পাসপোর্ট অফিসে চাকুরীর নামে ভূয়া নিয়োগপত্র: দুই প্রতারক গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

পাসপোর্ট অফিসে চাকুরীর প্রলোভন ও ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৫৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় রাজধানী ঢাকা থেকে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১) এর একটি টিম। তাদের কাছ থেকে ভূয়া নিয়োগপত্র, ল্যাপটপ ও মোবাইল উদ্ধার করেছে র‌্যাব। ১৩ জুলাই শনিবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর অপারেশন অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী।

তিনি জানান, র‌্যাব-১১ এর বিশেষ অভিযানে ১২ জুলাই শুক্রবার রাতে ডিএমপি, ঢাকার মিরপুরের কাজীপাড়া ও শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট থেকে পাসপোর্ট অফিসে চাকুরীর প্রলোভন ও ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ২জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে প্রতারিত হওয়া প্রার্থীরা সবাই নোয়াখালীর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আবু জাহেদ নয়ন ও মাহমুদুল হাসান রনি। তাদের কাছ থেকে ভূূয়া নিয়োগপত্র, ল্যাপটপ ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, আবু জাহেদ নয়নের বাড়ী নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন সালেহপুর গ্রামে। সে ২০১৫ সালে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, আগারগাঁও, ঢাকা এ এমএলএসএস পদে অস্থায়ী চাকুরী নেয়। প্রায় ১ বছর চাকুরী করার পর অনিয়ম ও জালিয়াতির কারনে তাকে চাকুরী হতে বহিষ্কার করা হয়। চাকুরীর সুবাধে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাধে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে চাকুরী প্রার্থীদের বায়োডাটা সংগ্রহ করে নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন চাকুরী প্রার্থীদের চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। পাসপোর্ট অফিসের সহকারী হিসাব রক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর, এমএলএসএস’সহ বিভিন্ন পদে প্রায় ৫০জন চাকুরী প্রার্থীকে চাকুরীর প্রলোভন ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৫৬ লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। উক্ত টাকা আবু জাহেদ নয়ন বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ব্যাংক, এসএ পরিবহন, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস ও নগদ এ গ্রহণ করে এবং বিশ¡াসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ১০জন প্রার্থীকে ১০টি ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে।

নিয়োপত্র পাওয়া প্রার্থীদেরকে বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয়ে তাদের পদায়ন হয়েছে মর্মে ভুয়া দাপ্তরিক চিঠি প্রদান করে। গত ৯ জুন উক্ত ভুয়া চিঠি নিয়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগদান করলে তারা জানতে পারে যে, নিয়োগপত্রগুলি ভুয়া, জাল এবং পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তর কর্তৃক ইস্যূকৃত নয়।

গ্রেপ্তাররকৃত নয়ন এই ভুয়া নিয়োগপত্রগুলো অপর গ্রেপ্তারকৃত মাহমুদুল হাসান রনির মাধ্যমে তৈরি করে। ঢাকার শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট এলাকায় রনির কম্পিউটার কম্পোজের একটি দোকান আছে। ঐ দোকানে আবু জাহেদ নয়ন ও মাহমুদুল হাসান রনি মিলে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করত। রনির দোকান হতে জব্দকৃত ল্যাপটপে এই নিয়োগপত্র তৈরীর অনেক আলামত পাওয়া যায়। প্রতারিত প্রার্থীরা সবাই নোয়াখালীর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।

র‌্যাব আরও জানায়, বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল ডিএমপি, ঢাকার মিরপুরের কাজীপাড়া ও শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা আবু জাহেদ নয়ন এবং সহযোগী মাহমুদুল হাসান রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।