মান্নানবিরোধীরা দিশেহারা, কখনো রেজাউল কখনো গিয়াসে ভর!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির রাজপথের নির্যাতিত নিপীড়িত ও হামলা মামলার শিকার নেতাকর্মীদের একমাত্র আস্থা ও ভরসার স্থল আজহারুল ইসলাম মান্নান। যে মান্নান ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রেখে নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন। এইসব আন্দোলনে যেসব নেতাকর্মী হামলা মামলা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন একমাত্র মান্নান। কিন্তু যারা বিএনপি থেকে সুবিধা নিয়েছেন তাদেরকে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। এমনকি মান্নানের বিরোধীতাকারী নেতাকর্মীরাও যদি বিপদে পড়েছেন সেইসব নেতাকর্মীদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি।

অথচ ২০০৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর কোনো জাতীয় নির্বাচন আসার বছরখানেক আগে থেকেই মান্নানকে সোনারগাঁ থেকে হঠাতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে যায়। যা ২০১৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত, আবার হয়েছে ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত, এবারও আগামী ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সোনারগাঁ থেকে মান্নান হটাতে ২০২২ সাল থেকেই মান্নান ঠেকানোর মিশন নিয়ে নেমেছেন মান্নানবিরোধী চক্রটি।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে থেকেও খন্দকার আবু জাফর সোনারগাঁয়ের রাজনীতি থেকে মান্নানকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জাফর রাজপথে না থাকলেও মান্নান ঠিকই রাজপথে নেতাকর্মীদের পাশে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সে কারণে মান্নানকে দমাতে গিয়ে উল্টো বিএনপি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন খন্দকার আবু জাফর। এই জাফর ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই মান্নানবিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ গিয়াস উদ্দিনকে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে সোনারগাঁয়ে এনে শোডাউন করেছিলেন।

নেতাকর্মীরা আরো বলেন, একইভাবে মান্নানবিরোধী আরেকটি পক্ষ সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিমকে নিয়ে নির্বাচন নাগাদ সময় মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু বারবারই মান্নানের কাছে ধরাশয়ী হয়েছেন তারা। এভাবে মান্নানকে ধমাতে গিয়ে মান্নানবিরোধীরা সোনারগাঁয়ে উচ্ছিষ্ট নেতাকর্মী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন। তারা সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে নিয়ে মান্নানকে ঠেকানোর চেষ্টা করে আসছেন, এবার অসুস্থ বৃদ্ধ অধ্যাপক রেজাউল করিমকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন মান্নানবিরোধী উচ্ছিষ্ট নেতাকর্মীরা। অসুস্থ বৃদ্ধ রেজাউল করিমকে মাঠে নামানোর চেষ্টা করলেও আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেই স্বপ্ন তাদের পূরণ হচ্ছে না।কারণ গত নির্বাচনের মত ২০২৩ সালেও যদি বিএনপি নির্বাচনে যায় তাহলে সোনারগাঁ আসনের নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনা মান্নানেরই।

যখন মূলত গিয়াস উদ্দিন ও রেজাউলকে নিয়ে যারা সোনারগাঁয়ে টানাটানি করছেন, তারা রাজপথে সক্রিয় রাজনীতিতে বিশ্বাসী না, তারা শুধু কমিটি ও কমিটির পদের রাজনীতি এবং নির্বাচন আসলেই তাদের রাজনীতির মাঠে সরব উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়া আন্দোলন সংগ্রামে কিংবা জেল জুলুমে তাদেরকে দেখা যায় না। রাজপথের কঠোর আন্দোলনগুলো শুধু আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা করে আসছেন। মান্নান কারাভোগ করার পরেও রাজপথ থেকে কিংবা নেতাকর্মীদের ফেলে পালিয়ে যাননি। যারা মান্নানের নেতৃত্বের রাজনীতি করেন তারা রাজপথে রাজনীতি করেন। এমন পরিস্থিতি সোনারগাঁয়ে মান্নানকে ঠেকাতে মান্নানবিরোধীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, কখনো তারা রেজাউল করিমের উপর ভর করছেন, কখনো আবার গিয়াস উদ্দিনের উপর ভর করছেন। কিন্তু সোনারগাঁয়ে মান্নানের অবস্থান আগের চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী।

এদিকে ঘটনা সুত্রে জানাগেলো, যেখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির মাধ্যমে নির্ধারিত কেন্দ্রীয় বিএনপির অনুমোদিত কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি। সেই কেন্দ্রীয় বিএনপির অনুমোদিত কর্মসূচির বিরুদ্ধে গিয়ে পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপি’র দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রকারী ও বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে মাইনাস করে ষড়যন্ত্রে অন্যতম ভূমিকা রাখা সেই অধ্যাপক রেজাউল করিম।

১/১১ সময় বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মাইনাস ফর্মুলার সংস্কারবাদীদের অন্যতম নেতা ছিলেন এই অধ্যাপক রেজাউল করিম, যিনি গত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতেই মাঠেই থাকেন না। শুধু মাত্র নির্বাচন আসলেই তিনি গর্ত থেকে উঁকি ঝুঁকি মারেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

২০২৩ সালে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনার সঙ্গে উকি দিয়েছেন এবার অধ্যাপক রেজাউল করিমও। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি রাজনৈতিক মাঠে নেমেই উপজেলা বিএনপি’র পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে বিদ্রোহ সৃষ্টি করলেন। যদিও এর মুল কারন মান্নানবিরোধীরা একজোট হয়ে মান্নানকে ঠেকানোর মিশন নিয়েই অসুস্থ বৃদ্ধ রেজাউল করিমকে মাঠে নামিয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করার চেষ্টা করছেন কতিপয় নেতা, যারা মুলধারার বাহিরে গিয়ে এর আগে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে সোনারগাঁয়ে ঠুকানোর চেষ্টা করেছিলেন।

জানাগেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোনারগাঁ বিএনপির ব্যানারে পৃথকভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে কতিপয় নেতাকর্মী। জ্বালানী তেল, পরিবহন ভাড়া, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ও ভোলায় ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

সোমবার দুপুরে উপজেলার কাঁচপুর শিল্পাঞ্চলের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। সঙ্গে ছিলেন অপর নেতা কাঁচপুরের শিল্পপতি কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান। পরে সেখানে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল কাঁচপুর শিল্পঞ্চলের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে।

অপরদিকে উপজেলার মেঘনা শিল্পাঞ্চলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু।