৪টি আসনে প্রচারণায় ভোটের মাঠ কাঁপাচ্ছে তৃণমুল বিএনপি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় ভোটের মাঠ কাঁপিয়ে তুলেছে তৃণমুল বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৪টি সংসদীয় আসনে ভোটের লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তৃণমুল বিএনপির ৪জন প্রার্থী। যেখানে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারনে জয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন তৃণমুল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তার নির্বাচনী আসন এলাকায় প্রচারণায় ভাটা পড়েছে তার মুল প্রতিদ্বন্ধি আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গাজী গোলাম দস্তগীর। বাকি তিনটি আসনেও তৃণমুল বিএনপির প্রার্থীরা ভোটের দ্বারে দ্বারে দৌড়াচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন।

জানাগেছে, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৪টি আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন তৃণমুল বিএনপির ৪জন প্রার্থী। সোনালী আঁশ প্রতীকে লড়াইয়ে নেমেছে তৃণমুল বিএনপি। নির্বাচনে তাদের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী একাধিকবার এমপি থাকায় জনগণ তাদের প্রতি নানা কারনে তীক্ত ও বিরক্ত। স্থানীয় এমপিদের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে তাদের কাছ থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচনে এবার তৃণমুল বিএনপিই হয়ে ওঠেছে প্রধান বিরোধী দল। যে কারনে জনগণ এবার নৌকা বিরোধী হিসেবে তৃণমুল বিএনপিতে বেশি আগ্রহী।

স্থানীয়রা জানান, নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমুল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। এ আসনে বর্তমান সরকারি দলের মন্ত্রী গাজীর চেয়ে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন তৈমূর আলম। বাকি তিনটি আসনেও ব্যাপক লড়াইয়ে কাজ করছেন তৃণমুল বিএনপির ৩জন প্রার্থী।

নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনে আবারো আওয়ামীলীগের নৌকার প্রতীকে ভোটের মাঠে বর্তমান এমপি, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর। এখানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন শাহজাহান ভুঁইয়া। এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থীর তালিকায় জনপ্রিয়তায় এগিয়ে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। রূপগঞ্জের মানুষ মন্ত্রী গাজী ও তার লোকজনের প্রতি চরম ক্ষুব্দ। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে শাহজাহান ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন- তিনি নৌকার বিরুদ্ধে নন, তিনি গাজীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তবে সান নারায়ণগঞ্জের কাছে ভোটারদের দাবি- নির্বাচনে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারলে সোনালী আঁশ প্রতীকেই দিবে জনগণ ভোট। এ আসনে তৃণমুল বিএনপির প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি।

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে তিনবারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু এবারো নৌকা প্রতীকে মনোনিত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধরণ সম্পাদক। হেভিওয়েট এই এমপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধিতার জন্য তৃণমুল বিএনপি থেকে প্রার্থী দেয়া হয়েছে। এ আসনে তৃনমুল বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন আবু হানিফ হৃদয়। এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন নির্বাচনী মাঠে থাকলেও প্রচার প্রচারণায় তেমন একটা নেই।

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে তৃণমুল বিএনপি প্রার্থী না দিলেও নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন এবং নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনে প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে নেমেছে তৃণমুল বিএনপি। দুটি আসনেই দুজন আইনজীবী নেতাকে সোনালী আশ প্রতীকে মনোনিত করেছে তৃণমুল বিএনপি। তারা সকাল সন্ধা ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণা চালিয়ৈ যাচ্ছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনিত হয়েছেন দেশের আলোচিত আওয়ামীলীগ নেতা এমপি একেএম শামীম ওসমান। এখানে তার সঙ্গে ভোটের মাঠে লড়াইয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন তৃনমুল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট আলী হোসেন। তিনি পুরোদমে নির্বাচনী মাঠে ভোটের লড়াইয়ের জন্য সকাল সন্ধা প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। একইভাবে শামীম ওসমানও তৃণমুল বিএনপির প্রার্থীকে দূর্বলভাবে নিচ্ছেন না। শামীম ওসমানও নিয়মিত সকাল সন্ধা ভোটের মাঠে প্রচারণায় রয়েছেন। যেখানে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন আলী হোসেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে লড়াইয়ে এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। এখানে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী দেয়া হয়নি। ফলে তৃণমুল বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গেই জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমানের লড়াই হবে। এখানে অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী ভুঁইয়াকে তৃণমুল বিএনপি মনোনিত করেছে। তিনিও পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেলিম ওসমান ভোটের মাঠে হেটে হেটে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে না যেতে পারলেও ভাসানী ভুঁইয়া সকাল সন্ধা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। সেলিম ওসমানের মাথা ব্যাথার কারনে হয়ে ওঠেছে তৃণমুল বিএনপি।