২০১৮ সালের মতো রাতের ভোটের নির্বাচন বাংলার মাটিতে আর হবে না: নোমান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, একটি সরকার তখনই ব্যর্থ হয়- যখন তার রিজার্ভ শেষ হয়ে যায়। এখন বাংলাদেশের রিজার্ভ নেই। তাই এই সরকার ব্যর্থ। আর এই ব্যর্থতার দায় নিতে হচ্ছে দেশের জনগণকে। আমরা সরকার বিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ দিতে চাই। এই সরকার ২০১৮ সালের মতো আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করে জেতার চেষ্টা করছে। তবে এবার আর তাদের সেই সুযোগ দেয়া হবে না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী ২০১৮ সালের মতো কোনো রাতের ভোটের নির্বাচন বাংলার মাটিতে আর হতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে দেশী ও বিদেশীরা একমত যে এই সরকারের হাতে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়।

আগামী ১০ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১২ নভেম্বর শনিবার বিকেল ৪টায় মহানগরীর চাষাঢ়াস্থ ড্রিংক এন্ড ডাইন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টারে এই সভার আয়োজন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, আমরা একটি কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এই সরকারের পতন আসন্ন। শুধু সময়ের অপেক্ষা। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। সরকারের উপর মানুষের কোনো আস্থা নেই। এমনকি বিদেশীদের আস্থাও হারিয়েছে এই সরকার। আমেরিকা বলছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ নির্বাচনে না থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। সরকারবিরোধী আন্দোলনে সাড়া পড়ে গেছে, ১০ ডিসেম্বর তা চূড়ান্ত রূপ পাবে। আপনারা সবাই যাবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই অবৈধ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাবো এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এদেশের মানুষের হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবো ইনশাআল্লাহ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় প্রস্তুতি সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) বেনজীর আহমেদ টিটু, বিশেষ অতিথি বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।

সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, একটা সময় বিরোধী দল হরতাল ডাকতো, ধর্মঘটের ডাক দিতো। এখন সরকার জনগণের বিরুদ্ধে হরতাল দিচ্ছে, পরিবহনের ধর্মঘট দিচ্ছে। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ গুলোতে বাঁধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সকল গণপরিবহন বন্ধ রাখছে‌ তারপরেও শত বাঁধা উপেক্ষা করে সীমাহীন ত্যাগ স্বীকার করে নেতা কর্মীরা সমাবেশগুলোতে যোগ দিচ্ছে। আমরাও সে ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছি। যত বাঁধাই আসুক ঢাকার মহাসমাবেশে আমরা অংশ নেবো এবং সকল নেতাকর্মীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করব।

তিনি বলেন, আজকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ম্যাসেজ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ হচ্ছে ঢাকার সবচেয়ে কাছের জেলা। তাই এখান থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী আমরা যাতে অংশগ্রহণ করতে পারি সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আজকে যারা এখানে আমরা উপস্থিত হয়েছি তাদের সকলের। সে লক্ষ্যে আমরা প্রতিটি থানায় গিয়ে, প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে, প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে সমন্বয় করে সকলকে উদ্বুদ্ধ করবো।

তিনি আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশে আমরা কিভাবে যাবো, কবে যাবো সেটা সকল অঙ্গ সংগঠনের সাথে কথা বলে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এবং আপনাদের জানিয়ে দেয়া হবে। আর ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশে সফল করতে আমরা সবাই নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস শিল্প কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলবো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ছাত্র যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করবো। যেকোনো উপায়েই হোক নারায়ণগঞ্জ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক উপস্থিতি নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।

প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে ঢাকার মহাসমাবেশে যেতে চাই। আমাদের গণতান্ত্রিক যে অধিকার সে অধিকার চর্চার মাধ্যমে নির্বিঘ্নে ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দিতে চাই। আর সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। আমি আশা করবো প্রশাসন কোন দলের পক্ষে নেবেনা আর আমাদের ঢাকা যেতে কোন প্রকার বাঁধার সৃষ্টি করবে না।

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ূন কবির, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, এম এইচ মামুন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, শওকত হাসেশ শকু, অ্যাডভোকেট এইচ এম আনোয়ার হোসেন, বরকত উল্লাহ, মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, শাহিন আহমেদ, রাশিদা জামাল, মাহমুদুর রহমান, মাসুদ রানা, ফারুক হোসেন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফি উদ্দিন রিয়াদ,সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মাগফুর ইসলাম পাপন, যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম রিপন, সাইফুল ইসলাম আপন, পারভেজ খান, আরমান হোসেন, মানিক বেপারী, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, মহানগর তাঁতীদলের সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি দিলারা মাসুদ ময়না, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মামুনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।