ফতুল্লায় অপহরণের অভিযোগে প্রতারক বুলু র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রতারক বুলুুকে অপহরণের অভিযোগে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১) গ্রেপ্তার করেছে। ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এর অপারেশন অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিমউদ্দীন চৌধুরী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

র‌্যাব জানায়- গত ১৩ মার্চ মোসাঃ নাজমা বেগম নামের এক মহিলা র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি অভিযোগনামা দেন যে, তার স্বামী মোঃ মাজেদ আলী গত ১০ মার্চ ৬টার পর হতে নিখোঁজ রয়েছেন। এ সংক্রান্ত তিনি ফতুল্লা থানায় একটি জিডি করেন। অভিযোগে উল্ল্যেখ করেন তারা স্বামী স্ত্রী বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশ্যে মহিউদ্দিন বুলু নামের এক আদম ব্যবসায়ীর কথায় তারা পাবনা থেকে নারায়ণগঞ্জে আসেন। বুলু তাদেরকে ফতুল্লার টাগারপাড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় রাখে।

এ ছাড়াও পাসপোর্ট, ভিসা, মেডিক্যাল ও বিভিন্ন কাজের কথা বলে বুলু তাদের কাছে থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। বুলু তাদের বিদেশ না নিয়ে নানা ছলচাতুরি করে কালক্ষেপণ করতে থাকে। গত ১০ মার্চ বিকালে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে মাজেদ আলীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে বুলু ফিরে আসলেও মাজেদ আলী আর ফিরে আসেনি। তখন থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। অন্য দিকে মহিলা তার স্বামীর জন্য কান্নাকাটি শুরু করলে বুলু কৌশলে পালিয়ে যায়।

র‌্যাব আরও জানায়- অভিযোগ প্রাপ্তির পর র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ গোয়েন্দা দল নিখোঁজ মাজেদ আলীর সন্ধান ও সন্দেহভাজন মহিউদ্দিন বুলুকে গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে । বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বশেষ গত ৮ সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন, শিবু মার্কেট এলাকা হতে মহিউদ্দিন বুলুকে আটক করা হয়।

র‌্যাব জানায়- গ্রেপ্তারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, মহিউদ্দিন বুলু পেশায় একজন আদম ব্যবসায়ী। তার বাড়ী মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন গোয়াগাছিয়া এলাকায়। সে মাজেদ আলীর কাছ থেকে পাসপোর্ট তৈরী, ভিসা, মেডিক্যাল ও ভিবিন্নি কাজের কথা বলে দুই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। বুলু টাকা আতœসাৎ করার জন্য গত ১০ মার্চ বিকেল তিনটার দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে মাজেল আলীকে বাসা থেকে মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদীতে নিয়ে যায় ও সেখানে বুলু ও তার ৩/৪ জন বন্ধুসহ আনুমানিক ৮টা পর্যন্ত অবস্থান করে।

পরবর্তীতে রাতে বুলু বাসায় ফিরে আসলেও মাজেদ আলী আর ফিরে আসেনি। তখন মহিলা তার স্বামী মাজেদ আলীর কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় বিদেশ নেওয়ার ব্যাপারে মাজেদ আলীর সাথে তার ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে মাজেদ আলী তার হাতের কনিষ্ট আঙ্গুলে কামড় দেয়। পরবর্তীতে ঐ মহিলাসহ বুলু স্থানীয় আলম মেডিক্যাল হলে ডাক্তার মোঃ খোরশেদ আলমের কাছে চিকিৎসা নেয়। বুলুর চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পরও মাজেদ আলী বাসায় না আসায় স্ত্রী নাজমা বেগম কান্নাকাটি শুরু করলে মহিউদ্দিন বুলু কৌশলে পলায়ন করে।

এরই প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত মহিউদ্দিন বুলুর ও নিখোঁজ মাজেদ আলীর মোবাইল কল লিষ্ট ও ঘটনার দিনের গতিবিধি পর্যালোচনা করে দেখা যায় ঐ দিন তারা নারায়ণগঞ্জ থেকে বিকেলে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া মেঘনা নদীর তীর এলাকায় অবস্থান করে। ধারণা করা যায় মাজেদ আলীকে গুম করার সময় তাদের ধস্তাধস্তিরর এক পর্যায়ে মাজেদ আলী মহিউদ্দিন বুলু হাতের কনিষ্ট আঙ্গুলে কামড় দেয়। আঙ্গুলের আঘাত প্রাপ্ত স্থানে ২/৩ টি সেলাই দেয়া হয়। এতে ধারণা করা হয় বুলু ও তার সহযোগীরা মিলে টাকা আত্মাসাতের উদ্দেশ্য মাজেদ আলীকে গুম করেছে। গত ৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন, শিবু মার্কেট এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অজ্ঞাত আরোও ৩/৪ জন বুলুর সহযোগীদের গ্রেপ্তাতারের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মহিউদ্দিন বুলুর বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।