আইভীর নাম জপে বৈতরণী পাড় হতে চায় সুফিয়ান! পারেনি ভগ্নিপতি ও ভাগ্নে

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হতে চান চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী একেএম আবু সুফিয়ান। তিনি বন্দরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে গিয়ে বলছেন, মেয়র আইভীর কাছ থেকে তিনি উন্নয়ন শিখেছেন। কিন্তু মেয়র আইভীর আপন ভগ্নিপতি আবদুল কাদির ও তার ছেলে মিনহাজুল কাদির মিমন নির্বাচন করেই পরাজিত হয়েছেন। সেই হিসেবে সুফিয়ানের চেয়ে তারা বেশি উন্নয়ন কৌশল রপ্ত করার কথা। কিন্তু জনগণ তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেননি।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদির। তিনি নির্বাচনে পরাজিত হন। তিনি মেয়র আইভীর ভগ্নিপতি। আবার আব্দুল কাদিরের ছেলে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মিনহাজুল কাদির মিমন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৭নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেও পরাজিত হয়েছেন। এখন মেয়র আইভীর ঘনিষ্ট কর্মী সুফিয়ান সেই মেয়র আইভীর নাম জপে বন্দরের মানুষকে নিজের বলয়ে টানতে চাচ্ছেন। কিন্তু যেখানে মেয়র আইভীর আত্মীয়স্বজনও মেয়র আইভীর উন্নয়ন কৌশল রপ্ত করতে পারেনি সেখানে মেয়র আইভীর একজন কর্মী হিসেবে সুফিয়ান কতটুকু উন্নয়ন কৌশল রপ্ত করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারন এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চাচ্ছেন আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমএ রশিদ ও মদনপুুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সালাম। সুফিয়ানের চেয়ে এই দুই নেতার পরিচিত বন্দরেই বেশি। এখন মেয়র আইভীর জনপ্রিয়তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

গত ৩মে শুক্রবার সন্ধ্যায় বন্দর থানাধীন কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বিশ্বনবী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে ঘারমোড়া-চরঘারমোড়া এলাকাবাসীর আয়োজিত নির্বাচনী মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলা পরিষদের আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান বলেছিলেন, উন্নয়ন কিভাবে করতে হয় তা আমি মেয়র আইভীর সাথে থেকে শিখেছি। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন। আজকে আমাদের সিটি কর্পোরেশন এলাকায় উন্নয়নের বিরল দৃশ্য উপস্থাপিত হয়েছে৷ শান্তি নগরের মত একটি অঞ্চলেও আর কোন কাজ বাকি নেই। বন্দরের সিটি কর্পোরেশন এলাকার কোন দিকে তাকিয়ে কেউ বলতে পারবে না এখানে কোন কাজ বাকি আছে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো আমাদের ইউনিয়ন এলাকাগুলো এর তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে আছে। এইসব এলাকায় ভালো কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নেই৷ রাস্তাঘাটের অবস্থাও বেহাল। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা এমন কাউকেই নির্বাচিত করবেন যার মধ্যে উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। আল্লাহর নিকট আমি প্রার্থনা করি আমার মধ্যে যদি সত্যিকার অর্থে মানুষের কল্যাণের ইচ্ছা থাকে তবেই যেন তিনি আমাকে নির্বাচিত করেন। না হয় যে কোন উসিলায় তিনি আমাকে এখান থেকে সড়িয়ে নেন। ইনশাহআল্লাহ আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন তাহলে আপনাদেরকে নিয়েই বন্দরকে আমি একটি আধুনিক বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

এ ছাড়াও ২৭ এপ্রিল শনিবার বিকেলে বন্দর থানার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের জিওধরা এলাকায় বন্দর উপজেলা পরিষদের আগামী নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একটি বিতর্কিত বক্তব্য দেন সুফিয়ান। নির্বাচনে রাতের অন্ধকারে সিল মেরে নির্বাচিত হতে চাননা বলে ওইদিন মন্তব্য করেছিলেন একেএম আবু সুফিয়ান। তিনি বন্দর উপজেল পরিষদের আগামী নির্বাচনে নিজেকে চেয়ারম্যান পদে একজন সম্ভাব্য প্রার্থী দাবি করে বলেছেন, ‘রাতের অন্ধকারে সিল মেরে আমি বিজয়ী হতে চাইনা। যদি আপনারা আমাকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করেন তাহলেই আমি আপনাদের প্রতিনিধি হতে চাই।’ তবে সুফিয়ানের এমন বক্তব্য নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কি কারনে সুফিয়ান রাতের অন্ধকারে সিল মারার কথাটি বলেছেন তা নিয়ে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছে খোদ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে।