দিনব্যাপী নাটকীয়তার পর কাউন্সিলর কবির ও মুন্না গ্রুপের ২২ জনের জামিন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

দিনব্যাপী নানা নাটকীয়তার পর নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের ২২ নেতাকর্মী আপোষ শর্তে আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। তারা সবাই নারায়ণগঞ্জের এমপি একেএম শামীম ওসমানের বলয়ে রাজনীতি করেন। দুই গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকলীগের সেক্রেটারি ও সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন ওই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামীলীগ নেতাকবির হোসাইন।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় দক্ষিণ নলুয়া জামে মসজিদ কমিটি ও মসজিদের জমাকৃত টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে দফায় দফায় কাউন্সিলর কবির হোসাইন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এ ঘটনায় বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসাইন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা আপোষ মীমাংসার শর্তে জামিনের আবেদন করলে আদালত আসামিদের সকলকে জামিন দেন।

এর আগে রবিবার গভীর রাতে সংঘর্ষের সময় উভয় গ্রুপের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অন্যের উপর হামলা চালায়। এতে রক্তাক্ত জখম সহ অন্তত ২০/২৫ জন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষের পর কাউন্সিলর কবির হোসাইন ও কামরুল হাসান মুন্নার পক্ষে বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়। এর আগেই ঘটনাস্থল থেকে দুই গ্রুপের ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে সকাল ৮টার দিকেই আসামীদের আদালতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। দুপুর দুটায় আদালতে দুই গ্রুপের লোকজন আপোষনামা দাখিল করলে আদালতে শুনানি অনুষ্টিত হয়। শুনানি শেষে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা পর আদালত দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের আপোষ শর্তে রিমান্ড না মঞ্জুুর ও জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কামরুল হাসান মুন্নার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া যিনি আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি।

মামলা সূত্রে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ সোমবার ভোরে নিতাইগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।

স্থানীয়রা বলছেন, শহরের দক্ষিণ নলুয়া জামে মসজিদ কমিটি নিয়ে অনেকদিন থেকেই বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসাইন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল ইসলাম মুন্নার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। কামরুল হাসান মুন্না দীর্ঘ ৬ বছর ধরে একক ক্ষমতায় স্বঘোষিত সভাপতি হয়ে মসজিদের নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।

মুন্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ- মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব একাধিকবার এলাকাবাসী ও মুসল্লিদের সাথে কথা দিয়েও বুঝিয়ে দেননি মুন্না। এ নিয়ে কাউন্সিলর কবির ও মুন্নার লোকজন ফুঁসে উঠে। রবিবার রাতে মসজিদে এ নিয়ে বৈঠকও বসেন মসজিদ কমিটির লোকজন। বৈঠকে পক্ষে বিপক্ষে তর্ক সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে রাতেই এর জের ধরেই এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

কবির হোসাইনের লোকজনদের অভিযোগ- নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি একেএম সেলিম ওসমানের দেয়া অনুদানের টাকা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিলো। এমপি কত টাকা অনুদান দিয়েছেন তা এলাকাবাসীর কাছে স্পষ্ট করেননি শ্রমিকলীগ নেতা কামরুল হাসান মুন্না।