সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগ নেতাদের সঙ্গে মঞ্চে ওঠা ব্যক্তিরা বিএনপির নেতা দাবি করে বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। সেই বিদ্রোহে মুলধারার কিছু নেতাও যোগদান করেছিলেন, যাদের মধ্যে ইতিমধ্যে সেইসব নেতারা আবারো মুলধারায় ফিরে এসেছেন। তারা এভাবে বিদ্রোহ করে যখন ব্যর্থ হয়েছেন, এবার বিএনএফ ধুয়া তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন বিদ্রোহীরা।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ- মুলত ঈদের পর মহানগর বিএনপির সম্মেলনকে বাধাগ্রস্থ করতেই এমন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বিদ্রোহীরা। গণমাধ্যমে মহানগর বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে শোকজ করানোর চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছেন। এসব কাজে কলকাঠি নাড়ছেন বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এক নেতা ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদ থেকে পদ হারানো আতাউর রহমান মুকুল। তবে নেতাদের দাবি- সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ঘটনা সুত্রে, গত ১৭ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব। সম্মেলনের আগের দিন কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী এক চিঠিতে রাজীবকে শোকজ করেন। মুলত এর দুদিন আগে ঢাকায় অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গোলাম ফারুক খোকনের অনুগতদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় রাজীবের বিরুদ্ধে বিএনএফে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সহ নানা অভিযোগ তুলে বক্তব্য রাখেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
মুলত ওই সভার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় প্রকাশিত খবরের বিষয়ে রাজীবের কাছে জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। আর এটাকেই ইস্যূ করে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু সহ মহানগর বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে একই কায়দায় মিডিয়াতে অপপ্রচার করে শোকজ করানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন বিদ্রোহীরা। যা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা।
ঘটনা সুত্রে আরো জানাগেছে, ২০১৩ সালের দিকে সাদা কাগজে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও সদর উপজেলা শাখার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর কমিটি প্রকাশ পায় গণমাধ্যমে। নির্বাচন কমিশনের সরবরাহকৃত বরাদ দিয়ে গণমাধ্যমে কাগজ দুটি প্রকাশিত হলে পরবর্তীতে যাদের নাম ওইসব কাগজে প্রকাশিত হয় তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেও বিষয়টি পরিস্কার করেন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন বরাবরও জবাব দেন। কেউ কেউ আইনগতভাবেও মোকাবেলা করে বিষয়টির সুরাহ করেন।
ওই সময় গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় নগরীর আমলাপাড়া এলাকা আমলাপাড়া ৯/২ এইচকে ব্যানার্জি রোডে জামাল ভিলার নিচ তলায় আল আমিন সিদ্দিকীর বাসা বিএনএফের প্রধান কার্যালয়। ওই সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনএফের ১৪ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটিতে আবু আল ইউসুফ খানকে আহ্বায়ক ও মাসুকুল ইসলামকে সদস্য সচিব দেখানো হয়। কমিটির যুগ্ম আহবায়ক পদে রহিমা শরীফ, আনোয়ার প্রধান, কামরুল হোসেন এবং সদস্য পদে কবির প্রধান, কাজী রুবায়েত হোসেন, মাহফুজুর রহমান, আল আমিন, সাখাওয়াত হোসেন, সাফিয়া ইসলাম, মাহবুব সোবহান, কুতুবউদ্দিন ও আবদুল ইউসুফকে দেখানো হয়।
একইভাবে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কমিটিতে রিয়াজুল ইসলাম আজাদকে আহ্বায়ক ও ফারুক হোসেনকে সদস্য সচিব দেখানো হয়। যুগ্ম আহবায়ক দেখানো হয় রাশেদুন নবী, মোহাম্মদ হোসেন বাদল ও মনির হোসেন খানকে। সদস্য পদে দেখানো হয় হাবিবুর রহমান মিন্টু, আনিস শিকদার, মাহবুবুর রহমান, মাহাববুউল্লাহ, আবদুল আজিজ, মাহাবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, বরকতউল্লাহ ও দুলাল হোসেন।
এদিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্র সচিব করে মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ইতিমধ্যে তারা মহানগরীর সদর থানা, বন্দর থানা ও উপজেলা কমিটি সহ প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করেছেন। বিদ্রোহীদের মুল নেতা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন ও অপর যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুদ্দীনকে মুলধারায় নিয়ে এসেছেন। রাজপথে প্রতিটি কর্মসূচি সফলভাবে পালন করেছেন। সকল বাধা বিপত্তি সাখাওয়াত টিপু মোকাবেলা করে ঈদের পর মহানগর বিএনপির সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। আর এই সম্মেলনকে বাধাগ্রস্থ করতে এবং মহানগর বিএনপির সকল কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করতে সরকারি দলের ইন্দনে কিছু গণমাধ্যম ব্যবহার করে বিএনএফ ধুয়া তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে পক্ষটি।