সোনারগাঁয়ে অনাহারে বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

দেশের অন্যসব নাগরিকের মত ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার থাকলেও করোনার প্রাদূর্ভাবের কারনে বেকার ও অসহায় হয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়ের মানুষেরা কোন প্রকার সরকারী কিংবা বেসরকারী ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছেনা। তারা জানান, করোনার কারণে দেশের অন্য মানুষের মত তাদেরও আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। লকডাউনের কারনে তারা ছাপড়াঘর থেকে বের হতে পারছেন না। ফলে দেশের সাধারণ মানুষ ত্রাণ সামগ্রী পেলেও তাদের কোন ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছেনা কোন জনপ্রতিনিধি বা কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

জানাগেছে, সোনারগাঁ উপজেলার মেরীখালী ব্রিজের নিচে, কাঁচপুর সেতুর পাশে, বৈদ্যেরবাজারসহ কয়েকটি স্থানে এক সময় নৌকার মাঝে বাস করতো বেদে সম্প্রদায়ের কয়েকশত নারী পুরুষ। কালের বির্বতনে ও নদী ও খাল বিলে পানি কমে যাওয়ায় বর্তমানে তারা নৌকা ছেড়ে অনেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে সরকারী ও কারো দেয়া অস্থায়ী কোন জায়গায়। এর বেশীর ভাগই বেঁদে বাস করেন পিরোজপুর ইউনিয়নের সাহাপুর কাঠপট্টি এলাকায়। এক সময় তারা সাপের খেলা, টেটা, ছাতা মেরামত ও কবিরাজিসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে অনেকে এ পেশা ছেড়ে বিভিন্ন কাজকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন। তারমধ্যে অনেকেই বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী পেশা ধরে রেখে জীবিকা নির্বাহ করছেন। দীর্ঘদিন যাবত তারা এ এলাকায় বসবাস করায় তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু করোনার প্রাদূর্ভাবের কারণে বেকার হয়ে পড়া অসহায় বেঁদে সম্প্রদায়ের পাশে দাড়ানি কেউ। ফলে মানবেতন জীবন যাপন করছে তারা। এমতাবস্থায় বেঁচে থাকার জন্য তারা স্থানীয় প্রশাসনে হস্তক্ষেপ কামনা করেছন।

সাহাপুর কাঠপট্টি এলাকার কয়েকজন বেঁদে সম্প্রদায় অভিযোগ করেন, করোনা প্রাদূর্ভাবের কারনে সরকারী নির্দেশ থাকার জন্য ঘর থেকে বের হতে পারছেন না বিধায় তারা মাসখানেরও বেশী সময় ধরে বেকার হয়ে পড়েছে। নিজেদের জমানো যা টাকা পয়সা ছিল তা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। এখন আর তাদের চলার মতো কোন উপায় নেই। সাধারণ জনগণ সরকারী ও বেসরকারী ত্রাণ সামগ্রী পেলেও তাদের কাছে কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌছেনি। ফলে ছেলে মেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। জরুরী ভিত্তিতে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ না করলে বেঁচে থাকার জন্য লকডাউন ভেঙ্গে রোজগারের জন্য রাস্তায় ভিক্ষায় নামা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেন না।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বেদে সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় ত্রাণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।