চেয়ারম্যানশীপ নাই, এখন সাচ্চা জাতীয়তাবাদী: এই মুকুলই কিন্তু সেই মুকুল!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপি’র পদে থেকেও জাতীয় পার্টি কিংবা সরকারি দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে কিংবা আওয়ামী লীগের হয়ে রাজনীতি করার নজির একমাত্র নারায়ণগঞ্জে স্থাপিত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সিংহভাগ শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সরকারি দলের গোপন আঁতাত রয়েছে, তা সরকারি দলের নেতারাও বারবার প্রমাণ করেছেন। ২০১২ সালে নারায়ণগঞ্জ নগরীর চাষাড়া শহীদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জের বিএনপিকে গোনায় ধরিনা। কারণ বিএনপির কিছু পাতি নেতা আছে সারাদিন চিল্লাচিল্লি করে আমাকে গালিগালাজ করে। কিন্তু রাতের বেলা আমাকে ফোন করে বলে ভাই একটু দেইখেন, ভাই একটু দেইখো।

এছাড়াও ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পরিদর্শনে এসে এমপি শামীম ওসমান তৎকালীন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালের সঙ্গে হাত মিলাতে এসে বলেছিলেন, তুমি তো সারাদিন আমাকে গালিগালাজ করো, আবার রাতের বেলা ভাও দাও।

এছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রকাশ্যে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচনে কাজ করেছেন বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। যারা বিএনপির পদেও ছিলেন। বিএনপি নেতা সুলতান আহমেদের বাধার কারনে বন্দর সিরাজদৌলা মাঠে বিএনপির মহাসচিবের সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি।  সান নারায়ণগঞ্জকে অনেকে জানান মমহাজোটের লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে সরাসরি কাজ করেছেন বিএনপি নেতারা। তার মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল।

তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বন্দর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই থেকে তিনি সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে মঞ্চে উঠে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন। প্রকাশ্যে বিএনপি’র বিরোধিতা করেছেন। এমনকি জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বন্দরে আগমনে সেই সমাবেশেও আতাউর রহমান মুকুল বক্তব্য রেখে বলেছিলেন জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম ওসমানের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবো।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপ-নির্বাচনর এমপি একেএম সেলিম ওসমান নির্বাচিত হওয়ার পর পরের বছর সেলিম ওসমানকে খানপুর এলাকার সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়। সেই সংবর্ধনায় মিছিল নিয়ে আতাউর রহমান মুকুল যোগদান করেছিলেন।  সান নারায়ণগঞ্জকে কর্মীরা জানান সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসম্বলিত ব্যানার নিয়ে সেই মিছিলে যোগদান করেছিলেন আতাউর রহমান মুকুল সহ তৎকালীন মহানগর বিএনপি দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকার।

২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রকাশ্যে মুকুল ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম আকরাম অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের মারধর করে আতাউর রহমান মুকুল বের করে দিয়েছেন। ওই নির্বাচনে আতাউর রহমান মুকুল প্রকাশ্যে জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করেছেন।

ধামগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর মাসুম আহমেদের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দিয়েছিলেন আতাউর রহমান মুকুল। সেই মুকুল এখন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শীর্ষ পদ প্রত্যাশী। দীর্ঘদিন সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাজনীতি করে এখন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে বিকিয়ে দেওয়ার জন্য মহানগর বিএনপির শীর্ষ পদের আশায় ৩০ জুলাই শনিবার মহানগর বিক্ষোভ সমাবেশে মিছিল নিয়ে যোগদান করেন তিনি। যে কারনে নেতাকর্মীরা বলেন, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যানশীপ হারিয়ে এত্তদিনে মুকুল সাচ্চা জাতীয়তাবাদী সাজার চেষ্টা করছেন। দলের শীর্ষ পদ পেলে জাতীয় পার্টির কাছে বিএনপিতে বিক্রি করে দিবেন মুকুল।