসামীগণ কর্তৃক উক্ত ঘটনা লোকমুখে জানাজানি হলে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবহিত করে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাটি মীমাংসার আশ¡াস দিয়ে বেশ কয়েকদিন কালক্ষেপন করে।

অন্যদিকে আসামিরা ভিকটিমের পরিবারকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান অপারগতা প্রকাশ করায় ভিকটিমের পিতা শিবপুর থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করে।

র‌্যাব আরও জানায়, বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর অপ্রাপ্তবয়স্ক বালিকা অপহরণ ও গণধর্ষণ ঘটনার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, জড়িত আসামিদের সনাক্তকরণ ও তাদের গতিবিধি গোয়েন্দা নজরদারী করা সহ উক্ত ঘটনার মূলহোতা মোঃ জাকির হোসেন ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। বেশ কয়েকটি স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার পর গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নরসিংদী জেলার নরসিংদী সদর মডেল থানাধীন সাহে প্রতাপ মোড়স্থ ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর অপহরণ ও গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি মোঃ জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি জাকির অভ্যাসগতভাবে একজন ধর্ষক বলে জানা গেলেও তার ভয়ে অনেকেই আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পায়নি।