তৈমূর ও খোরশেদের রাজনীতি পয়দা করেছি আমরা: শোখন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও তার ভাই মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে উদ্দেশ্য করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন বলেছেন, তৈমূর আলম খন্দকার ও তার ভাই খোরশেদের রাজনীতি পয়দা করেছি আমরা।

একই কর্মীসভায় মহানগর যুবদলের সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে বসতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের একাংশের নেতারা। ২২ এপ্রিল সোমবার সন্ধায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দরে ২৭নং ওয়ার্ডের কুড়িপাড়া এলাকায় বন্দর যুবদলের আয়োজিত এক কর্মীসভায় এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন যুবদলের নেতারা। কর্মী সভায় মহানগর যুবদলের একাংশের নেতাকর্মীদের পক্ষে এমন ঘোষণা দেন মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান। ওই সময় নেতাকর্মীরা এমন আল্টিমেটামের পক্ষে হাত তালি দিয়ে সমর্থন জানান।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, প্রধান বক্তা হিসেবে মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, বিশেষ অতিথি হিসেবে মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি আহাম্মদ আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনোয়ার হোসেন শোখন বলেন, আজকে তৈমূর আলম খন্দকারকে, খোরশেদ খন্দকারকে রাজনীতিতে পয়দা দিছি আমরা। হাতে গোনা দুচারজনের মধ্যে আমি একজন। খোরশেদকে দিয়ে প্রত্যেকটি কমিটি গঠনের পিছনে আমার অবদান আছে। আমি কেন্দ্রে বিরোধীতা করলে এসব কমিটি ঝুলে থাকতো। কিন্তু সব সময় বলেছি ঐক্যবদ্ধ যুবদল।

তিনি খোরশেদের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বলেন, একবার যদি কুকুরকে ছোট বেলা থেকে মাংস খাওয়ানো শেখানো হয় তাহলে পরবর্তীতে যদি কুকুরকে ভাত দেন তাহলে কুকুর ভাত খাবে না। এখন তার অভ্যাসটা হলো মাংস খাওয়ার অভ্যাস। আমরাই ওরে ঘুষ খাওয়া, ওরে টাকা পয়সা দিয়া খাওয়াইন্না অভ্যাস করে দিছি, এখন সে ওটাই চিন্তা করে। এখন সে চিন্তা করছে সানোয়ারকে দরকার নাই, আরেকজনকে তৈরি করমু, ওই আমারে খাওয়ান দিব। কারন সানোয়ার তো আর ওরে পকেট ভরতো না। আজকে যুবদলে স্বৈরতন্ত্র করতে দিব না। যুবদল দিয়ে কাউকে বানিজ্য করতে দিব না। বানিজ্য করতে চাইলে দাতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে যুবদলের সকল কমিটি গঠন করা হবে। কোন স্বৈরতন্ত্র চলবে না। চাটুকারিতা বন্ধ করুন, চামচামি করা বন্ধ করুণ।

এর আগে মনোয়ার হোসেন শোখন বলেন, এক এগারোর সময় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমাকে গোয়েন্দা সংস্থা বলেছিল বিএনপি করে কি পেয়েছো? বিএনপি ছেড়ে দেও। আমাকে বিএনপি বাদ দিতে বলেছিল। তারপরও আমি বিএনপিতে আছি। এখানে যারা আছেন সবাই আমাদের সাথে থাকবেন। আমরা কখনও আপনাদের ছেড়ে যাবো না। আগামীতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমরা সকলে মিলে কাজ করব। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলে দিয়েছেন আগামীতে মহানগর যুবদলের সকল কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করতে হবে। বন্দর থানা, উপজেলা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, সদর থানা সহ সকল ইউনিটের কমিটি সম্মেলন ছাড়া হবে না। এখন নারায়ণগঞ্জে মহানগর যুবদলে স্বৈরতন্ত্র চলবে না। এককভাবে রাতের আধারে কারো স্বাক্ষরে কমিটি হবে না। সেটার প্রমান পেয়েছেন বন্দর উপজেলা কমিটি গঠনের পর তা স্থগিত করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতৃবৃন্দ। আগামীতে সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হবে।

তিনি বলেন, আজকে আমি সেক্রেটারিকে বলেছিলাম আপনি সিদ্ধিরগঞ্জ ইজারা নিয়েছেন, বন্দর ইজারা নিয়েছেন সভাপতি। তখন সেক্রেটারি বললো তাহলে তুমি শোখন সদর থানা নিয়ে নেও। আমি বলেছি না, আমি বন্দরের পোলা। আমি নারায়ণগঞ্জে রাজনীতি করব। আমাকে অফার করা হয়েছে আমি যাইনি। আপনারাও কেউ যাবেন না।

কর্মী সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক বোরজাহান, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সোহেল মিয়া, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সুমন প্রধান, সহ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসেন, সহ-যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদস্য রুবেল হোসেন, মাসুম সহ মহানগর যুবদলের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী। এই কর্মী সভায় বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে ভুমিকা রাখতে মহানগর যুবদলকে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে কর্মী সভায় সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা মাসুদুর রহমান, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি জুয়েল রানা ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক আলী নেওয়াজ।