জামানত হারালো তারা, মান্নানের চেয়ার ইস্যূতে রূপনের পরিনতি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থী ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়াই করেছেন। যেখানে সাবেক দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ ৪ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। জামানত বাঁচানোর ভোটও পায়নি এই ৪ প্রার্থী।

দলীয় রাজনীতিতে ক্লিন ইমেজধারী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রূপন বিএনপি নেতা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নানের চেয়ার টানাটানিতেই ব্যস্ত ছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার মানুষের সামনে গিয়ে নিজের চেহারাও দেখাননি তিনি। যে কারনে তারও জামানত টিকলো না। মান্নানকে একাধিকবার বরখাস্ত করার পিছনে রূপনেরও হাত ছিল বলে বিএনপি নেতাদের দাবি। যে কারনে এটিও তার জন্য বড় কাল হয়ে দাড়িয়ে গেছে এবারের নির্বাচনে। নির্বাচনের আগেই তার জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় সেটা অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’ একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছিল।

গত ৫ বছরে একাধিকবার আজহারুল ইসলাম মান্নান বরখাস্ত হয়েছিলেন। প্রথমবার বরখাস্ত হলে রূপন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। তা নিয়ে বিরোধীতা করে এবারের নির্বাচনে আরেক পরাজিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী যিনি বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাছিমা আক্তার রিট পিটিশন দায়ের করেন। ওই মামলায় নাছিমার পিটিশন খারিজ করে দিলে রূপন দায়িত্বে বহাল থাকেন। পরবর্তীতে মান্নান দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার তিন মাসের মাথায় আবারো মান্নান বরখাস্ত হলে এবার দায়িত্ব পান নাছিমা। এর বিরোধীতা করে রিট করেন রূপন। এবার নাছিমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এবাবেই দুই ভাইস চেয়ারম্যান মান্নানের চেয়ার টানাটানিতেই ব্যস্ত ছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাড়ানো কিংবা ভোটারদের কোন খোজ খবরও রাখেননি। ফলে জনগণের মন থেকে ছিটকে পড়েন রূপন। রাজনীতিতে তিনি বিতর্কিত কর্মকান্ডে না থাকলেও তিনি জনগণের কাছ থেকে দুরে সরে থাকায় তাকে এমন লজ্জাজনক পরাজয় বহন করতে হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

জানাগেছে, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী বাবু ওমর ও তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্ধি প্রার্থী আবু নাইম ইকবাল ছাড়া বাকি সবার জামানতই বাজেয়াপ্ত হয়। উপজেলার ১১৮টি কেন্দ্রে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪শত ৫৬ ভোট। এই ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট এককভাবে না পাওয়ায় জামানত হারান সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম রূপন ও এসএম জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক শাহজালাল ও মনির হোসেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের সংখ্যার অনুপাতে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জামানত নির্ধারণ করা হয়।

এ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ধন্ধিতা করেন। নির্বাচনে মোশারফ হোসেন ৭৩ হাজার ৩৮ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তার নিকটতম প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম পান ৪৫ হাজার ৫৪০ ভোট।

অপরদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন সাবেক ২ ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৬জন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্দিতা করেন। এরমধ্যে টিউবওয়েল প্রতীকে বাবু ওমর ৫৮ হাজার ৯শত ৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্ধি তালা প্রতীকে আবু নাইম ইকবাল পান ৩৫ হাজার ৫শত ৩৩ ভোট।

এছাড়া বাকি ৪ প্রার্থী জামানত হারান। এরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম রূপন মাইক প্রতীকে পান ৬ হাজার ৭৯৩ ভোট, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এসএম জাহাঙ্গীর চশমা প্রতীকে পান ৫ হাজার ২৬০ ভোট, সাংবাদিক শাহজালাল বই প্রতীকে পান ৩ হাজার ৩শত ৬১ ভোট এবং উড়োজাহাজ প্রতীকে মনির হোসেন পান ৩ হাজার ৩৬৩ ভোট।