কোন প্রেতাত্মার হুকুমে সোনারগাঁ চলবে না: কায়সার হাসনাত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতের স্মরণ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের ব্যানারে মোগরাপাড়া এলাকায় ২৪ আগস্ট শনিবার এক শোকসভার সোনারগাঁয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেছেন, দলের স্বার্থে আমরা এ আসনটি জাতীয়পার্টির জন্য ছেড়ে দিলেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আমাদের সোনারগাঁয়ের প্রত্যেকটি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীকে মুল্যায়ন করতে হবে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মুল্যায়ন দিতে হবে। যদি কোন নেতাকর্মী অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে আমরা তার অধিকার আদায়ে ব্যবস্থা করবো।

তিনি আরও বলেন, আমি শুনি আমাদের নেতাকর্মীদের উপজেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসন ও থানা প্রশাসন কোন মুল্যায়ন করেনা। আজ থেকে উপজেলা ও প্রশাসন পৌরসভা, প্রশাসন কোন সিদ্ধান্ত নিতে হলে পৌরসভার নেতা ও আমাদের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। আপনারা এখন প্রশাসনে বসে শেখ হাসিনার উন্নয়নের সব অধিকার ভোগ করবেন আর আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শিখাবেন এটা চলবে না চলতে দিব না।

তিনি বলেন, আমাদের আওয়ামীলীগের রাজনীতি ও আদর্শ শিখাতে আসবেন না। আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে এখানে এসেছি, দলের জন্য হাত ভেঙ্গেছি, দলের নেতাকর্মীরা নিয়ে জেল খেটেছি, তাই আমাদের রাজনীতি শিখাতে আসবেন না। আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন। কোন প্রেতাত্মার হুকুম মানবে না।

কায়সার হাসনাত বলেন, সোনারগাঁয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি বলে যে গুজব শুনছেন সে আহবায়ক কমিটি বলে কিছু নেই। যারা কমিটি করেছে তারা একটি বেকুবের দল। তারা জানেনা আওয়ামীলীগের কমিটি করতে হলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলতে হয়। কিন্তু তারা এতই বোকা যে কমিটিতে যাদের রেখেছেন তারাও জানে না তারা কমিটিতে আছেন। তাদের বানানো কমিটি তৃণ্যমুল নেতারা মানে না, মানবে না।

হুশিয়ারী দিয়ে কায়সার বলেন, আগামী ১ তারিখের পর থেকে কোন বাহিরের শক্তিতে উপজেলা আওয়ামীলীগ চলবে না। আওয়ামীলীগ চলবে শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং আজকে মঞ্চে যারা আছেন তাদের নির্দেশে। আমাদের নেতাকর্মীদের সম্পর্কে কেউ কোন কোন বাজে মন্তব্য করে এবং গায়ে হাত দেয় তাহলে সবাই মিলে তার তাৎক্ষনিক তার দাতভাঙ্গা জবাব দিয়ে দেয়া হবে। আমাদের মধ্যে ঐক্য ছিলনা বলে নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছে অবহেলিত হয়েছে। অনেক সহ্য করেছি আর সহ্য করা হবে না।

নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করবেন। কারন আপনারাই সোনারগাঁয়ে ২৩ বছর পর নৌকাকে জয়লাভ করিয়েছেন। আপনাদের শক্তি আর সাহসের জন্যই সেদিন সোনারগাঁ থেকে নৌকা জয়লাভ করেছিল। এখন কোথায় গেল আপনাদের সেই শক্তি। আমরা আপনাদের শক্তি ফিরিয়ে দিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের জয় নিশ্চিত।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে শোকসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সোনারগাঁয়ের সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, কেন্দ্রীয় মহিলালীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সেলিনা আক্তার, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ মোল্লা বাদশা, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী যুব আইনজীবি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বি, আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেন, সাদিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রশিদ মোল্লা, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, জামপুর ইউপি চেয়ারম্যান হামীম সিকদার সিপলু, সনমান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন সাবু, পৌরসভা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গাজী আমজাদ, আওয়ামীলীগ নেতা মামুন আল ইসমাইল, কাঁচপুর শ্রমিকলীগ নেতা মান্নান মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক ইসহাক, উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর, পিরোজপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগে যুগ্ম আহবায়ক ডাঃ আতিকুল্লাহ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান রবিন. সোনারগাঁ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি সোনিয়া আক্তার ও প্রজম্মলীগ নেতা আরমান মেরাজ প্রমূখ।

অন্যদিকে জানাগেছে, গত ১৫ জুলাই সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া দীর্ঘদিন যাবত নারায়ণগঞ্জের এমপি একেএম শামীম ওসমানের সঙ্গে রাজনীতি করছেন। যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমও শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন। সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি নিয়ে বেশ স্বস্থিতে রয়েছেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাও। তার শক্ত প্রতিদ্বন্ধি কায়সার হাসনাত ও কালাম পড়েছেন বেশ বেকায়দায়। ফলে এমপি খোকার অবস্থান আরো পাকাপোক্ত হতে যাচ্ছে সোনারগাঁয়ে।

কমিটিতে সদস্য পদে রয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সী ও সামসুদ্দিন খান আবু।