আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভাঙ্গার পেছনে ভিন্ন কারন, এমপি খোকার সম্পৃক্ততা নাই

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভাঙ্গার বিষয়ে ভিন্ন কারন বের হয়ে এসেছে। স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে ওই নামফলক ভাঙ্গার অভিযোগ তোলা হলেও এমপি খোকার অজ্ঞাতসারেই নামফলকটি ভাঙ্গা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার কোন সম্পৃক্ততার কথা জানাতে পারেনি স্থানীয়দের কেউ কিংবা ঘটনার দিনের প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবকদের মাঝে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ওই বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করতে যান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।

১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের সময় তিনি গেইটের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। ওই সময় প্রধান ফটকের সামনে আনোয়ার হোসেনের নামে লাগানো নামফলকটি নিয়ে উপস্থিতিদের মধ্যে একজন এমপি খোকার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রশ্ন রাখেন, এটা কি জেলা পরিষদের বরাদ্ধে কাজ হচ্ছে? তখন এমপি উত্তর দেন, না। এটার জন্য আমি ডিও লেটার দিয়েছিলাম।’ ওই ব্যক্তি তখন পাল্টা প্রশ্ন করে এমপিকে বলেন, তাহলে এখানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নাম কেন? তখন এমপি বলেন, থাক, সমস্যা নাই। উন্নয়ন হলেই হলো।’ কয়েক সেকেন্টের এমন কথাপোকথন হতে হতে এমপি ততক্ষণে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করে ফেলেন।

এরপর এমপি খোকা গভর্নিং বডির বেশকজন সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছাড়াও বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুলতান মিয়া, কাউন্সিলর জায়েদা আক্তার মনি, কাউন্সিলর দুলাল মিয়া, গভর্নিং বডির সভাপতি সদস্য মোহাম্মদ আলী, পৌর জাতীয়পাটির সভাপতি এমএ জামান ও শিক্ষানুরাগী আলেয়া আক্তার প্রমূখ।

অভিভাবকদের এমপি বলেন, আমি জানি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেতন নিয়ে অভিভাবকদের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। আমি চাই এ অসন্তোষ দূর করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন পরিশোধ করেছেন। তারপরেও যদি কোন বেতনে অর্থের প্রয়োজন সেটা আমি দেখবো। বৈঠক শেষে এমপি সকলকে নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

অন্যদিকে ওই বৈঠকে শেষে কে বা কারা কলেজের গেইটে লাগানো আনোয়ার হোসেনের নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলে। স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন এই নামফলকটি বেশকজন পৌর ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ভেঙ্গেছে। এর কারন হিসেবে জানাগেছে, জেলা পরিষদের বরাদ্ধের এই কাজটির ঠিকাদারী চেয়েছিল পৌর ছাত্রলীগের বেশকজন নেতা। কিন্তু কাজটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের পছন্দের একজন ঠিকাদারকে পাইয়ে দেয়া হয়। যে কারনে ছাত্রলীগের ওইসব নেতাদের মাঝে ক্ষোভ ছিল। আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এই নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় এমপি খোকার কোন সম্পৃক্ততা নাই।

মুলত ঠিকাদারী কাজের বিরোধ নিয়ে নামফলকটি ভাঙ্গা হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এমপি খোকা দাঁড়িয়ে থেকে ভেঙ্গেছেন কিংবা কাউকে নামফলক ভাঙ্গতে নির্দেশ দিয়েছেন এমনটা জানাননি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিতির কেউই। আবার অনেকেই জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ সুলতান মিয়ার যে রহস্যজনক বক্তব্য মিডিয়াতে এসেছে সেটার কারন হলো অভিভাবকদের পক্ষেই বক্তব্য রেখেছিলেন এমপি খোকা।