সান নারায়ণগঞ্জ
দুই চোখ হারানো জুলাই যোদ্ধা মাহবুব আলম বলেছেন, এই অনুষ্ঠানের আমি প্রধান অতিথি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে চাই না। আমি সাধারণ একজন নাগরিক। দেশের জন্য যতটুকু দেয়ার ততটুকু দেয়ার চেস্টা করেছি। সেই ফলপ্রসূর্তে নিজের দুইটি চোখ হারিয়ে ফেলেছি। দূভার্গ্যবসতো বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিজের চোখ দিয়ে দেখতে পারি নাই। কিন্তু সেটার কোন আপসোস নাই। আমি আপনাদের সকলকে বলতে চাই, দেশকে ভালবাসুন, দেশের ক্ষমতাকে নয়, দেশের টাকাকে নয়। দেশকে ভালবাসুন তাহলে যে অরাজকতা ও যে বিশৃঙ্খলা রয়েছে সব কিছু ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমি সকলের কাছে আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া চাই। কারণ, আমরা এখন খুব দূর্ভিষহ সময় পার করছি। তাই সর্বত্র সকলের দোয়া আমাদের প্রয়োজন।
শুক্রবার ২২ আগষ্ট শহরের মিশনপাড়ায় সোনারগাঁও ভবনে বিএনপির অর্ধশতাধিক প্রয়াত এবং জুলাইয়ে নিহতদের মাগফিরাত ও আহতদের রোগমুক্তি কামনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালের আয়োজনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দুই চোখ হারানো জুলাই যোদ্ধা মাহবুব আলম, বিশেষ অতিথি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহম্মেদ, ক্রিড়া সংগঠন জাহাঙ্গীর কবির পোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সমাজ বিষয়ক সম্পাদক মনির হোসেন সরদার, রাজনীতিবীদ মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, বিএনপি নেতা ইসমাঈল মাষ্টার, সমাজ সেবক জাহিদ আহম্মেদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইফতেখার কায়েস রোমেল, বিএনপি নেতা শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন, বাগে জান্নাত মসজিদ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেছেন, বিএনপি ও সমমনা প্রয়াত অভিভাবকদের নিয়ে আমরা এই দোয়া ও মিলাদের আয়োজন। আজকে আমার প্রধান অতিথি রয়েছেন জুলাইয়ের বীর যোদ্ধা মাহবুব আলম। তিনি এখানে উপস্থিত হয়ে আমাদের আয়োজনকে সফল করেছেন। এছাড়া ২৪ এর জুলাইয়ের আহত রোগমুক্তি ও যারা নিহত হয়ে তাদের মাগফেরাত কামনা করা হবে। বিএনপি অনেকে সাথে বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, তারা আজ প্রয়াত হয়েছেন। ব্যানারে আরো প্রয়াত নাম বাদ পড়েছে, ব্যানারে বাদ পড়লেও দোয়া ও মিলাদে তাদের জন্য দোয়া করা হবে। আমার কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেই, এতদিন যা করেছি আমার অন্তর ও নৈতিক থেকে করেছি। ৯৬ সনে মজিবুরকে হত্যা করেছি, তখন আপনাদের নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। এই সল্লিমুল্লাহ সড়ক থেকে এই যে বিবি রোড টি জিয়া স্মরণী করার দাবি জানাই। বিজয়স্তম্ভটি যে কোন শহীদের নাম দেয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, আমি রাজপথে নেমেছিলাম তখন কিন্তু মাথায় কাফনের কাপড় পড়েছিলাম। আমার মা স্ত্রী কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হরতাল অবরোধে ছিলাম। তখন মা স্ত্রীকে বলেছিলাম, আমি তোমাদের মাঝে ফিরে আসতে নাও পারি। সেই লোকটি এমপি হওয়া লোক, মেয়ের হওয়া লোক, দলের কমিটি পাওয়া লোক, পদ পাওয়া লোক লোভে রাজনীতি করি নাই। আমি করেছি দেশের জন্য গণতন্ত্রের জন্য আমাদের মূলবোধকে সমন্বয় করার জন্য আমি ইনশাআল্লাহ আবারো সেভাবে করে যাবো। আমি শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক, তিনি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সৎ ও দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রপতি। আপনারা জানেন, মাওলানা ভাষানী বলে গেছেন, তার মত সৎ রাজনীতিবিদ দেখি নাই। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান কর্মী হিসেবে থাকতে চাই। কোন পদপদবী চাই না, আবারো যদি গণতন্ত্র বিপনন হয় এদেশের মূল অধিকার ক্ষুন্ন করা হয় রাজপথে পাবেন। আমার কোন মেয়র এমপি পদবী দরকার নাই। আমার শরীরের সকল রক্ত যদি মানুষের জন্য দিতে পারি, সেই প্রস্তুত রয়েছি।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির কর্ম পরিষদ সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলার সাবেক আমির মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ বলেছেন, দেশের সকল রাজনীতি দল আছে সকলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। সকল স্তরের মানুষই দেশের নির্বাচনে অংশগ্রহণ দরকার। এই দেশে কোরআনের আইন ছাড়া দেশ পরিচালনা সম্ভব না। বিগত সময়ে বিশৃঙ্খলা এখনো রয়েছে, তাই আল্লাহ আইনের মাধ্যমে সুন্দর পরিবেশ দেশ সম্ভব না। ৩৬ জুলাই আওয়ামীলীগ সরকার পতন হয়নি, এই আন্দোলন বহু আগ থেকে শুরু হয়েছে। ফ্যাসিষ্টদের সরকার পতনের মাধ্যমে এখন মানুষ স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। এটিএম কামাল যে আয়োজন আজকে করেছে, এতে প্রশংসিত হয়েছেন। বিগত আমলে দলে প্রয়াত এভাবে কেউ স্মরণ করতে দেখি নাই।