রাজপথের কর্মীদের হাতে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

যারা বিগত ১৪/১৫ বছর বিএনপির রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা রেখেছেন, যারা রাজপথে পুলিশের বন্দুকের সামনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে শ্লোগান দিয়েছেন, যারা হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যারা রাজপথে সামনে থেকে কর্মীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এমনসব নেতাকর্মীদের দিয়ে গঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। তবে বাদ পড়েছেন তারাই, যারা রাজপথে নয় শুধুমাত্র ফেসবুকে কথার বুলি ছাড়েন, যারা ঘরে বসে রাজনীতি করেন এবং বহিরাতগত বিতর্কিত এক সময়কার আলোচিত সন্ত্রাসী ব্যক্তিকে যারা সোনারগাঁয়ে এনে সোনারগাঁয়ের মাটিকে কলঙ্কিত করতে চান।

নেতাকর্মীরা জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে কোনো বলয় হিসেবে করে পদ দেয়া হয়নি। যারা মান্নান ও মোশারফের সঙ্গে রাজনীতি করেন না, এমন ব্যক্তিরাও কমিটিতে পদ পেয়েছেন রাজপথে ভুমিকা রাখায়। কমিটির আকার ছোট হওয়ায় আরো রাজপথের দু’চারজনকে স্থান করে দিতে পারেননি নেতারা। তবে নেতারা জানিয়েছেন, রাজপথের নেতাকর্মীদের বিএনপি কখনও ভুলে যাবে না। এখন সামনে আন্দোলন। সেই আন্দোলন সফল করে নতুন সূর্য উদয়ে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের মুক্তি না হলে আমরা কেউ মুক্তি পাবো না। সামনে সকলকে মুল্যায়নের সুযোগ আসবে।

জানাগেছে, চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি আজহারুল ইসলাম মান্নানকে আহ্বায়ক ও মোশারফ হোসেনকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় জেলা বিএনপি। এরপর ৩০ মার্চ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে মান্নান সভাপতি ও মোশারফ হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন। ৮ অক্টোবর জেলা বিএনপি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান সোনারগাঁও ‍উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন করেছে জেলা বিএনপি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো প্রকাশ করেনি বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতে কমিটির ফটোকপি ফেসবুকে অনেকেই প্রচার করছেন।

তবে প্রচারিত এই কমিটি সম্পর্কে ফেসবুকে ২৯ অক্টোবর শনিবার সকালে হাজী মোশারফ হোসেন লিখেছেন, ফেসবুকের বিভিন্ন আইডিতে দেখতে পেলাম, মোশারফ ভাইয়ের সহযোগিতায় একটা বিএনপি উপজেলা কমিটি, বিভিন্ন আইডিতে প্রকাশ পেয়েছে। এটা সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সঠিক কমিটির নয়। আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। আগামী ১ নভেম্বর মঙ্গলবার তিনটায় সোনারগাঁও উপজেলার সম্মানিত সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান সাহেবের বাড়িতে, যারা কমিটিতে আছেন আপনারা চিঠি পাবেন।ওখানে সকলের সম্মুখে কমিটি ঘোষণা করা হবে।

তবে ফেসবুকে প্রচারিত কমিটিতে দেখা গেছে, কমিটিতে সভাপতি পদে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে সভাপতি ও মোশারফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখে সহ-সভাপতি পদে ২০ জন, ৯জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১২জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ৩জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন করা হয়। কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, সিনিয়র ‍যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে হাজী সেলিম হক রুমী ও প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কামরুজ্জামান মাসুমকে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তারকে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে হামলা মামলা ও কারাভোগের শিকার সালমা আক্তার কাজলকে মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়নকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পুলিশের লাঠিপেটা থেকে মান্নানকে রক্ষা করতে গিয়ে লাঠিপেটার শিকার সেলিম ভুঁইয়াকে সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নোবেল মীরকে সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য হাজী সেলিম সরকারকে সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে।

জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। ফজল হোসেনকে দপ্তর সম্পাদক, সহ-দপ্তর সম্পাদক পদে কাজী সাজেদুল ইসলাম সাজুকে রাখা হয়েছে। দল পাগল সেলিম হোসেন দিপুকে রাখা হয়েছে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে। উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ ভুঁইয়াকে যুব বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে।

যুবদল নেতা মাওলানা ওমর ফারুককে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে, উপজেলা জাসাসের সভাপতি আমির হোসেনকে সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে, ছাত্রদল নেতা আব্দুল করিম রহমানকে স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক পদে, যুবদল নেতা পারভেজ সাজ্জাদ চপলকে তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজীবকে সদস্য পদে রাখা হয়েছে।