হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জে ২জনের মৃৃত্যুদণ্ড, ৯জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ৪ বাল্কহেড শ্রমিককে গলাকেটে হত্যার মামলায় ২জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড ও আরও ৯জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। ২৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় প্রদান করেন।

রায়ে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত দুই আসামী হলো-তাজুল ইসলাম ও মহি ফিটার।

রায়ে শাহপরান বলগেটের মাঝি মাল্লা, নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নানকে গলা কেটে হত্যা করে বলগেট ডাকাতির অপরাধে দোষী প্রমানিত হয়। মুত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্তদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর এবং পলাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৭ আসামী উপস্থিত ছিলো।

যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামীরা হলো- চাঁন মিয়া, দুলাল মিয়া, মজিবর, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, আরিফ, জলিল, সাইফুল ইসলাম, দুলাল ও ইব্রাহিম।

আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কেএম ফজলুর রহমান জানান, ১২ আসামীর মধ্যে আদালত ২ জনকে ফাঁসি ও ৯জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একজন আসামী মামলা চলাকালীন মৃত্যুবরন করেন। এ রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্ট।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার বাদী এরসান হিম শাহপরান বলগেট এর মালিক। তিনি বিগত ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা থানায় এই মর্মে এজাহার দায়ের করেন যে, আমি এজাহারকারী। বল গেট ’শাহপরান’ এর মালিক। গত ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঘটনা ঘটে। ঐ সময় সিলেট থেকে পাথর বােঝাই করে আমার এই বলগেট টি মুন্সিগঞ্জের সিমেন্ট কারখানায় আসে। পাথর ঐ কারখানায় খালাস করে দেবার পরে বলগেটটির মেশিন নষ্ট হয়ে যায়।

বলগেট এর মেশিন ঠিক করার জন্য স্রাসামী মহী মিটার ও আসামী তাজু ফিটারকে বলগেট এর ড্রাইভার নাসির খবর দেয়। শুরা এসে বলগেটটা ঠিক করে টেস্ট করতে গিয়ে চরে তথ্য বাশীর চরে নিয়ে লাগিয়ে দেয়। ইট খােলার পাশে লাগিয়ে দেয়। আমার বলগেটে নাসির মিয়া, মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নান ছিল। বক্তাবলী চরে বলগেটটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় মথন পাই তখন আমার ঐ চার জন কর্মচারীকে পাই নাই। পরে যে মেঘনা নদীর চরে হাত পা বাধা অবস্থায় নাসির মিয়ার লাশ পাই।

মঙ্গলের লাশ ও হাত পা বাধা অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকী দুইজন ফয়সাল ও হান্নান এর লাশ পাওয়া য়ায়নি। বলগেটটা না পেয়ে আমি তখন দিনে থানায় জিডি করি। লাশ পেয়ে আমি বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের গ্রেপ্তার করেন। এর মধ্যে আসামী জলিল, লম্বা দুলাল , ইব্রাহিম, খাটো দুলাল মিয়া, মজিবর, শফিকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম ও আরিফ ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তদন্ত শেষে ১২ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জসীট দাখিল করেন। ২৬/৩/০৯ চার্জসীট গৃহিত হয়।

২১/০৪/২০১৯ সালে পরবর্তীতে মামলাটি আদালতে বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বদলী হলে বিচারক বাদী এরসাদ মিয়া, ম্যাজিষ্টেট, সুরতহাল, আইও সহ ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে এবং উপস্থাপিত কাগজপত্র প্রদর্শনী ভূক্ত করে উপরােক্ত রায় প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন আদালতের পিপি।