সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত সেই সেলিম হোসেন দিপু

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

সোনারগাঁও উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তিনি। করোনাকালে কোমরে গামছা বেধে কৃষকের ধান কাটতে নেমেছিলেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন। রাজনীতি যার দিনের ১৮ ঘন্টা। বছরের বেশির ভাগ সময় থাকেন বাড়িঘর সংসার পরিবার পরিজন ছাড়া। পালিয়ে বেড়ান আত্মগোপনে। তাকে সবাই চিনেন পিএস সেলিম নামে। দলের অধিকাংশ কর্মসূচিতে তার মনিটরিং চোখে পড়ার মতই। এযেনো হলুদের মতই, যেমন সব তরকারিতেই লাগে। আবার বলা যায় সর্বরোগের ওষুধ অষ্টধাতু। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এমনি কাটছে সেলিম হোসেন দিপুর। পদ পদবীর লোভ লালসা তার ভেতরে দেখা যায়নি কখনই। বিএনপির যেমন রাজপথের কর্মী, তেমনি বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নানের একজন বিশ্বস্ত কর্মী। সেই সেলিম হোসেন দিপুকে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক পদে নির্বাচিত করেছে বিএনপি।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে প্রচার সম্পাদক পদে নির্বাচিত নির্বাচিত করায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সেলিম হোসেন দিপু।

একই সঙ্গে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সোনারগাঁও ‍উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনকে ধন্যবাদ জানান। উপজেলা বিএনপির প্রচার বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়ে তিনি কমিটির সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং আগামী আন্দোলন সংগ্রামে আরো বেশি আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অন্যদিকে জানাগেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মসূচির কারনে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করেনি বিএনপি। অবশেষে সেই কমিটি গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে পৌছে গেছে। যেখানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধার সম্পাদক মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছে জেলা বিএনপি। কমিটিতে রাজপথের নেতাকর্মীদের অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সাংগঠনিকভাবে পরিপূর্ণ কমিটি গঠন হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীরা জানান, যারা বিগত ১৪/১৫ বছর বিএনপির রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা রেখেছেন, যারা রাজপথে পুলিশের বন্দুকের সামনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে শ্লোগান দিয়েছেন, যারা হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যারা রাজপথে সামনে থেকে কর্মীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এমনসব নেতাকর্মীদের দিয়ে গঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। তবে যারা রাজপথে নয় শুধুমাত্র ফেসবুকে কথার বুলি ছাড়েন, যারা ঘরে বসে রাজনীতি করেন তাদেরকে রাখা হয়নি।

নেতাকর্মীরা আরো জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে কোনো বলয় হিসেবে করে পদ দেয়া হয়নি। যারা মান্নান ও মোশারফের সঙ্গে রাজনীতি করেন না, এমন ব্যক্তিরাও কমিটিতে পদ পেয়েছেন রাজপথে ভুমিকা রাখায়। কমিটির আকার ছোট হওয়ায় আরো রাজপথের দু’চারজনকে স্থান করে দিতে পারেননি নেতারা। তবে নেতারা জানিয়েছেন, রাজপথের নেতাকর্মীদের বিএনপি কখনও ভুলে যাবে না। এখন সামনে আরো কঠোর আন্দোলন। সেই আন্দোলন সফল করে নতুন সূর্য উদয়ে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের মুক্তি না হলে আমরা কেউ মুক্তি পাবো না। সামনে সকলকে মুল্যায়নের সুযোগ আসবে।

কমিটি গঠনের বিষয়ে জানাগেছে, চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি আজহারুল ইসলাম মান্নানকে আহ্বায়ক ও মোশারফ হোসেনকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় জেলা বিএনপি। এরপর ৩০ মার্চ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে মান্নান সভাপতি ও মোশারফ হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন। গত ৮ অক্টোবর জেলা বিএনপি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় সোনারগাঁও ‍উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন করেছে জেলা বিএনপি।

প্রকাশিত কমিটিতে কমিটিতে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে সভাপতি ও মোশারফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখে সহ-সভাপতি পদে ২০ জন, ৯জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১২জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ৩জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন করা হয়। কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, সিনিয়র ‍যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে হাজী সেলিম হক রুমী ও প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কামরুজ্জামান মাসুমকে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তারকে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে হামলা মামলা ও কারাভোগের শিকার সালমা আক্তার কাজলকে মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়নকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পুলিশের লাঠিপেটা থেকে মান্নানকে রক্ষা করতে গিয়ে লাঠিপেটার শিকার সেলিম ভুঁইয়াকে সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নোবেল মীরকে সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য হাজী সেলিম সরকারকে সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে।

জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। ফজল হোসেনকে দপ্তর সম্পাদক, সহ-দপ্তর সম্পাদক পদে কাজী সাজেদুল ইসলাম সাজুকে রাখা হয়েছে। সেলিম হোসেন দিপুকে রাখা হয়েছে প্রচার সম্পাদক পদে। উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ ভুঁইয়াকে যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। অ্যাডভোকেট কেএম সুমনকে আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে।

যুবদল নেতা মাওলানা ওমর ফারুককে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে, উপজেলা জাসাসের সভাপতি আমির হোসেনকে সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে, ছাত্রদল নেতা আব্দুল করিম রহমানকে ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে, যুবদল নেতা পারভেজ সাজ্জাদ চপলকে সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজীবকে সদস্য পদে রাখা হয়েছে।