সান নারাণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
তৃতীয় মেয়াদে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিবে এমনটা বিশ্বাস করেনা স্থানীয় আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা স্বপ্ন দেখছেন এ আসনে নৌকার প্রার্থী থাকছে সামনের নির্বাচনে। গত দুই মেয়াদে এখানে জাতীয় পার্টির এমপি থাকায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে অনেকটা পিছিয়ে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মুলত সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের কিছু নেতার ওসমানীয় তাবেদারীর কারনেই এখানে জাতীয় পার্টি দুইবার আসনটি পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
তবে সামনের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ছাড় দিতে নারাজ। তারা চায় এখানে নৌকার প্রার্থী। তবে অনেকে মনে করছেন সামনের নির্বাচন হবে ভিন্ন ধরণের। যে কারনে নতুন ক্লিনইমেজধারী কোনো প্রার্থী এখানে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনিত হতে পারেন। যাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল। বিরাট চমক দিয়ে নৌকার প্রার্থী হয়ে সোনারগাঁবাসীর মাঝে হাজির হতে পারেন মাসুদ দুলাল।
স্থানীয়রা জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনই ভাবছেনা বিএনপি। তাদের টার্গেট সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করা। যদিও অন্যদিকে নির্বাচনের লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে আওয়ামীলীগ ও তাদের জোটভুক্ত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। একই পরিস্থিতি নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনটির নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজনীতি। আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে আজহারুল ইসলাম মান্নান একক প্রার্থী হিসেবে তার ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন অনেকাংশে নিশ্চিত হলেও এ আসনে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে এবারো বেশ টানাটানি শুরু হয়েছে। জোট না থাকলে এখানে জাতীয় পার্টি একক প্রার্থী দিবে কিনা সেটা বলার সময় এখনো আসেনি। সরকার দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন আবারো জোটভুক্ত নির্বাচন হবে। যে কারনে প্রথম কাজ জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন ছিনিয়ে এনে নৌকার প্রার্থী নিশ্চিত করা। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, জোট থাকলে এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থীতা প্রায় নিশ্চিত।
নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি আসন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ)। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিকে এই আসনটি ছেড়ে দিলে এখানে দুইবারই এমপি হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। জাতীয় রাজনীতিতে জোটগত কারন ছাড়াও এখানকার আওয়ামীলীগের রাজনীতি বেশ অগোছালো। জাতীয় নির্বাচন আসলেই এখানে নৌকার মাঝির অভাব হয় না। হরেক রকমের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের রংবেরঙের প্রচারণা শুরু হয়। কেউ কেউ জাতীয় পার্টিকে সুযোগ করে দিতেই হরেক রকমের মনোনয়ন প্রত্যাশিরা মাঠে নামেন।
এ আসনে সারা বছর রাজনীতি না করেও ঘরে বসে নৌকা প্রত্যাশি ঘোষণা দেয়া যায়। কেউ কেউ উড়ে এসে এখানে মনোনয়নপত্রও কিনে নেন। যার চৌদ্দ গোষ্ঠির একজনও এখানে নেই তিনিও নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চান। প্রতিবারই এমন যখন জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয় তখন সুবিধা বেড়ে যায় জাতীয় পার্টির। সামনের নির্বাচনেও যে এমনটা দেখা যাবে তারই আভাস পাওয়া যাচ্ছে এখনি। দিন আগাচ্ছে নৌকার দাবির নেতা বাড়ছে। একেকজন ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘোষণার সংখ্যা এবার গত নির্বাচনকেও ছাড়িয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বহু মনোনয়ন প্রত্যাশির মাঝে ঐক্যের ছাপ আওয়ামীলীগে খুবই কম।