সোনারগাঁয়ে অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার, অপহৃতা উদ্ধার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর বটতলা এলাকা হতে অপহরণকারী চক্রের মুলহোতা সহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। ৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ রে মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া।

তিনি জানান, র‌্যাব-১১, সিপিএসসি, নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক একটি বিশেষ অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার সোনাপুর বটতলা এলাকা হতে অপহরণ চক্রের পরিকল্পনাকারী সহ ২ জন আসামী গ্রেপ্তার এবং তাদের হেফাজত হতে ভিকটিমকে উদ্ধার।

তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি অপহরণ চক্রের/মলম পার্টির সক্রিয় সদস্য। বিগত ৪/৫ মাস পূর্বে একই উপজেলার পূর্ব মাধবপুর গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মীর হোসেন দীর্ঘদিন সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন। তিনি দেশে ফিরে এসে তার দীর্ঘদিনের সেইভিংস দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় আল আরব স্বর্ণ শিল্পালয় নামে একটি সজুয়েলারি ব্যবসা শুরু করেন। গ্রেপ্তারকৃত ছিফা আক্তার ঘটনার আনুমানিক ১৪/১৫ দিন পূর্বে মীর হোসেনের স্বর্ণের দোকানে এসে একটি রুপার ব্রেসলেট ক্রয় করে।

পরবর্তীতে গত ১ ফেব্রুয়ারী দুপুর আনুমানিক দুপুর দেড়টার দিকে মীর হোসেনের স্বর্ণের দোকানে এসে পূর্বের ব্রেসলেট ক্রয়ের বরাত দিয়ে বলে যে তার একজন আত্মীয়ের স্বর্ণের গহনা বানানোর অর্ডার নেওয়ার জন্য তার আত্মীয়ের বাসায় মীর হোসেনকে যেতে। তখন মীর হোসেন যেতে অস্বীকার করলে গ্রেপ্তারকৃত ছিফা আক্তার চলে যায়। পরে মীর হোসেন দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য তার দোকান থেকে দেব হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলে আসলে ছিফা আক্তার সহ অপহরণ চক্রটির ২/৩ জন সদস্য একটি সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে মীর হোসেনের সামনে দাড় করিয়ে তার মুখের সামনে রুমাল ধরে তাকে অবচেতন করে জোড়পূর্বক সিএনজি আটোরিক্সায় উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে বর্ণিত ঘটনাস্থলে আটক করে রাখে। তখন চক্রটির অন্যান্য সদস্যরা মীর হোসেনকে ছিফা আক্তারের পাশাপাশি দাড় করিয়ে মোবাইলে ছবি ধারণ করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক মুক্তিপণ হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করিলে তারা মীর হসেনকে লাঠি দিয়ে মারধর করতঃ এলোপাতারি কিলঘুষি লাথি মেরে নিলাফুলা জখম করে। আটক থাকাকালীন সে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তার বড় ভাই মোঃ মোকলেস মিয়াকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা দিয়ে তাকে উদ্ধার করতে বলেন। বর্ণিত চক্রটির কাছে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসতে দেরি হওয়াতে তাকে পুনরায় মারধর করতঃ ভয়ভীতি প্রর্শন করে।

এই অপহরণ চক্রের সক্রিয় সদস্যদেরকে গ্রেপ্তাররের লক্ষ্যে র‌্যাব-১১, সিপিএসসি কোম্পানি, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকশ গোয়েন্দা টীম যথাযথ গুরুত্বের সাথে তার অবস্থান সনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অপরহণ চক্রের সক্রিয় সদস্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আজিবপুরে আসামী মোসাঃ ছিফা আক্তার এবং বরিশাল জেলার বিমানবন্দর থানার বারইখালী গ্রামের মোসাঃ রাহিমা জান্নাতুল ওরফে খালেদাকে সনাক্ত ও তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারাগাঁও থানার কাঁচপুর এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং তাদের হেফাজত হতে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদ্বয় ও উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।