না’গঞ্জ-৫ আসন: বিএনপির নিয়ন্ত্রক সাখাওয়াত, জাপার দেয়াল টপকাতে ব্যর্থ আ’লীগ!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসন এলাকায় বিএনপির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। যিনি ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র আইভীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ৯৬ হাজার ভোট পান। এ আসনে ২০০৮ সাল থেকে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হয়ে আসছেন। এমনকি প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর এখানকার ‍উপ-নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি থেকে একেএম সেলিম ওসমান নির্বাচিত হোন। বারবার এখানে আওয়ামীলীগ নেতারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দাবি করে আসলেও সেই আশা তাদের পূরণ হচ্ছেনা। এখানে নৌকার মনোনযন প্রাপ্তির জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি সেলিম ওসমানকে টপকিয়ে এখানে নৌকা প্রতীক ছিনিয়ে আনার মত প্রার্থীর সংখ্যাও কম।

বড় ধরণের পরিবর্তন না হলে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটেই থাকছে জাতীয় পার্টি- এমনটা হলফ করেই বলা যায়। জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট ভেঙ্গে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছেনা। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি করবে না সেটাও বলার সময় এখনো আসেনি। রাজনীতিতে রাজপথ অনেকটাই বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে দখলে। মাঝেসাঝে আওয়ামীলীগ বিএনপির পাল্টা শান্তি সমাবেশ দিয়ে সরব থাকারও চেষ্টা করছে। জাতীয় পাটিও জোটের ভুক্ত আওয়ামীলীগের সঙ্গেই তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তবে ভেতরগতভাবে তিনটি দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও নির্বাচনী প্রস্তুতিও ঘুচিয়ে নিচ্ছেন। এমনি হাল হকিকত নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বনদর) আসনে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার মত নেতাদের নিয়ে কর্মীদের ভাবনা।

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, বিএনপির মুল টার্গেট এখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা তৈরি করা। সেই লক্ষেই বিএনপি রাজপথে নিয়মিত আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তেমনিভাবে রাজপথে সক্রিয় আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান। তার নেতৃত্বে জাতীয় ও স্থানীয় সকল কর্মসূচিগুলোতে নিয়মিত পালন করছে মহানগর বিএনপি। রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি মহানগরীর প্রতিটি থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন প্রায় শেষের দিকে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই আসনটি নিয়েই মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। ফলে প্রতিটি এলাকায় সাখাওয়াতের নির্বাচনী প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে। ২০১৬ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও তার রয়েছে অভিজ্ঞতা। গত নির্বাচনের সময় তিনি কারাগারে থাকায় মনোনয়ন পাননি।

গত নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করায় ও সাখাওয়াত জেলে থাকায় নাগরিক ঐক্যের প্রার্থী এসএম আকরামকে ধাণের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনে নানা ব্যর্থতা রয়েছে আকরামের। এ আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম বয়সের কারনে ঘরমুখী। তার নিষ্ক্রিয় ও অসুস্থ্যতার কারনে সাখাওয়াতের উপর মহানগর বিএনপির দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। কালাম এখন আর রাজনীতিতে নেই। ফলে এ আসনে বিএনপির কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী দেখছেনা নেতাকর্মীরা। ফলে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে সাখাওয়াত হোসেন খানই একমাত্র যোগ্য প্রার্থী।

গত নির্বাচনে পুরোদমে এ আসনে নৌকা প্রতীক চেয়ে মাঠে নেমেছিলেন আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত। কিন্তু শেষতক এখানে জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামীলীগ। ফলে আবারো লাঙ্গলের প্রার্থী নিয়ে আওয়ামীলীগ নির্বাচন করে। এবারো এসব মনোনয়ন প্রত্যাশিরা মাঠে নামতে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে প্রচার ও আলোচনায় এবার মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। যিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পরে প্রশাসক ছিলেন। তবে নৌকার দাবিতে এখনো পুরোদমে গত নির্বাচনের মত নির্বাচনী মাঠে তাদের দেখা না গেলেও এবারো যে নৌকার তুলবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।