যুবদল সভাপতি খোরশেদের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা পদ বানিজ্যের অভিযোগ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আবারো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে পদ বানিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে। এবার তারই মহানগর যুবদলের কমিটির সহ-সভাপতি আহাম্মদ আলী খোরশেদের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা পদ বানিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন। এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের কমিটি গঠনের পূর্বে বর্তমান মহানগর যুবদলের সেক্রেটারি মমতাজ উদ্দীন মন্তু ৫ লাখ টাকা কমিটি বানিজ্যের অভিযোগ তুলেছিলেন। ২২ এপ্রিল সোমবার সন্ধায় বন্দরে যুবদলের এক কর্মী সভায় এমন অভিযোগ তুলেন আহাম্মদ আলী।

একই সভায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের একাংশের নেতারা। ২২ এপ্রিল সোমবার সন্ধায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দরে ২৭নং ওয়ার্ডের কুড়িপাড়া এলাকায় বন্দর যুবদলের আয়োজিত এক কর্মীসভায় এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন যুবদলের নেতারা। কর্মী সভায় মহানগর যুবদলের একাংশের নেতাকর্মীদের পক্ষে এমন ঘোষণা দেন মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান। ওই সময় নেতাকর্মীরা এমন আল্টিমেটামের পক্ষে হাত তালি দিয়ে সমর্থন জানান।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, প্রধান বক্তা হিসেবে মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, বিশেষ অতিথি হিসেবে মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি আহাম্মদ আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

যুবদল নেতা আহাম্মদ আলী তার বক্তব্যে বলেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বন্দর থানা কমিটি গঠনের সময় আমার হাত থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছিল। সেই টাকাটা ছিল ফিরোজ আহমেদের। তারপরও যুবদলের সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের নির্বাচিত হতে হয়েছিল। সে বিরোধ সৃষ্টি করে দিয়েছিল আমাদের মাঝে। এখন আর্থিক লেনদেন ছাড়া পদ পাওয়া হয়না।

এর আগে তিনি বলেন, আমার রাজনীতি শুরু শোখন ভাইয়ের মাধ্যমে। পারিবারিকভাবে আমরা বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। আজকে যারা নেতৃত্ব দিতে চায় তারা কোথা থেকে আসলো? তারা কোথায় আছে? তাদের পারিবারিক অবস্থান কি। আজকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি হয় বলেই দলের আজকে এমন অবস্থা। আজকে যারা নতুন আসছে টাকা দিলেই পদ দেয়া হচ্ছে। খোরশেদ ভাইয়ের সৃষ্টি হলো ২০০০ সালের পরে। দলের স্বাদ পরিপূর্ণ নেয়ার পরে এখন সে কমিশনার। আমরা বিরোধী দল করতে করতে এই জায়গায় আসছি। এখন তাদের কাছে কমিটি রাইখা আমরা নির্যাতিত। আমাদের মধ্যে থেকে কেউ কমিটি পেলে নির্যাতিত হতো না। সে বুঝে অর্থ আর চাটুকারিতা। আমরা আন্দোলনের সময় আমি পুলশের ভয়ে বনে জঙ্গলে থাকিম না হয় বোনের বাড়িতে কিংবা আত্মীয়র বাড়িতে। আর খোরশেদ থাকে আলিশান হোটেলে। সে রাজপথের কোন মিটিং মিছিলেই ছিল না। সব আমরাই করেছি।

একই কর্মী সভার প্রধান অতিথি মনোয়ার হোসেন শোখন তার বক্তব্যে খোরশেদের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বলেন, একবার যদি কুকুরকে ছোট বেলা থেকে মাংস খাওয়ানো শেখানো হয় তাহলে পরবর্তীতে যদি কুকুরকে ভাত দেন তাহলে কুকুর ভাত খাবে না। এখন তার অভ্যাসটা হলো মাংস খাওয়ার অভ্যাস। আমরাই ওরে ঘুষ খাওয়া, ওরে টাকা পয়সা দিয়া খাওয়াইন্না অভ্যাস করে দিছি, এখন সে ওটাই চিন্তা করে। এখন সে চিন্তা করছে সানোয়ারকে দরকার নাই, আরেকজনকে তৈরি করমু, ওই আমারে খাওয়ান দিব। কারন সানোয়ার তো আর ওরে পকেট ভরতো না। আজকে যুবদলে স্বৈরতন্ত্র করতে দিব না। যুবদল দিয়ে কাউকে বানিজ্য করতে দিব না। বানিজ্য করতে চাইলে দাতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে যুবদলের সকল কমিটি গঠন করা হবে। কোন স্বৈরতন্ত্র চলবে না। চাটুকারিতা বন্ধ করুন, চামচামি করা বন্ধ করুণ।

কর্মী সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক বোরজাহান, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সোহেল মিয়া, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সুমন প্রধান, সহ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসেন, সহ-যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদস্য রুবেল হোসেন, মাসুম সহ মহানগর যুবদলের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী। এই কর্মী সভায় বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে ভুমিকা রাখতে মহানগর যুবদলকে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে কর্মী সভায় সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা মাসুদুর রহমান, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জুয়েল রানা ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আলী নেওয়াজ।