ফতুল্লায় সমিতির ১০ কোটি টাকা আত্মসাত: অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় ‘টার্নিং পয়েন্ট’ নামে বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্যদের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাত করে প্রতারক হাসেম পালিয়ে মালেয়শিয়া যাওয়ার পর আবার ফিরে এসেও টাকা পরিশোধ না করে এলাকায় ফিরে আসায় গ্রাহকদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। শত শত নারী-পুরুষ গ্রাহকরা একত্রিত হয়ে প্রতারক হাসেমের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করে। আর ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এলাকায় ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাহকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে।

১৯ জুলাই শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের পাশে ফতুল্লার কাশিপুর হাজীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে সমিতির সদস্যদের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাত করে বিদেশ চলে যাওয়ার পর প্রতারক হাসেমের শশুর বাড়ির লোকজন গ্রাহকদের টাকা প্ররিশোধ করার আশ^াস দিলেও কাউকে কোন টাকা না দিয়ে গ্রাহকদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছিল। আর প্রতারক গত এক মাস আগে বিদেশ হতে দেশে আসার পর কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর কিছুদিন আগে নিজ বাড়িতে বসবাস শুরু করে। আর গ্রাহকরা যাতে তার বাড়িতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাড়ির সামনে জুতা টানিয়ে রাখে প্রতারক হাসেম। এ নিয়ে এলাকাবাসী ফুসে উঠতে শুরু করে।

বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা জানান, ফতুল্লার কাশিপুর দেওয়ান বাড়ি এলাকার হাসেম মিয়া টার্নিং পয়েন্ট নামে বহুমুখী সমবায় সমিতি খুলে কাশিপুর এলাকার প্রায় নারী-পুরুষ ৬/৭শ সদস্য তৈরি করে তাদের নানা ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এলাকার নিরীহ লোকের টাকা দিয়ে প্রতারক হাসেম এলাকায় জমজমাটভাবে ব্যবসা করে কোটি টাকা উপার্জন করেছিল। নিরীহ গ্রাহকরা যখন তাদের টাকা চায় তখন প্রতারক হাসেম সহ তার শশুর ও তার বাড়ির লোকজন নানাভাবে তালবাহানা করতে থাকে।

এক পর্যায়ে গত এক বছর আগে প্রতারক হাসেম মানুষের টাকা হাতিয়ে মালয়েশিয়া চলে যায়। ঐ সময় প্রতারক হাসেমের শ্বশুর নান্নু দেওয়ান, স্ত্রী চায়না, শ্যালক ওমর দেওয়ান, রহিম দেওয়ান, ছেলে ইমন রেজাকে মারধরের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঐ সময়ে তারা টাকা পরিশোধ করার আশ্বাস দেয়। কিন্তু আশ্বাস দেয়া হলেও এখনো টাকা দেয়া হয়নি। আর প্রতারক হাসেম দেশে আসার পর বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার কারনে সকল গ্রাহকরা একত্রিত হয়ে প্রতারক হাসেমের বাড়ি ঘেরাও করেছে।

তারা আরও জানান, যারা টাকা পাবে সবাই এলাকার নিরীহ মানুষ। এই নিরীহ লোকদের কষ্টের টাকাগুলো আত্মসাত করেছে প্রতারক হাসেম। আর হাসেম যদি নিরীহ মানুষের টাকা পরিশোধ না করে তাহলে হাসেমসহ তার পরিবারের লোকদের রক্ত বিক্রি করে টাকা আদায় করা হবে। নতুবা যেকোন সময়ে খারাপ পরিস্থিতি ঘটতে পারে।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ফজলুল হক জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার নিরীহ লোকদের বুঝিয়ে রাস্তা হতে সরিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। আর হাসেম এলাকার নিরীহ লোকদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে গিয়েছিল। গত এক মাস আগে দেশে এসে এলাকায় বসবাস শুরু করে। কিন্তু এলাকায় এসে কোন গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করেনি এবং কিভাবে টাকা পরিশোধ করবে তার কোন চিন্তা না করে এলাকায় বীরদ্বর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে করে গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়ে হাসেমের বাড়ি ঘেরাও করে। তবে হাসেম যেন স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কিভাবে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করবে তা বলে দিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমান এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।