হুমরা চোমরা একজন প্রার্থী হয়েছিলেন: এমপি সেলিম ওসমান

দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি নিজেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই নৌকা প্রতীক দাবী করেছিলাম। আওয়ামীলীগ থেকেও ১০ থেকে ১২জন প্রার্থী হয়েছিলেন। যার মধ্যে আরজু ভূইয়া আমার ঘনিষ্ট বন্ধু এবং আরেকজন ছিলেন আমার ছোট ভাই। যদিও আমি এখনো তাকে সরাসরি কখনো দেখি নাই। আমার দল থেকেও হুমরা চোমরা একজন প্রার্থী হয়েছিলেন, শহর জুড়ে ব্যানার পোষ্টার লাগিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত আমার উপর আস্থা রেখেছেন। আওয়ামীলীগের যারা প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তারা সবাই আমাকে অত্যন্ত ভালবাসেন বিধায় নারায়ণগঞ্জে রিটার্নিং অফিসারের কাছে কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। তাই মহাজোট থেকে আমি একাই আছি।
এখানে উল্লেখ্য যে, নারায়ণগঞ্জ-৫ সেলিম ওসমানের এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেলিম ওসমানের ভাবি পারভীন ওসমান ও কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সদস্য জয়নাল আবেদীন।  এখানে মনোনয়ন পান সেলিম ওসমান।  তবে হুমরা চোমরা কাকে বলেছেন তার নাম উল্লেখ করেননি সেলিম ওসমান।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। আর এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের প্রতিটি পরিবার থেকে একমাত্র নারীরাই সব থেকে বেশি অগ্রনী ভূমিকা রাখতে পারেন বলে বিশ্বাস এমপি সেলিম ওসমানের। তাই তিনি প্রতিটি পরিবারের নারীদের দুটি কাজের দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যার মধ্যে একটি হলো নিজেদের সন্তানদের উজ্জল ভবিষ্যত গড়ার লক্ষ্যে তাদেরকে সঠিক শিক্ষাদান এবং একটি বাড়ি একটি খামার বাস্তবায়নে প্রতিটি নারীকে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়া।
৫ নভেম্বর বুধবার বিকেল ৩টায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মালিবাগ এলাকায় অবস্থিত ক্যাসেল রিসোর্সের অভ্যন্তরে ধামগড় ইউনিয়ন এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে দোয়ার পূর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।
শুরুতেই সেলিম ওসমান ধামগড় ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান আয়নাল হক এবং প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানকে স্মরণ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং তাদের বেহেস্ত কামনা করেন।
ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ। উক্ত অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ এবং সংগঠনের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মী এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়ে আগামী নির্বাচনে দলমত নির্বিশেষে এমপি সেলিম ওসমানের পক্ষে কাজ করে তাঁকে পুনরায় এমপি নির্বাচিত করার আশা প্রকাশ করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একজন পুরুষের সব থেকে ভাল বন্ধু হতে পারে তার নিজের পরিবার। পরিবার বলতে সে আপনার মা-বাবা, আপনার স্ত্রী, আপনার সন্তানেরা। পরিবারের সাথে যত ভাল বন্ধুত্ব রাখবেন আপনাদের সংসার এবং কর্মময় জীবন তত সুখের এবং সফলতা ভরপূর হবে। তাই প্রতিটি পুরুষের উচিত নিজের পরিবারের সাথেই সব থেকে ভাল বন্ধুত্ব করা।
প্রয়াত নাসিম ওসমানের অসমাপ্ত স্বপ্ন এবং নারায়ণগঞ্জের ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ধামগড় এলাকায় আমার একজন মুরুব্বি ছিলেন। যিনি আমার বাবা আর বড় ভাইয়ের  সাথে কাজ করেছেন। উনি হলেন আমার আয়নাল চাচা। উনার জায়গায় এখন মাসুম চেয়ারম্যান হয়েছেন। আর আমার বড় ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমানের স্থানে আমি এসেছি তাঁর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। বিগত সাড়ে ৪ বছর আমি রশিদ ভাই এবং জাহের মাধ্যমে আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে বন্দর এবং নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করে গেছি। উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে আমি আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কোন দল দেখি নাই। আপনাদের প্রিয় নেতা প্রয়াত নাসিম ওসমানের অসমাপ্ত স্বপ্ন গুলোর মধ্যে কিছু কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে, আর কিছু কাজ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বন্দরকে নিয়ে সেলিম ওসমানেরও তো স্বপ্ন আছে। সেলিম ওসমানের স্বপ্নের কাজে এখনো শুরুই করা হয় নাই। আমি চাই সারা বাংলাদেশের মধ্যে এই বন্দর উপজেলা হবে সব থেকে বেশি অর্থনৈতিক শাক্তিশালী এবং উন্নত আধুনিক উপজেলা। এখান থেকেই সর্ব প্রথম বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার বাস্তবায়ন যাত্রা শুরু করবে। আগামীতে আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নের কাজে এগিয়ে যাবো। আর সেখানে আপনাদের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সহযোগীতা আমার সব থেকে বেশি প্রয়োজন। আগামীতে যদি আমি এমপি নাও হতে পারি তাহলে যিনি এমপি হবেন আমি আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে তাকে উন্নয়ন কাজে সহযোগীতা করে যাবো। যতদিন বেঁচে থাকবো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাবো।
সভাপতির বক্তব্যে ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ বলেন, এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তি বার বার জন্ম নেয় না। উনার মত একজন সংসদ সদস্যকে যদি আমরা হারাই তাহলে আমাদের মত র্দুভাগা আর কেউ হবে না। অন্যান্য জেলায় বসবাসকারী পরিচিত জনেরা যখন আমাকে আপসোস করে বলে যদি তারা আমাদের আসনে বাসিন্দা হতো তাহলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতো। কারন সেলিম ওসামনের মত একজন মানুষ এই এলাকার এমপি। তখন গর্বে আমাদের বুক ভরে যায়। বিগত সাড়ে ৪ বছর এমপি সেলিম ওসমান আমাদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমাদের সবার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উনার উপর আস্থা রেখে উনাকে মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী করেছেন। তাই আমরাও আগামী নির্বাচনে দলমত নির্বিশেষে উনার পক্ষে কাজ করে উনার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল বিপুল ভোটে বিজয়ী করে উনাকে আবারো জাতীয় সংসদের পাঠাবো।
চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদের প্রতিশ্রুতিতে উপস্থিত সকলেই দুই হাত তুলে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আব্দুর রহমান বাচ্চু, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, নারী কাউন্সিলর হোসনে আরা, জেলা যুব সংহতির যুগ্ম আহবায়ক কামাল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, বন্দর থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান কমল, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন প্রমূখ।