মাদক সন্ত্রাস ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে: এসপি হারুন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এটা চলবে। আমরা মনে করি নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ঈদ উপলক্ষ্যে, রোজা উপলক্ষ্যে স্বস্থি দেয়াই আমাদের কাজ। ঈদের দিন পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকবো। সাধারণ মানুষকে পারাপাড় করব। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে পাড় হবে। চলাচল করবে। সাধারণ মানুষ তাদের ব্যবসাটা সুন্দরভাবে করবে।’

পবিত্র মাহে রমজান, বৌদ্ধ পূর্ণিমা ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণ সহ জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিতকল্পে ১৬মে বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

এ ছাড়াও তিনি বলেন, ‘এই রমজান মাসকে ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ী, বিশেষ করি ডাকাতি ছিনতাই সহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। সেই কারনেই আমরা ইতিমধ্যে মহিলা সহ ১৩ জন ছিনতাইকারীকে গেস্খপ্তার করেছি। ডাকাত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঈদ আসলে ছিনতাইকারীর যে উপদ্রব বেড়ে যায় সেটা রোধ করতে আমরা কাজ করছি। রোডে যে ছিনতাই ডাকাতি হয় সেটা আমরা রোধ করব। ইতিমধ্যে আমরা বেশকজন ডাকাত ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছি। ব্যবসায়ীরা ও সাধারণ মানুষ যেনো ছিনতাইয়ের কবলে ডাকাতির কবলে না পড়ে সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এসব কাজে আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপাররাও সহ থানার ওসির দায়িত্বে থাকবেন।’

এর আগে এসপি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ জেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এই জেলার উপর দিয়ে সিলেট চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জেলার গাড়ি চলাচল করে। ঈদ উপলক্ষ্যে মানুষের চলাচলে যানজট একটু বেশি সৃষ্টি হয়। সে কারনেই রমজান মাসে আমাদের জনবল দরকার হয়ে পড়ে। গুরুত্ব বিবেচনা করেই আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পুলিশ থাকবে, আনসার নিয়োগ করেছি, কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ করেছি এসব যানজট নিরসনের জন্য।’

এসব ছাড়াও এসপি হারুন অর রশীদ জানান, ‘নারায়ণগঞ্জে পবিত্র রমজান মাসে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের যানজট নিরসনে কাজ করবে পুলিশের ১৬টি ভ্রাম্যমান মটর সাইকেল সার্ভিস। এসব মটর সাইকেলে থাকা পুলিশ সদস্যরা দ্রুত যানজট নিরসনে কাজ করবেন। একই সঙ্গে যেখানেই ছিনতাই সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংগঠিত হবে সেখানে এসব ভ্রাম্যমান মটরসাইকেলে থাকা পুলিশ সদস্যরা দ্রুত এগিয়ে আসবেন।’

একই সঙ্গে জেলাবাসীর শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব পালনের লক্ষ্যে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী দিতে নারায়ণগঞ্জে এবারের ঈদে জেলা পুলিশের সকল সদস্যদের ছুটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ‘ঈদ পর্যন্ত পুলিশের সকল সদস্যরা রাস্তায় থাকবো। আমরা ঈদ করব রাস্তায়। জনগণ ঈদ করবে আমাদের পুৃিলশের কোন ছুটি হবে না। এই ঈদ উপলক্ষ্যে আমাদের পুলিশের কোন ছুটি হবে না।’

নারায়ণগঞ্জের মানুষ যখন উৎসব আমেজে ভেসে যাবেন তখন এসব পুলিশ সদস্যরা তাদের পরিবার পরিজন রেখে নারায়ণগঞ্জে থাকবেন ধর্মীয় উৎসবে নারায়ণগঞ্জবাসীর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। পবিত্র ঈদ উল ফিতর ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা উৎসবে নারায়ণগঞ্জের সকল পুলিশ সদস্যরা নাগরিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করবেন বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘রমজান ও আসন্ন ঈদ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জবাসী যেন নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে চলাফেরা করতে পারে এবং নারায়ণগঞ্জ শহরকে আরো নিরাপদ শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেব ডিবি পুলিশ সহ জেলা পুলিশের অন্যান্য সকল থানা কর্তৃক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা ইতিমধ্যে জানেন যে, নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া ও আশপাশ এলাকা হইতে ৩জন মহিলা ছিনতাইকারী সহ ১০ জন পুরুষ মোট ১৩ জন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়াও আগের দিন রূপগঞ্জের একটি ডাকাতি মামলায় ৪ জন ডাকাতকে লুণ্ঠিত মালামাল সহ গ্রেপ্তার করা হয়।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘সম্মানিত নাগরিকদের সেবা প্রদানের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সকল সদস্যদের ছুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলার সকল পুলিশ, আনসার ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্যরা সম্বন্বয় করে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করবে। যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সড়ক ও মহাসড়কে জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত কল্পে জেলা বিশেষ শাখা, নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক বিশেষ প্রোগ্রাম করা হয়েছে। সমস্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার সকল সড়ক ও মহাসড়কগুলোকে চারটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি সেক্টরকে ২টি করে সব সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে।’

এসপি জানান, উক্ত প্রোগ্রামে জেলা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ এবং আনসার ও কমিউনিটি পুলিশ সম্বন্বয় করে তিনটি পালায় যেখানে প্রথম পালা ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত, দ্বিতীয় পালায় বিকেল ৪টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এবং তৃতীয় পালায় রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কাজ করছে। প্রতিটি সেক্টর ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং সাব সেক্টরে ইনচার্জ সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও তদারকি করছেন।

এ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরের সম্মানিত নাগরিকদের ভোগান্তি কিংবা যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মটর সাইকেল মোবাইল সার্ভিস চালু করা হয়েছে যা পুলিশ সুপার ব্রিফিং শেষে উদ্বোধন করেন।

এর আগে পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে পুলিশ এ মটর সাইকেল মোবাইলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

তিনি নারায়ণগঞ্জের হকারদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হকাররা যেনো রাস্তাটা ছেড়ে দেন তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ।’

এ সময় পুুলিশ সুপারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মনিরুল ইসলাম, সুভাস চন্দ্র সাহা, মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ এনামুল হক, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন পারভেজ, ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন, জেলা পুলিশের ডিআইও-১ মমিনুল হক, ডিআইও-২ সাজ্জাদ রুমন প্রমূখ।