এক ইউনিয়নেই আ’লীগের প্রভাবশালী এত্ত নেতা, অথচ সেখানেই পুড়লো নৌকা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায়। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১৫জুন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি ও জামাত অংশগ্রহণ করেনি। ফলে নির্বাচনে তাদের কোনো সমর্থিত প্রার্থীও নেই। একইভাবে বিরোধী দল জাতীয়পার্টিরও এখানে কোনো প্রার্থী নেই। তারাও নির্বাচনে নেই। এখানে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মুল প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী হয়ে ওঠেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু।

নির্বাচনের শুরু থেকেই আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী একাংশের নেতাদের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশে দেখা যায়নি। নির্বাচনের যখন এমন পরিস্থিতি তখন আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে দূবৃত্তরা। সেখানে নৌকা প্রতীক আগুনে পুড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনী ক্যাম্পটিও ভাংচুর করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- এই নির্বাচনে বিএনপি-জামাত ও জাতীয়পার্টি অংশগ্রহণ করেনি। তাহলে নৌকা প্রতীকে আগুন দিলো কারা? কিংবা নৌকার ক্যাম্প ভাংচুর করলো কারা?

স্থানীয়রা জানান, সোনারগাঁও উপজেলায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রন হয়ে আসছে এই মোগরাপাড়া ইউনিয়ন থেকেই। যুগ যুগ ধরে মোগরাপাড়া থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব চলে আসছে। বর্তমানেও উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতাদের বসবাস মোগরাপাড়া ইউনিয়নেই। কেউ কেউ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃ্ত্ব ছাপিয়ে জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়েও রাজনীতি করছেন। উপজেলার মধ্যে মোগরাপাড়া ইউনিয়নটি আওয়ামীলীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিতি। অথচ সেই ইউনিয়নে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও নৌকা প্রতীকে আগুন দেয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেনা স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

স্থানীয়রা এ বিষয়ে আরো জানান, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এইচএম মাসুদ দুলাল, আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেন যিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি ছিলেন, আওয়ামীলীগ নেতা এরফান হোসেন দ্বীপ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম ও উপজেলা আওয়ামীলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান রবিন সহ আরো অনেক নেতা। এদের মধ্যে এইচএম মাসুদ দুলাল পুরোদমে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। রফিকুল ইসলাম নান্নুকেও নৌকার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে দেখা গেলেও বাকিদের এখনো নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি প্রচার প্রচারণায়।

জানাগেলো, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার মনোনীত প্রার্থী হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনির নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী ক্যাম্প ও নৌকা পুড়িয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা। ৬ জুন সোমবার দিবাগত রাতে কে বা কারা মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের কালিগঞ্জ নৌকার ক্যাম্পে আগুন দেয়। এতে ক্যাম্পে থাকা নৌকা, চেয়ার টেবিল পড়ে ছাই হয়ে যায়।

নৌকার মনোনীত প্রার্থী সোহাগ রনি গণমাধ্যমে বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি ও আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নৌকা প্রতিক চেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সকল জরিপ দেখে আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়েছেন। এতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। আমার নৌকা প্রতিকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাম্বিত হয়ে রাতের আধারে নৌকার ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যারা নৌকা প্রতিকে আগুন দিয়েছে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু তারা জানে না নৌকার স্রোতে তারা ভেসে যাবে। নৌকা বা নৌকার ক্যাম্প পুড়িয়ে নৌকার জনপ্রিয়তা রুখতে পারবেনা। কারন মোগরাপাড়ার জনগণ উন্নয়নের পক্ষে রয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে আগামী ১৫ তারিখে নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিবে।