যেসব কারনে চার উপজেলায় তারা চার হেভিওয়েট প্রার্থী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৪টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবার বেশ জোড়ালো আলোচনায় রয়েছেন চার হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশি। যাদের নাম ইতিমধ্যে কেন্দ্রে পাঠিয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ। বিকল্প নাম পাঠানো হলেও যে যার মত করে কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ সহ স্থানীয় এমপিদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। নারায়ণগঞ্জেও এই চার নেতা বেশ আলোচিত। তবে এই চার নেতার বাহিরেও অনেকেই লবিং করছেন। চেষ্টা করছেন নিজেদের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে। তবে সম্ভাবনা বেশ এই চার নেতার। ইতিমধ্যে তাদের অনুগামী নেতাকর্মীরা মাঠেও নেমেছেন ভোট প্রার্থনায়।

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুইয়া। টানা তিনি দুইবারের চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে তিনি রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন। এর আগে বর্তমান পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সঙ্গে তার বিরোধ থাকলেও জাতীয় নির্বাচনের আগে সেই বিরোধ মিটে যায়। নির্বাচনের আগেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদে শাহজাহান ভুইয়ার সঙ্গে সমঝোতায় বিরোধ নিষ্পত্ত হয়। সেই কারনে এখানে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে নেতাকর্মীরা দেখছেন শাহজাহান ভুইয়াকেই। যদিও এখান থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতির নিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা। তিনিও কেন্দ্রীয়ভাবে চেষ্টা করছেন মনোনয়ন ভাগিয়ে আনতে। তবে সরাসরি স্থানীয় এমপি গাজী এ বিষয়ে কারো পক্ষেই নেই। ফলে যে যার মত করে চেষ্টা করছেন।

এদিকে আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবার নির্বাচনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ ভুইয়া। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তার রয়েছে ক্লিন ইমেজ। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও চান এখানে নতুন চেয়ারম্যান। এ উপজেলায় টানা দুইবারের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজালাল মিয়া। এখানেও বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু সরাসরি কারো পক্ষে অবস্থান নেননি। যে কারনে যে যার মত করে চেষ্টা করছেন মনোনয়ন ভাগিয়ে আনতে। যেখানে এমএ রশিদ ভুইয়াই হচ্ছেন হেভিওয়েট প্রার্থী।

সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি এখন খালি। চলছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এখানে চেয়ারম্যান ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নান। তিনি পদত্যাগ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এর আগের নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগ নেতা মোশারফ হোসেন ও মাহফুজুর রহমান কালাম অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন। এরও আগের নির্বাচনে এখানে চেয়ারম্যান ছিলেন মোশারফ হোসেন। পরের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন মান্নানের কাছে। তিনি আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। টানা দুইবারই নির্বাচন করে পরাজিত হন উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। তবে এবার তিনি হেভিওয়েট প্রার্থী। জাতীয় নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন। গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে এখানে দলীয় মনোনয়ন পান মোশারফ হোসেন। ওই নির্বাচনে তিনি মহাজোটের স্বার্থে প্রত্যাহার করে নিলে এখানে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয়পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা। এবারের নির্বাচনে মোশারফ হোসেন কাজ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার হাসনাতের পক্ষে এবং কালাম কাজ করেন এমপি খোকার পক্ষে। যে কারনে এখানে এগিয়ে আছেন কালামই। যদিও উপজেলা আওয়ামীলীগ তিনজনের নাম চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বন্দর উপজেলা। এ উপজেলায় এবার সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান। গত জাতীয় নির্বাচনে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবার তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। চেষ্টা করছেন দলের মনোনয়ন ভাগিয়ে আনতে। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলয়ের রাজনীতি করেন। যে কারনে এখানে মেয়র আইভীর জনপ্রিয়তা কাজে আসবে সুফিয়ানের। কেন্দ্রীয়ভাবেও শক্ত অবস্থানে সুফিয়ান। তরুণ প্রজন্মের কাছেও সুফিয়ান বেশ জনপ্রিয়। ফলে এখানে তিনিই হেভিওয়েট প্রার্থী। যদিও এখান থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমএ রশিদ মিয়া।তিনি এর আগে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এবার দলীয় প্রতীকটি সুফিয়ানের হাতেই ওঠতে যাচ্ছে বলেও নেতাকর্মীদের ধারণা।