সুষ্ঠু ভোট হলেই জেলার ৫টি উপজেলা পরিষদের চেয়ার রদবদল!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী মে মাসে দুই মেয়াদে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জেলার সোনারগাঁও, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ১১ মে এবং নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ হবে ৪মে। স্থানীয়রা মনে করছেন- এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হলেই ৫টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রদবদল হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত। কারন ৫জন চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তা একেবারেই তলানিতে। যাদের মধ্যে কারো কারো জামানত টেনে আনাটাও কঠিন হয়ে যাবে যদি সুষ্ঠু ভোটাভুটি হয়।

জানাগেছে, ৭ জানুয়ারী গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়া পদত্যাগ করে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ফলে এই উপজেলায় তিনি বেশ জনপ্রিয় হলেও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে যে নির্বাচনে যাবেন না সেটা অনেকটা নিশ্চিত। কারন জাতীয় নির্বাচনে বেশ লড়াই করে হেরেছেন। ফলে তিনি নির্বাচনে না আসলে এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নতুন কেউ আসছে সেটাও প্রায় নিশ্চিত। এখানে প্রচার প্রচারণায় তারাবো পৌর মেয়র হাসিনা গাজী, তার পুত্র পাপ্পা গাজীর নাম শোনা যাচ্ছে। নতুন করে আলোচনায় সেলিম প্রধান ওরফে ডন সেলিম। গত নির্বাচনের আলোচিত প্রার্থী তাবিবুল কাদির তমালও এবার নির্বাচনী প্রচারণায় আছেন।

আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাভুটি হলে বর্তমান চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার প্রতিদ্বন্ধিতা করলেও জয়ের কোনো সম্ভাবনাই নেই। গত নির্বাচনে অনেকটা তিনি বিনা বাধায় নির্বাচিত হোন। এখানকার সাবেক চেয়ারম্য্যান শাহজালাল মিয়াকে বসিয়ে দেয়া হয়েছিলো অনেকটা জোর করেই। তিনি ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তবে এবার স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর আশীর্বাদপুষ্ঠদের মধ্যে কেউ হয়তো চেয়ারম্যান হবেন। যে কারনে চেয়ারম্যান পদে এখানে কেউ প্রচারণায় নাই।

সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হোন। তিনি এবারও নির্বাচনে যাবেন বলে ঘোষণাও দিয়েছেন। কিন্তু ভোটে তিনি থাকলে এবং সুষ্ঠু ভোটাভুটি হলে তার ভোটের কি দশা হবে সেটা সোনারগাঁওবাসীর অনুমেয়। এখানে হেভিওয়েট প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম। এ ছাড়াও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবু, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নান্নু ও আলী হায়দার প্রচারণায় থাকলেও তাদের জনপ্রিয়তা তলানিতে। এখানে সুষ্ঠু ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে সামসুল ইসলাম ভুঁইয়ার জয়ের কোনো সম্ভাবনাই দেখছেন না সোনারগাঁয়ের সাধারণ মানুষ।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়েছিলো সর্বশেষ ২০০৯ সালে। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থীতার সুযোগে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। সেই থেকে তিনি এখনো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ফতুল্লা ইউনিয়ন নিয়ে মামলা জটিলতায় এখানে নির্বাচন হচ্ছে না। ফলে আজাদ বিশ্বাসই থেকে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান। বর্তমানে উপজেলা পরিষদটি নির্বাচন উপযোগী হলেও মামলা সংক্রান্ত বিষয়টি আবারো আদালতে সচল হলে আটকে যেতে পারে নির্বাচন। যদি নির্বাচন হয় তাহলে আজাদ বিশ্বাসের দিন শেষ। তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করলেও তার জয়ের কোনো সম্ভাবনাই নাই। এখানে চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় আছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সম্পাদক শাহনিজাম ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া সাজনু।

নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ রশিদ। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিও। গত নির্বাচনে তিনিও বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হোন। এবার তিনি বিনা ভোটে জয়ের কোনো সুযোগ নাই তার। ভোটে গেলেও সুষ্ঠু ভোটে তিনি কুলিয়ে ওঠতে পারবেন না। ফলে তার চেয়ারে আসতে যাচ্ছেন অন্য কেউ। এখানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। সুষ্ঠু ভোট হলে মুকুলেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি। যদিও তিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, মাকসুদ হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন প্রধান আলোচনায় আছেন প্রার্থী হিসেবে। কিন্তু মুকুলের জনপ্রিয়তার কাছেও তারা কুলিয়ে ওঠতে পারবে না। ফলে এখানে চেয়ার বদল হতে যাচ্ছে যদি সুষ্ঠু ভোট হয়।