জেলা-মহানগর জুড়ে যাদের হাতে শামীম ওসমানের ঝান্ডা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলার রাজনীতি বাদে জেলার বাকি ৫টি থানা এলাকায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেছেন জেলার প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। একই সঙ্গে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নিয়ন্ত্রকও তিনি। এ ছাড়াও জেলার গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনগুলোর নিয়ন্ত্রণ করছেন শামীম ওসমান। প্রতিটি স্থানে শামীম ওসমানের বিশ্বস্ত নেতাদের বসানো হয়েছে, যারা শামীম ওসমানের ঝান্ডা ধরেছেন।

যদিও নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু তাদের নিজ নিজ আসন এলাকায় শামীম ওসমানের হাত বসাতে দেননি। তবে এক সময় আড়াইহাজারের ইকবাল পারভেজ, রূপগঞ্জের শাহজাহান ভুঁইয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক নিয়ন্ত্রিত হতেন শামীম ওসমানের অঙ্গুলী ইশারায়। শাহজাহান ভুঁইয়া এখন মন্ত্রী গাজীর সঙ্গে মিশে গেছেন। ইকবাল পারভেজ ও রফিকুল ইসলাম রফিকের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা দায়।

তবে ওই দুটি উপজেলা বাদে জেলার ৫টি থানা এলাকার আওয়ামীলীগের রাজনীতি এখন শামীম ওসমানের নিয়ন্ত্রণে। ২৩ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল পুনরায় নির্বাচিত হোন। এতে শামীম ওসমানের আশীর্বাদ রয়েছে সেটা নেতাকর্মীরা মনে করছেন। কারন বিগত সময়ে হাই ও বাদল শামীম ওসমানের সুবিধার্থে কাজ করেছেন। যেখানে শহীদ বাদল শামীম ওসমানের বন্ধু।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা ও সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল শামীম ওসমানের বিশ্বস্তের মধ্যে অন্যতম। চন্দন শীলকে গত ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে। দলের নৌকা প্রতীকে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। যেখানে শামীম ওসমানের কারিশমা রয়েছে। যে কারনে জেলা ও মহানগরীর রাজনীতিতে যারা শামীম ওসমান বিরোধী ছিলেন তারা এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

গত ৩ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম নির্বাচিত হোন। সামসুল ও মাসুম আগে থেকেই শামীম ওসমানের বিশ্বস্ত কর্মী। কায়সার হাসনাত এক সময় বিমুখী রাজনীতিতে থাকলেও সম্মেলনের আগে ২৭ আগস্ট শামীম ওসমানের সমাবেশে আসেন কায়সার। বর্তমানে কায়সার হাসনাতের সঙ্গে কায়সার ও তার অনুগতদের সখ্যতা সৃষ্টি হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে রয়েছেন শামীম ওসমানের দুই বিশ্বস্ত সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি। এর আগের কমিটিতেও সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমানের মত শামীম ওসমানের বিশ্বস্ত কর্মীরা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে ছিলেন।

এ ছাড়াও শামীম ওসমানের বিশ্বস্ত সাইফুল্লাহ বাদল ও এম শওকত আলী ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি পদে ইয়াসিন মিয়া, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে এমএ রশিদ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি পদে আল মামুনও শামীম ওসমানের ঝান্ডা ধরে আছেন। যার মধ্যে বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ রশিদ। মুজিবুর রহমান জেলা পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচিত হোন।