ছাত্রলীগ খুনি সংগঠনে পরিনত: সাখাওয়াত হোসেন খান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বুয়েটে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনে হত্যার প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে বলেছেন, ছাত্রলীগের পূর্বের ঐতিহ্যকে নষ্ট করে দিয়ে এই সরকার ছাত্রলীগকে মানুষ হত্যার, ছাত্র হত্যার কারিগরে পরিনত করেছে। সারাদেশে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নেই। ছাত্রলীগ সেইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারের মদদে এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যেখানে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি করার কোন অধিকার নাই।

১৩ অক্টোবর রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং বুয়েটে শিক্ষার্থী আবরার হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাখাওয়াত হোসেন খান।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে বই খাতা তুলে না দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে এই সরকার- এমনটা দাবি করে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই আইনজীবী নেতা আরও বলেন, সেই অস্ত্র দিয়ে সারাদেশে ছাত্রলীগ সন্তাসের রাজত্য কায়েম করেছে। দেশের প্রতিটি স্থানে খুন গুম ধর্ষণের পিছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। এসবের জন্য দায়ী দেশে গণতন্ত্রহীনতা ও শেখ হাসিনার সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিটি সেক্টরকে নষ্ট করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নাই। আইনের শাসন নাই। বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি করছে।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ফরমায়েশী রায়ের মাধ্যমে জেলে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ৭৪ বছরের একজন নারী যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সেই বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাজানো মামলায় ফরমায়েশী রায় দিয়ে জেলে রাখা হয়েছে। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করছি।

বুয়েটে ছাত্রকে হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, আজকে শরীর শিউরে ওঠে কি নির্মমভাবে মেধাবী শিক্ষার্র্থী আবরারকে হত্যা করা হলো। এই সরকার এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে চুক্তি করছে। ভারতের সাথে যে চুক্তি করেছে সেই চুক্তি এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে। ভারত থেকে কিছুই আনতে পারে নাই। কিন্তু দেশে পানি নাই। অথচ আমাদের পানি দিয়ে দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার টন ইলিশ মাছ ভারতকে দেয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার যে দেশ বিরোধী চুক্তি করেছে সেই চুক্তির বিরুদ্ধে একটু কথা বলার জন্য, ফেসবুকে স্ট্যাটাজ দেয়ার কারনে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো।

এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে তিনি কঠোর শাস্তির দাবি করে বলেন, এখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পড়াশোনার মধ্যে নাই। তারা আজকে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা আজকে খুনিতে পরিনত হয়েছে। চাঁদাবাজ সন্ত্রাসের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্য কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, আবরার একজন শহীদ। শহীদের মর্যাদা সরকার দিক বা দিক এদেশের মানুষ আবরারকে শহীদের মর্যাদা দিবে। ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে এদেশের মানুষকে রক্ষা করা হোক-এমনটা দাবি করেন সাখাওয়াত হোসেন খান।

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরামের সভাপতি কেএম সুমনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা, আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান শাহিন, অ্যাডভোকেট রকিবুল হাসান শিমুল, অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ মোল্লা, অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, অ্যাডভোকেট সালাউদ্দীন সবুজ, অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন, অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া, অ্যাডভোকেট আলম খান, অ্যাডভোকেট শাহআলম খন্দকার।

এ ছাড়াও সমাবেশে অ্যাডভোকেট কাউসার আহমেদ চৌধুরী টুটুল, অ্যাডভোকেট আফসানা আক্তার বিথি, অ্যাডভোকেট সাদ্দাম হোসেন, অ্যাডভোকেট জিয়াউল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আনজুম আহমেদ রিফাত, অ্যাডভোকেট রাসেল মিয়া সহ অন্যান্য আইনজীবীগণ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আতা-ই রাব্বি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাওসার আহমেদ ও শাহাদাত হোসেন প্রমূখ।