সোনারগাঁয়ে চলছে নদী দখলে বালু ভরাট, প্রশাসন বলছে ব্যবস্থা নিব!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ড্রেজার দিয়ে চলছে মেঘনা ও এর শাখা নদী ভরাট। অপরদিকে গত এক সাপ্তাহ দরে মেঘনা নদীর তীর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ। এর মধ্যেই এমন ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ মে মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

গত ২০ মে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) উচ্ছেদে অভিযান চালিয়ে সোনারগাঁ উপজেলায় মেঘনা নদীর তীর দখল করে গড়ে ওঠা আল-মোস্তাফা গ্রুপের স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়। এছাড়াও গত চার দিনে বিআইডব্লিউটিএ এর উচ্ছেদ অভিযানে আরো কয়েকটি বড় শিল্পকারখানার সীমানাপ্রাচীর ও স্থাপনাও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদের আগে ও পরে মেঘনা নদীর দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শাহ জালালের নেতৃত্বে কমপক্ষে ৫০-৬০ জন লাঠি, রামদা, চায়নিজ কুড়াল হাতে পাহারা বসিয়ে মেঘনা ঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে চর রমজান সোনা উল্লাহ মৌজায় মেঘনা নদী ও এর শাখা নদী ভরাট শুরু করে দিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঁচটি ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট শুরু হয়। এভাবে মেঘনা নদী ও এর শাখা নদীর মুখ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অধিগ্রহণ করা জায়গা এবং খাস জমি ভরাট করে দখল করে নেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, স্থানীয় এক প্রভাবশালী ফার্নিচার ব্যবসায়ী শাহ জালাল সন্ত্রাস দিয়ে চর দখলের মতো নদী ও সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে। গ্রামবাসী এই প্রতিবেদককে বলেন, এমন দিনদুপুরে নদী দখলের সাহস তারা পায় কোথায় ? যেভাবে দখল শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, নদীর মুখ একেবারে বন্ধ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ করা জমি ও খাস জমিসহ ৪০ বিঘা জমি দখল হয়ে যাবে দখলদারদের।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজালাল বলেন, আমি একটি কারখানার পক্ষে বালু ভরাট করছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, নদীর তীরের জায়গাসহ সরকারি সম্পত্তি তারা লিজ নিয়েছে। কারখানার কর্মকর্তারা যেখানে বালু ভরাট করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা সেখানেই ভরাট করছি। ভরাট করার সময় নদী দখল হলে তা কারখানা কর্তৃপক্ষ সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করবে।

বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের উপপরিচালক মোঃ শহীদুল্লাহ বলেন, আমাদের অভিযানের মধ্যেই ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করে নদী দখল করছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। ওই স্থানে অভিযান চালানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, নদী ও সরকারি জায়গা দখল করার অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পুলিশসহ পাঠিয়েছি। অভিযানের খবর পেয়ে দখলদাররা পালিয়ে গেছে। যেসব ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করছে, সেগুলো জব্দ করা হবে।