নৌকা ডুবাতে ষড়যন্ত্র: পক্ষে নাই আওয়ামীলীগের একাংশ!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের একাংশের সিনিয়র নেতারা নৌকার পক্ষে এখানো নেই বলে অভিযোগ ওঠেছে। ৫ জুন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাতেও এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তোলপাড় ও কঠোর সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এখানে বিএনপি জামাত নৌকাকে ডুৃবানোর কোনো মিশনে না থাকলেও খোদ আওয়ামীলীগের একটি পক্ষই এখণ নৌকা ডুবানোর ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

জানাগেছে, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি। এই নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও মোগরাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এককভাবে বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবুর নাম কেন্দ্রে প্রস্তাব করে। যেখানে হেভিওয়েট চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী সোহাগ রনির নাম প্রস্তাব করা হয়নি। তবে শেষতক জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বিচক্ষণতায় নৌকা প্রতীকে মনোনিত হোন হাজী সোহাগ রনি।

মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিযে বিদ্রোহী প্রার্থী হোন আরিফ মাসুদ বাবু। এখানে নৌকা ডুবাতে ষড়যন্ত্র ও বিরোধীতা করে আসছেন আওয়ামীলীগের একাংশের নেতারা- এমন অভিযোগ শুরু থেকেই।

আরিফ মাসুদ বাবু চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার পর সোহাগ রনির নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া সোনারগাঁয়ের আওয়ামী পরিবার হিসেবে পরিচিত হাসনাত পরিবারকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, আপনারা নিজেদেরকে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন পরিবার দাবি করেন, আওয়ামীলীগের পরিবার দাবি করেন, অথচ আপনারা নৌকা না পেলেই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে যান। এটা কেমন রাজনীতি আপনাদের? ওইদিন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু বলেছিলেন, দুষ্কৃতকারীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা ডুবাতে চায়।

এদিকে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মোগরাপাড়ার সন্তান কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এইচএম মাসুদ দুলাল পুরোদস্তর কাজ করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর চৌধরী বিরু, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রূপন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহামুদা আক্তার ফেন্সি, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছগির আহমেদ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রাশেদ সহ উপজেলার সিংহভাগ নেতারা রয়েছেন নৌকার পক্ষে। তারা পুরোদমে নৌকার জন্য কাজ করছেন।

অন্যদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত এবং জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মাহফুজুর রহমান কালামকে এখনো নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট প্রার্থনা কিংবা মাঠে নামতে দেখা যায়নি। একইভাবে নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে এখনো দেখা যায়নি আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেন যিনি গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি ছিলেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, আওয়ামীলীগ নেতা এরফান হোসেন দ্বীপ ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান রবিনকে। এদিকে হাসনাত পরিবারের আরেক সদস্য তান্না হোসাইনকে দেখা গেলো বিদ্রোহী প্রার্থী আরিফ মাসুদ বাবুর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট প্রার্থনায়।

স্থানীয়রা্ আরো জানান, ৪ জুন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তির প্রতিবাদে সোনারগাঁও উপজেলা সহ জেলা জুড়ে কঠোর প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। ওইদিন মোগরাপাড়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে উপজেলা সদরে কর্মসূচি পালনে আসা যাওয়ার পথেও নৌকার পক্ষে সিনিয়র নেতারা ভোট প্রার্থনা করেননি।