‘নৌকা ডুবিয়েছেন আওয়ামীলীগের ৪ নেতা’!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ১৫ই জুন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনিকে এক হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আরিফ মাসুদ বাবু। নির্বাচনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা নৌকার পক্ষে মাঠে নামেননি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল-তারা নৌকার বিরোধিতা করে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

২৪ জুন শুক্রবার নৌকা প্রতীকের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ সোহাগ রনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হয়েছি, সেটা আমি মেনে নিয়েছি। কারণ মোগরাপাড়া ইউনিয়নের মানুষ আমাকে যথেষ্ট পরিমান ভোট দিয়েছেন। আমি মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীক, সেই নৌকার উপর পা দিয়ে যারা দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছেন তারাই নৌকা ডুবিয়েছেন।

হাজী সোহাগ রনি লাইভে এসে নৌকার পরাজয়ের কারন হিসেবে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুকে দায়ী করেন। তারা প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধীগতা করে আনারসের পক্ষে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন সোহাগ রনি।

এমনকি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে যাতে কেউ কাজ না করে সে বিষয়ে তারা হুমকি-ধমকি ভয়ভীতি দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। সোহাগ রনি বলেন, তারা আসলে স্বার্থের রাজনীতি করে। তারা এখানে এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছে যেনো জননেত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও শক্তিশালী, যে কারণে তারা শেখ হাসিনার নৌকার বিরোধীতা করেছেন। এখানে নৌকার পরাজয়ের মূল কারিগর হিসেবে কাজ করেছেন তারা। নির্বাচনে যেসব আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন সেসব নেতাকর্মীদের ওপর হামলা- নির্যাতন চলছে। বাড়ি থেকে ধরে ধরে মারধর করা হচ্ছে। যেসব কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, তাদের মারধর করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ করে সোহাগ রনি বলেন, এখন আমার প্রশ্ন হলো, যারা আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষে কাজ করেছে এটা কি তাদের অপরাধ?

এখানে উল্লেখ্য যে, গত ১৫জুন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী হোন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী সোহাগ রনি। নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু। তিনি নির্বাচনে ১ হাজার ভোটের ব্যবধানে নৌকাকর পরাজিত করে জয়লাভ করেন।

এ নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে দেখা যায়নি কায়সার হাসনাত, মাহফুজ রহমান কালাম, মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমকে। যদিও নৌকার পক্ষে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে দেখা গেলেও তার মুভমেন্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেক আগেই। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভায় উপস্থিত ছিলে কায়সার হাসনাত। তবে নির্বাচনের আগে থেকেই অভিযোগ ছিল উপরোক্ত চার নেতা আনারসের পক্ষে কাজ করছেন।